সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিএনপি চেয়ারপারসন কারাবন্দি খালেদা জিয়ার ভাইরাল হওয়া ভিডিওটা প্রযুক্তির ব্যবহারে জালিয়াতি বলে দাবি করেছেন দলটির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রিজভী আহমেদ। সেই সঙ্গে এটাকে সরকারির দলের অপপ্রচার সেলের নোংরা মানসিকতা বলেও অভিযোগ করেছেন তিনি।
নয়া পল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ ব্রিফিংয়ে এ অভিযোগ করেন তিনি। বিএনপির মুখপাত্র বলেন, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে নিয়ে আওয়ামী লীগের মাথাব্যথার যেন শেষ নেই। তাকে নিয়ে তাদের অন্তহীন ষড়যন্ত্র বারবার ব্যর্থ হয়ে যাওয়ায় এখন প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে নানা অপপ্রচারের জন্য সেল খোলা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর একজন উপপ্রেস সচিবের ফেসবুক আইডিতে নানা মিথ্যা ও বানোয়াট গল্প বানিয়ে প্রচার করা হচ্ছে।
তিনি বলেন, আমার ধারণা ছিল প্রধানমন্ত্রীর প্রেস উইংয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষিতরা কাজ করে। কিন্তু তাদের মানসিকতা বস্তির লোকের চেয়েও নিম্নমানের। উন্নত প্রযুক্তি কাজে লাগিয়ে কাট-পেস্ট করে এই নোংরা অপ্রচার করছে। তাদের অন্তরে শিক্ষার কোনো আলো নেই। বাড়ির একটা বখাটে ছেলে যেমন ফেনসিডিল খায়, ছিনতাই করে; আওয়ামী লীগও তেমনি রাজনীতির বখাটে সন্তান।
রিজভী বলেন, আমার ছাত্রজীবনের ফার্স্ট ইয়ার থেকে দেশনেত্রীকে চিনি। তিনি কখনও বাড়তি কথা বলেন না, অরুচিকর কথা বলেন না। তিনি নেতাকর্মীদের মধ্যে বিভিন্ন সময়ে যে বক্তব্য দিয়েছেন তা কাট-পেস্ট করে বুঝানোর চেষ্টা হয়েছে যে জিয়া পরিবারের মধ্যে সমস্যা হয়েছে। অবশ্যই সরকার জাল-জালিয়াতি করে চলছে তাদের এছাড়া কোনো উপায়ও নেই।
রিজভী বলেন, এই ধরনের অপপ্রচার নিম্নরুচির পরিচায়ক। যারা কুরুচিসম্পন্ন এবং যারা অপরাজনীতি ও অসভ্যতার চর্চা করে তারাই কেবল অসত্য ও নোংরা রাজনীতির আশ্রয় নেয়। আওয়ামী লীগ কুৎসা সঞ্চারিত মনের বিকারে ভোগে। তাদের ঐতিহ্যে সভ্যতা ও সুরুচির কখনোই কোনো নিদর্শন ছিল না। সে জন্য তাদের কোনো কথাই জনগণ বিশ্বাস করে না। আমি এই ঘটনায় তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি।
রিজভী বলেন, শনিবার দলের মহাসচিবসহ সিনিয়র নেতারা কারাগারে চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া সঙ্গে দেখা করার পর তার সর্বশেষ শারীরিক পরিস্থিতি তুলে ধরেছেন। তারা বলেছেন, খালেদা জিয়াকে গুরুতর অসুস্থ হলেও এখন পর্যন্ত পছন্দ অনুযায়ী হাসপাতাল ও ব্যক্তিগত চিকিৎসকদের তত্ত্বাবধানে চিকিৎসার ব্যবস্থা নেয়া হয়নি। এর মাধ্যমে তিলে তিলে কষ্ট দিয়ে সরকার প্রতিহিংসা বাস্তবায়নে চূড়ান্ত লক্ষ্যের দিকে এগুচ্ছে কি না তা নিয়ে জনমনে এখন নানা প্রশ্ন ও শঙ্কা তৈরি হয়েছে।
রিজভী বলেন, খালেদা জিয়ার অসুস্থতার ক্রমাগত অবনতির খবরে গোটা জাতি এখন চরম উদ্বিগ্ন। দেশনেত্রীকে নিয়ে সরকারের মানবাধিকার লঙ্ঘনের বীভৎস মূর্তি মানবজাতিকেই শিহরিত করছে। রিজভী বলেন, মিথ্যা ও ষড়যন্ত্রমূলক মামলায় কারাবন্দি খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থা আগের চেয়ে আরও অবনতি হয়েছে। কারাগারে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে তিলে তিলে কষ্ট দিচ্ছে সরকার। আমি আবারও অতি দ্রুত দেশের সবচেয়ে জনপ্রিয় নেত্রী দেশনেত্রী খালেদা জিয়াকে তার পছন্দের হাসপাতালে চিকিৎসা দেয়ার জোর দাবি জানাচ্ছি।
শনিবার দেশব্যাপী জাতীয়তাবাদী যুবদলের বিক্ষোভে কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে ঢাকা মহানগর ও পটুয়াখালীতে গ্রেপ্তারকৃতদের অবিলম্বে মুক্তি দাবি করেছেন তিনি। সংবাদ ব্রিফিংয়ে চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আবদুস সালাম, কেন্দ্রীয় নেতা শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানী, সহদপ্তর সম্পাদক মুনির হোসেন উপস্থিত ছিলেন।
সূত্র: মানবজমিন