অ্যানালাইসিস বিডি ডেস্ক:
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের বাকী আর মাত্র ৮ মাস। সংবিধান অনুযায়ী চলতি বছরের ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যেই নির্বাচনের কার্যক্রম শেষ করতে হবে। এদিকে আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে দেশে আর কোনো দিন কেয়ারটেকার সরকার আসবে না। বর্তমান সংবিধান অনুযায়ী শেখ হাসিনার অধীনেই আগামী সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। এমনকি যুক্তরাষ্ট্রে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভয়েস অব আমেরিকাকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে বলেছেন, আগামী নির্বাচন নিয়ে তারা বিএনপির সাথে আর কোনো আলোচনা করবেন না। সংবিধানের বাইরে তারা যেতে পারবে না।
এদিকে একাধিক সূত্রে জানা গেছে, সরকারের পদত্যাগ ও কেয়ারটেকার সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবিতে চলতি মাসেই চূড়ান্ত কর্মসূচি ঘোষণা করবে বিএনপি। এজন্য সমমনা জোট, ১২ দলীয় জোট ও গণতন্ত্র মঞ্চ নামের সাত জোটের সাথে তারা আলোচনা করেছেন। সমমনা সব দলই নাকি চুড়ান্ত কর্মসূচি ঘোষণা দেয়ার জন্য বিএনপির কাছে দাবি জানিয়েছে।
অপরদিকে নামসর্বস্ব দল নিয়ে বিএনপির রাজনৈতিক জোট ও সরকার বিরোধী আন্দোলন নিয়ে রাজনৈতিক বিশ্লেষক ও সচেতন মানুষের মধ্যে দেখা দিয়েছে সন্দেহ সংশয়। দীর্ঘদিনের রাজনৈতিক মিত্র জামায়াতে ইসলামিকে বাদ দিয়ে এসব নাম সর্বস্ব এতিম ও ছিন্নমূল দল নিয়ে সরকার বিরোধী আন্দোলনে বিএনপি কতটুকু সফল হবে বা সামনে কতটুকু এগুতে পারবে সেই প্রশ্নও উঠেছে।
দেখা গেছে, ২০০০ সালে তৎকালীন আওয়ামী লীগ সরকারের বিরুদ্ধে চারদলীয় জোট যে আন্দোলন করেছিল সেখানে অন্যতম শক্তি ছিল জামায়াতে ইসলামি। এরপর নির্বাচনে বিজয়ী হয়ে ২০০৬ সাল পর্যন্ত একসাথে সরকার পরিচালনা ও আওয়ামী লীগের দেশবিরোধী চক্রান্ত-ষড়যন্ত্র মোকাবেলা করেছে।
এরপর ২০০৯ সালে ফখরুদ্দিন-মইনুদ্দিনের সহযোগিতায় আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর থেকে ২০১৫ সালের মাঝামাঝি পর্যন্ত আওয়ামী সরকারের গুম-হত্যা, নির্যাতন, দুর্নীতিসহ শেখ হাসিনার দু:শাসনের বিরুদ্ধে বিএনপি জামায়াত একসাথে আন্দোলন করেছে। বিশেষ করে ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির একতরফা নির্বাচনকে কেন্দ্র করে সারাদেশে যে গণআন্দোলন গড়ে উঠেছিল, সেখানে অগ্রণী ভুমিকা পালন করেছিল জামায়াত শিবির। তারপর ২০১৫ সালের ৫ জানুয়ারি থেকে মার্চ পর্যন্ত তিন মাসের টানা অবরোধেও সামনে থেকে গুরুত্বপূর্ন ভুমিকা পালন করেছে জামায়াত শিবির।
আর রাজনৈতিক অঙ্গনে বিরোধী জোটের সরকার বিরোধী আন্দোলনের প্রধান শক্তি হিসেবে মনে করা হয় জামায়াতকে। আর আওয়ামী লীগতো প্রকাশ্যেই বলে যে, জামায়াত ছাড়া বিএনপি মাঠেই নামতে পারবে না।
কিন্তু ২০১৭ সালে কথিত দুর্নীতির মামলায় খালেদা জিয়াকে জেলে ঢোকানোর পরই বিএনপি নেতারা জামায়াতকে এড়িয়ে চলা শুরু করে। যেটা প্রকাশ্যে রূপ নেয় ২০১৮ সালের সংসদ নির্বাচনে। তবে মজার ব্যাপার হল-জামায়াতকে বাইপাস করে সফলতা অর্জন করতে পারেনি বিএনপি।
গত দুই বছর ধরে জামায়াত বাইপাস করে নামসর্বস্ব ছিন্নমূল এতিম কিছু রাজনৈতিক দলকে নিয়ে বিএনপি সরকার বিরোধী আন্দোলন করতেছে যাদের ব্যানার ধরারই কর্মী নাই। সম্প্রতি কিছু যৌথ কর্মসূচিতে এমন চিত্র দেখা গেছে।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, বিএনপি আবারো মারাত্মক ভুল পথে হাটছে। বিএনপি কখনো একা একা আন্দোলন করে দাবি আদায় করতে পারবে না। আর বিএনপি যাদের নিয়ে জোট করেছে সবগুলোই নাম ও সাইনবোর্ড সর্বস্ব দল। সব দল মিলিয়ে ২০০ লোকের বেশি হবে না। এদেশের দিয়ে প্রেস ক্লাবের সমাবেশ হবে, কিন্তু রাজপথের আন্দোলন সম্ভব হবে না। এসব দল নিয়ে বিএনপি সামনে এগুতে পারবে না। মাঠেই মারা যাবে তাদের সব দাবি।
Discussion about this post