কোটা সংস্কার আন্দোলনকারীদের ওপর আবারও হামলা চালিয়েছে ছাত্রলীগ। সোমবার (২ জুলাই) সকাল ১০টা ৪৫ মিনিটের দিকে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে আন্দোলনকারীরা পূর্বঘোষিত কর্মসূচি অনুযায়ী পতাকা মিছিল ও বিক্ষোভ করতে জড়ো হওয়ার চেষ্টা করলে তাদের ওপর হামলা চালায় ছাত্রলীগ। হামলাকারীরা সবাই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ আশপাশের বেশ কিছু কলেজের ছাত্রলীগের নেতাকর্মী বলে জানিয়েছেন আন্দোলনকারীরা।
আন্দোলনকারীরা জানান, পতাকা মিছিল ও বিক্ষোভ শুরু করার আগে ১৫-২০ জন ছাত্রলীগ নেতা মোটরসাইকেলে করে শহীদ মিনারে আসেন। তারা এসে বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদের যুগ্ম আহ্বায়ক ফারুক হোসেনকে মারধর করে এবং মোটরসাইকেলে করে তুলে নিয়ে যায়।
আন্দোলনকারী লুৎফুন্নাহার লিনা এবং লুবনা কাঁদতে কাঁদতে অভিযোগ করে বলেন, ‘প্রকাশ্যে ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা আমাদের ভাইদের গায়ে হাত তুলেছে, মারধর করেছে। তারপরও কেউ তাদেরকে ঠেকাতে আসে নাই। দেশের প্রধানমন্ত্রী একজন নারী, আমরাও নারী। আমাদের গায়ে হাত তোলা প্রধানমন্ত্রীর সম্মানকেও ক্ষুণ্ণ করে।’
তারা আরও বলেন, কোটা সংস্কার আন্দোলনের মতো একটি যৌক্তিক আন্দোলনকে ছাত্রলীগ দিয়ে প্রতিহত করা যাবে না।
মারামারি শেষে ছাত্রলীগ নেতারা টিএসসি থেকে শহীদ মিনার পর্যন্ত মোটরসাইকেল নিয়ে শোডাউন করে। এরপর মেহেদি হাসান সানি সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমরা জানতে পেরেছি কোটা সংস্কার আন্দোলনকারীরা পতাকা মিছিলের সঙ্গে লাঠিসোটা রেখে ক্যাম্পাসে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করবে। বিশ্ববিদ্যালয়ের শান্তিপূর্ণ পরিবেশ নষ্ট করবে। তাই শৃঙ্খলা যেন নষ্ট না হয় সেজন্য সাধারণ শিক্ষার্থী হিসেবে আমরা অবস্থান নিয়েছি। আমরা তাদের কোনও মারধর করি নাই।’ এসময় ছাত্রলীগের বেশ কয়েকজন নেতা সেখানে উপস্থিত ছিলেন।
এর আগে শনিবার (৩০ জুন) কোটা সংস্কার আন্দোলনকারীদের সংবাদ সম্মেলন করার কথা ছিল। এর কিছুক্ষণ আগে তাদের ওপর হামলা চালায় ছাত্রলীগ। হামলায় সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদের যুগ্ম আহ্বায়ক নুরুল হক নূরসহ বেশ কয়েকজন আহত হয়েছেন। সাধারণ ছাত্রদের ওপরও হামলা চালানো হয়েছে।
এদিকে, রবিবার (১ জুন) বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদের যুগ্ম আহ্বায়ক রাশেদ খানকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। মিরপুর-১৪ নম্বর থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়। শাহাবাগ থানায় তথ্য-প্রযুক্তি আইনে দায়ের করা একটি মামলায় তাকে গ্রেফতার করা হয়।
তথ্যসূত্র: বাংলা ট্রিবিউন