অ্যানালাইসিস বিডি ডেস্ক
একজন নির্দোষ মানুষ খুব সহজেই যিনি খুনি বানাতে পারেন আবার একজন সৎ মানুষকেও খুব সহজে অপরাধী বাানতে পারেন, তেমনি একজন ইয়াবা ব্যবসায়ী, চাদাবাজি, টেন্ডারবাজ, দখলদারকেও সৎ ও পবিত্র মানুষ হিসেবে ঘোষণা দিতে পারেন। এ কাজগুলোতে যিনি খুবই পারদর্শী তিনি হলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
সাবেক যোগাযোগ মন্ত্রী আবুল হোসেন এদেশে একজন দুর্নীতিবাজ হিসেবে সকলের কাছে পরিচিত। পদ্মাসেতু কেলেংকারির সঙ্গে তিনি সরাসরি জড়িত ছিলেন। দেখা গেছে, একটা সময়ে শেখ হাসিনার অনুগত দুদক তাকে সততার সার্টিফিকেট দিলেন। এরপর, ইয়াবার গডফাদার হিসেবে এদেশে পরিচিত কক্সবাজারের এমপি আব্দুর রহমান বদি। মানুষ যাকে ইয়াবা বাবা হিসেবেই ডাকে। তার বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ থাকার পর সরকার তাকে গ্রেফতার না করে সততার সার্টিফিকেট দিল।
বর্তমানে দেশে আলোচিত তিন চাঁদাবাজ ও দুর্নীতিবাজ হলো ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি রেজওয়ানুল হজ চৌধুরী শোভন, সাবেক সেক্রেটারি গোলাম রাব্বানী ও যুবলীগ সেক্রেটারি ইসমাইল হোসেন সম্রাট। ছাত্রলীগ সভাপতি-সেক্রেটারিকে শত কোটি চাঁদাবাজির কারণে পদ থেকেই সরিয়ে দিয়েছেন শেখ হাসিনা। তারা এখন সরকার ঘোষিত দুর্নীতিবাজ। তাদেরকে শুধু পদ থেকেই সরালেন, চাঁদাবাজির কারণে তাদের বিরুদ্ধে কোনো আইনি ব্যবস্থা নিচ্ছেন না শেখ হাসিনা। বরং শোভন-রাব্বানী পবিত্র ঘোষণারও প্রক্রিয়া চলছে বলে আভাস পাওয়া যাচ্ছে।
গত শুক্রবার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের সঙ্গে দেখা করেছেন জাবি ভিসি অধ্যাপক ফারজানা ইসলাম। সাক্ষাতের পর ভিসি ফারজানা গণমাধ্যমকে কিছু বলেননি। তবে, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী গণমাধ্যমকে বলেছেন, জাহাঙ্গীরনগরের ঘটনা পদ্মসেতুর মতো।
পদ্মাসেতুর উদাহরণ দিয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বুঝাতে চাচ্ছেন যে, সাবেক যোগাযোগ মন্ত্রী আবুল হোসেনের বিরুদ্ধে যেমন দুর্নীতির পরিকল্পনার অভিযোগ উঠেছিল, শোভন-রাব্বানীর বিরুদ্ধেও উন্নয়ন প্রকল্প থেকে কমিশন চাওয়ার পরিকল্পনার অভিযোগ উঠেছে। আসলে তারা এমনটা করেনি।
একাধিক সূত্রে জানা গেছে, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর দেয়া বক্তব্যের আলোকেই তদন্ত কমিটি তাদের রিপোর্ট তৈরি করবে। রিপোর্টে শোভন-রাব্বানীকে হালকা ধমক দিয়ে নির্দোষ ঘোষণা করা হবে। এরপর তাদেরকে আবারো ছাত্রলীগে ফিরিয়ে আনা হবে।
এরপর, শনিবার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছেন, যদি ইসমাইল হোসেন সম্রাটের বিরদ্ধে অভিযোগ পাওয়া যায় তাহলে তাকে গ্রেফতার করা হবে।
রাজধানীতে যে কয়জন শীর্ষ চাঁদাবাজ, টেন্ডারবাজ ও দখলদার আছে তাদের মধ্যে শীর্ষ হলেন যুবলীগ সেক্রেটারি ইসমাইল হোসেন সম্রাট। বর্তমানে যে ক্যাসিনো সম্রাট হিসেবে খ্যাতি অর্জন করেছে। বর্তমানে রাজধানীতে যে ক্যাসিনো বিস্ফোরণ ঘটেছে এসব নিয়ন্ত্রণের মূল হোতা হলেন সম্রাট। অথচ স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল আজ বললেন-যদি তার বিরুদ্ধে অভিযোগ পাওয়া যায় তাহলে তাকে গ্রেফতার করা হবে।
সচেতন মানুষ বলছেন, ইয়াবার গডফাদার বদির মতোই ক্যাসিনো সম্রাটকে নির্দোষ ও পবিত্র ঘোষণা দেয়ার প্রক্রিয়া চালাচ্ছেন। এত কিছুর পরও যখন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বললেন-যদি অভিযোগ সত্য, এরমানে আন্ডারওয়ার্ল্ডের এই নিয়ন্ত্রককে তারা গ্রেফতার করবেন না।