অ্যানালাইসিস বিডি ডেস্ক
কেন্দ্রদখল, ব্যালট ছিনতাই আর জাল ভোটের মাধ্যমে আওয়ামী লীগ সিলেটে কলঙ্কজনক অধ্যায়ের সূচনা করেছে বলে অভিযোগ করেছেন জামায়াতর মেয়রপ্রার্থী এড. এহসানুল মাহবুব জুবায়ের। সোমবার বেলা ১২ টায় এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ অভিযোগ করেন।
জুবায়ের বলেন, বহুল প্রতিক্ষিত সিলেট সিটি নির্বাচন নিয়ে সরকার দলের জঘন্য কর্মকান্ডে সিলেটবাসী হতবাক। এর মাধ্যমে সিলেটের সৌহার্দ্র সম্প্রীতির রাজনীতির ইতিহাসে এক কলংকজনক অধ্যায়ের সুচনা করেছে। বক্তব্যে তিনি সুস্পষ্টভাবে বেশ কিছু অনিয়ম চিত্র তুলে ধরেন।
১। ১৯ নং ওয়ার্ড বখতিয়ার বিবি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে আজাদের নেতৃত্বে সেন্টারে প্রবেশ করে টেবিল ঘড়ি প্রতীকের এজেন্ট ও সমর্থকদের উপর আইনশৃংঙ্খলা বাহিনী ও নৌকা প্রথীর কর্মীরা যৌথভাবে হামলা চালায়। তাদের হামলায় শিবির নেতা আব্দুল মুক্তাদির ফাহাদ ডান পায়ের হাঁটুর মধ্যে গুলিবিদ্ধ হয়ে মূমর্ষ অবস্থায় চিকিৎসাধীন আছেন ও ৭-৮ জন টেবিল ঘড়ি প্রতীকের কর্মীরা জখম প্রাপ্ত হয়েছে।
২। ৮ নং ওয়ার্ডের শাহজালাল জামেয়া ইসলামিয়া কামিল মাদ্রাসা সেন্টারে ছাত্রলীগ মহানগর সভাপতি রুম্মান ও সাব্বিরের নেতৃত্বে সেন্টারে প্রবেশ করে ঘড়ি প্রতীকের এজেন্টের কার্ড জোরপূর্বক ছিনিয়ে নিয়ে ছিঁড়ে ফেলে, প্রতিষ্ঠানের প্রধান গেইট তালাবদ্ধ করে ভিতরে প্রবেশ করে এজেন্টদের কে মারধর করে এবং বাহিরে অবস্থানরত আইন শৃংঙ্খলা বাহিনী ও নৌকা প্রতীকের সমর্থকরা যৌথভাবে টেবিল ঘড়ি সমর্থকদের উপর সশস্ত্র হামলায় চালায় এতে গুলিতে টেবিল ঘড়ি প্রতীকের কর্মী রেজাউল ও মামুন মারাত্মকভাবে জখম প্রাপ্ত হয় ও ১০-১৫ জন আহত হয় । অবশেষে সেন্টার দখল করে জাল ভোটের মহাৎসব চালায়।
৩। ১৮ নং ওয়ার্ড ঝেরঝেরী পাড়া রায়নগর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে এহিয়া চৌধুরী এম.পির নেতৃত্বে তাঁর নিজ ভাই টিফিন ক্যারিয়ার মার্কার কাউন্সিলর ও নৌকা প্রতীক যৌথভাবে চল্লিশের অধিক ককটেল বিস্ফোরণ এবং সাধারণ ভোটার ও টেবিল ঘড়ি প্রতীকের কর্মীদের উপর সশস্ত্র হামলা চালায় এবং সেন্টার দখল করে জাল ভোট চালাচ্ছে।
৪। ২১ নং ওয়ার্ড হাতিম আলী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে যুবলীগের মহানগর সাধারণ সম্পাদক মুশফিক জায়দিঘার নেত্বত্বে নৌকা প্রথীকের সশস্ত্র কর্মীরা টেবিল ঘড়ি প্রতীকের সমর্থক ও ভোটারদের মধ্যে ভীতিকর অবস্থার তৈরী করে এবং সেন্টার দখল করে জাল ভোট চালায়। তাদের সশস্ত্র হামলায় টেবিল ঘড়ি প্রতিকের কেন্দ্র পরিচালক মোক্তার হোসেন সহ ৫-৬ জন মারাত্মক ভাবে জখম প্রাপ্ত হয় ।
৫। ২৪ নং ওয়ার্ডের গাজী বুরহান উদ্দিন গরম দেওয়ান সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় সেন্টারে সাবেক এম পি আওয়ামী লীগের জেলা সাধারণ সম্পাদক শফিক চৌধুরীর নেতৃত্বে সরকার দলীয় কাউন্সিলর পদপ্রার্থী শাহজানের লাটিম প্রতীকের ও নৌকা প্রতীকের যৌথ উদ্যোগে সাধারণ ভোটার সহ টেবিল ঘড়ি সমর্থকদের উপর হামলা করে জোরপূর্বক কেন্দ্র দখল এবং জাল ভোট প্রদান করে। এতে তাদের হামলায় মারাত্মক ভাবে আশরাফ উদ্দিন কে আহত করে। আহতবস্থায় আশরাফ এবং জাহিদকে গ্রেফতার করে পুলিশের গাড়িতে তুলে নিয়ে যায়।
