অ্যানালাইসিস বিডি ডেস্ক
বিজিবির সাবেক মহাপরিচালক এবং বহুল আলোচিত-সমালোচিত ও চরম বিতর্কিত ব্যক্তি আজিজ আহমেদকেই বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর প্রধান হিসেবে নিয়োগ দিয়েছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ। স্বাধীনতার পর অনেকেই দলীয় বিবেচনায় সেনাপ্রধান হয়েছিলেন। কিন্তু, আজিজ আহমেদের মতো এমন বিতর্কিত ব্যক্তিকে কোনো সরকারই সেনা প্রধান হিসেবে নিয়োগ দেয়নি।
চারটি কারণে আজিজ আহমেদ এদেশের মানুষের কাছে চরমভাবে বিতর্কিত ও সমালোচিত।
প্রথমত: আজিজ আহমদে বিজিবি প্রধান থাকাকালীন বিজিবি সরকারের লাঠিয়াল বাহিনী হিসেবে ব্যবহৃত হয়েছিল। বিরোধীদল বিশেষ করে বিএনপি ও জামায়াত-শিবিরের নিরপরাধ লোকদেরকে বাসা বাড়ি থেকে ধরে এনে পাখির মতো গুলি করে হত্যা করেছিল। বিশেষ করে দক্ষিণের জেলা সাতক্ষীরায় জামায়াত নেতাদের বাড়িঘর বুলডোজার দিয়ে গুঁড়িয়ে দিয়েছিল আজিজের বাহিনী। ওই সময় সন্ত্রাস দমনের নামে গণহত্যায় মেতেছিল আজিজের বাহিনী।
দ্বিতীয়ত: ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির একতরফা ভোটার বিহীন নির্বাচন বাস্তবায়নে মুখ্য ভুমিকা পালন করেছিলেন আজিজ আহমেদ। তিনিই মূলত একতরফা নির্বাচন বাস্তবায়নে সরকারকে সহযোগিতা করেছিলেন। যার ফলে বিনাভোটের নির্বাচনের মাধ্যমে আওয়ামী লীগ ক্ষমতা দখলের সুযোগ পায়।
তৃতীয়ত: আজিজ আহমদে ছিলেন ভারতের একান্ত অনুগত হিসেবে পরিচিত। তার সময়েই সীমান্তে বিএসএফের গুলিতে সবচেয়ে বেশি বাংলাদেশি নিহত হয়েছে। কিন্তু, আজিজ আহমেদ প্রতিবাদতো দূরের কথা, টু শব্দটি পর্যন্ত করেননি। এক সময়ের সাহসী ও শক্তিশালী বিজিবিকে আজিজ আহমেদ ভারতের অনুগত এবং মেরুদণ্ডহীন এক বাহিনীতে পরিণত করেছিলেন।
চতুর্থত: আজিজ আহমেদ সন্ত্রাসী পরিবারের একজন সদস্য হিসেবে পরিচিত। তার ভাই তোফায়েল আহমেদ যোসেফ দেশের একজন শীর্ষ সন্ত্রাসী হিসেবে পরিচিত। সম্প্রতি এই শীর্ষ সন্ত্রাসী যোসেফ রাষ্ট্রপতির ক্ষমা পেয়ে কারাগার থেকে বের হয়ে ভারতে পালিয়ে গেছেন।
অভিযোগ রয়েছে, বড় ভাই আজিজ আহমেদের প্রভাব খাটিয়েই দীর্ঘদিন সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড পরিচালনা করেছেন যোসেফ।
বিশ্বের মধ্যে বাংলাদেশ একটি ছোট রাষ্ট্র হলেও এদেশের সেনাবাহিনীর সুনাম রয়েছে আন্তর্জাতিক মহল পর্যন্ত। দেশের ভেতরও যেকোনো দুর্যোগে অসহায় মানুষের কাছে ছুটে যায় আমাদের সেনাবাহিনী। তাই সেনাবাহিনীর প্রতি এদেশের সকল শ্রেণি-পেশার মানুষের রয়েছে গভীর শ্রদ্ধা ও ভালবাসা।
কিন্তু, এমন দেশপ্রেমিক ও সুশৃঙ্খল বাহিনীর প্রধান হিসেবে আজিজ আহমেদের মতো একজন চরম বিতর্কিত ব্যক্তিকে নিয়োগ দেয়ায় রাজনৈতিক অঙ্গনসহ সর্বমহলে সমালোচনার ঝড় উঠেছে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও অনেকে আজিজ আহমেদকে সন্ত্রাসীর গডফাদার হিসেবে আখ্যায়িত করছে।