অ্যানালাইসিস বিডি ডেস্ক
সাধারন ছাত্ররা, বিশেষ করে একেবারে কিশোর কিশোরীরা বাংলাদেশের রাজধানীসহ সকল সড়ক ও মহাসড়কগুলো টানা ৫ দিন ধরে দাপিয়ে বেড়াচ্ছে, শান্তিপূর্নভাবে নিরাপদ সড়কের দাবীতে আন্দোলন করছে, তা দেশের সকল মহল তো বটেই এমনকি আন্তর্জাতিক সব গনমাধ্যমকেও আলোড়িত করেছে ব্যপকভাবে।
পরিস্থিতি এড়াতে বাংলাদেশের সরকার বৃহস্পতিবার সব স্কুল বন্ধ ঘোষনা করলেও তাতে আন্দোলণরত ছাত্রদেরকে থামানো যায়নি বলে এএফপি জানিয়েছে। ফিলিপাইনের জনপ্রিয় পোর্টাল র্যাপলারও একই ভাষায় আরেকটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে।
র্যাপলারের প্রতিবেদনে আরো বলা হয়, বাংলাদেশের পরিবহন খাতটি মূলত দুর্নীতিতে ডুবে আছে। এ খাতে কোন শৃঙ্খলা নেই। আছে ভয়ংকর ঝুঁকি। আর এরকম একটি অবস্থাতেই যখন নিরীহ দুই ছাত্র ছাত্রীর হত্যার খবরটি সোশাল মিডিয়ার কল্যাণে ভাইরাল হয়ে যায়, তখনই ক্রদ্ধ ও ক্ষুব্ধ ছাত্ররা রাস্তায় নেমে আসে।
বিবিসি বাংলার প্রতিবেদনে বলা হয়, প্রতিবাদরত ছাত্ররা ঢাকার বিভিন্ন সড়ক অবরোধ করে। স্কুল বন্ধ হওয়া স্বত্বেও তারা বাড়ি থেকে রাজপথে নেমে আসে।
অনেকগুলো আন্তর্জাতিক গনমাধ্যম বেশ ফলাও করে বলেছে, ছাত্ররা প্রবল বৃষ্টির মধ্যে দাঁড়িয়ে থেকে প্রতিটি গাড়ির লাইসেন্স ও অন্যান্য বৈধ কাগজপত্র অনুসন্ধান করে। এ সময় আন্দোলণকারীরা “we want justice” বা ‘আমরা ন্যায় বিচার চাই’ বলেও শ্লোগান তুলে। ছাত্রদের এ আন্দোলনে কার্যত গোটা দেশই স্থবির ও অচল হয়ে পড়েছে বলে জানায় মেইল অনলাইন নামের আরেকটি আন্তর্জাতিক গনমাধ্যম।
ভারতের পশ্চিমবঙ্গ থেকে প্রকাশিত আনন্দবাজার পত্রিকা ছাত্র আন্দোলনের বিষয়ে প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলেছে, ছাত্ররা ঢাকার রাজপথে এখন কার্যত রাজত্ব করছে। তারা রাস্তার রং সাইড দিয়ে চলা মন্ত্রীর গাড়িকেও সঠিক পথে চালাতে বাধ্য করেছে। কাগজ না থাকলে তারা পুলিশের গাড়িও চলতে দিচ্ছেনা। ছাত্ররা এমনিতেই বিক্ষুব্ধ ছিল। তার উপর এই সড়ক দুর্ঘটনার খবরে নৌমন্ত্রী হাসি দেয়ায় তারা যেন তেলে বেগুনে জ্বলে উঠেছে।
র্যাপলার একটি গবেষনা প্রতিষ্ঠানের বরাত দিয়ে জানায়, গত বছর বাংলাদেশে প্রায় ৪ হাজার ২শ জন পথিক গাড়ি চাপায় নিহত হয়েছেন। আর ২০১৬ সালের তুলনায় দেশে সড়ক দুর্ঘটনা বেড়েছে ২৫ শতাংশ।
তুরস্কের আনাদুলু এজেন্সী তাদের রিপোর্টে জানায় ছাত্ররা টানা ৪ দিন রাজপথে আন্দোলন করছে। তারা চায় তাদের নিহত সহপাঠীকে যে বাস ড্রাইভার হত্যা করেছে তার যেন দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হয়।
দ্য স্ট্রেইট টাইমস তাদের ‘Bangladesh students blockade Dhaka roads after bus deaths’, শীর্ষক প্রতিবেদনে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালকে উদ্বৃত করেন। যেখানে মন্ত্রী উত্তেজিত ছাত্রছাত্রীদেরকে আন্দোলন বন্ধ করে বাড়ি ফিরে যেতে অনুরোধ করেছেন।
চীনা বার্তা সংস্থা সিনহুয়াও একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে বাংলাদেশের ছাত্র আন্দোলনের উপর যার শিরোনাম, “Bangladesh students’ protest over deaths of pals continues.”