৬। ১৮ নং ওয়ার্ডে কাজী জালাল উদ্দিন বহুমুখী বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় সেন্টারে বিশ্বনাথ-বালাগঞ্জের এমপি এহিয়া চৌধুরীর নেতৃত্বে সাধারণ ভোটার ও টেবিল ঘড়ি সহ অন্যান্য প্রতিদ্ব›দ্ধী প্রার্থীদের কর্মীদের উপর নৌকা প্রতীক ও এমপির নিজ ভাই কাউন্সিলর প্রার্থী টিফিন ক্যারিয়ার মার্কার সমর্থকরা যৌথভাবে হামলা করে ভীতিকর পরিবেশ সৃষ্টি করে কেন্দ্র দখল করে জাল ভোট প্রদান করে।
৭। ২০ নং ওয়ার্ড এম সি কলেজ সেন্টারে কাউন্সিলর আজাদ ও রঞ্জিতের নেতৃত্বে সকাল ৮:৩০ টায় সেন্টারে প্রবেশ করে টেবিল ঘড়ি প্রতীকের এজেন্টদের বের করে দেওয়া হয়।
৮। ১১ নং ওয়ার্ড লামাবাজার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় সেন্টারে সকাল ৮টায় নৌকা প্রতীকের কর্মীরা সেন্টারের বাহিরে টেবিল ঘড়ি প্রতীকের প্রার্থীর নির্বাচনী ক্যাম্প বসাতে দেয় নাই এবং নৌকা প্রতীকের উচ্ছৃংখল কর্মীরা জাল ভোট প্রদান করছে।
৯। ১৩ নং ওয়ার্ড জামেয়া ইসলামিয়া মাদানিয়া কাজিরবাজার মাদ্রাসা সেন্টারে ঘড়ি মার্কার এজেন্টকে নৌকা প্রতীকের কর্মীরা আইনশৃংঙ্খলা বাহিনীর সহযোগিতায় সেন্টার থেকে বের করে দেয়।
১০। ১৫ নং ওয়ার্ড শাহজালাল জামেয়া ইসলামিয়া স্কুল এন্ড কলেজ সেন্টার এর ঘড়ি প্রতীকের পোলিং এজেন্ট রুমেল আহমদের বাড়িতে পুলিশের তল্লাশী ও হয়রানি করা হয়।
১১। ২১ নং ওয়ার্ড শিবগঞ্জস্থ স্কলার্সহোম সেন্টারে কাউন্সিলর ব্যালেট দেওয়া হচ্ছে কিন্তু মেয়রের কোনো ব্যালেট দেওয়া হচ্ছে না। সেখানে নৌকা প্রতীকের সন্ত্রাসী কাইয়ুমের নেতৃত্বে জাল ভোট দেওয়া হচ্ছে।
১২। ২০ নং ওয়ার্ড হাতিম আলী উচ্চ বিদ্যালয়ে আজাদের নেতৃত্বে সেন্টারে প্রবেশ করে জাল ভোট প্রদান করে।
১৩। ২১ নং ওয়ার্ড সোনারপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় সেন্টারে সকাল ১০:৪৫ মিনিটে ভোটারদের ব্যালেট দেওয়া হচ্ছে না । কর্মকর্তারা বলছেন ব্যালেট শেষ হয়ে গেছে।
১৪। ২০ নং ওয়ার্ড নবীনচন্দ্র সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় সেন্টারে কাউন্সিলর আজাদের নেতৃত্বে সেন্টার দখল ও ঘড়ি প্রতীকের এজেন্টদের জোরপূর্বক বের করে দেওয়া হয় এবং জাল ভোট প্রদান করে।
১৫। ৭ নং ওয়ার্ডের গৌছ উদ্দিন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও গৌছুল উলুম জামেয়া ইসলামিয়া মাদ্রাসা সেন্টারে সরকার দলীয় কাউন্সিলর প্রার্থী ও সেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি আফতাব হোসেনের নেতৃত্বে নৌকা ও ঘুড়ি প্রতীকের কর্মীরা সকল এজেন্টদের কে জোরপূর্বক বের করে যৌথভাবে সেন্টার দখল করে জাল ভোট অব্যাহত রেখেছে।
১৬। ২১ নং ওয়ার্ড হাতিম আলী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে যুবলীগের মহানগর সাধারণ সম্পাদক মুশফিক জায়দিঘার নেত্বত্বে নৌকা প্রথীকের সশস্ত্র কর্মীরা টেবিল ঘড়ি প্রতীকের সমর্থক ও ভোটারদের মধ্যে ভীতিকর অবস্থার তৈরী করে এবং সেন্টার দখল করে জাল ভোট চালায়। তাদের সশস্ত্র হামলায় টেবিল ঘড়ি প্রতিকের কেন্দ্র পরিচালক মোক্তার হোসেন মারাত্মক ভাবে জখম প্রাপ্ত হয়।
১৭। ২৬ নং ওয়ার্ডের কদমতলী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় সেন্টারে আওয়ামী লীগ নেতা রইছ আলীর নেতৃত্বে কেন্দ্র দখল এবং জাল ভোটের অপচেষ্ঠা করলে সাধারণ ভোটাররা প্রতিরোধে এগিয়ে আসলে সন্ত্রাসীরা পালিয়ে যায়। সেখানে পুণরায় সন্ত্রাসীরা জড়ো হয়ে পুণরায় কেন্দ্র দখল করার পাঁয়তারায় লিপ্ত রয়েছে।
১৮। ২৭ নং ওয়ার্ডে গোটাটিকর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও গোটাটিকর দ্বি-মুখী উচ্চ বিদ্যালয় সেন্টারে র্যাব ও বিজিবির প্রহরায় ছাত্রলীগের একটি সশস্ত্র গ্রুপ টেবিল ঘড়ি প্রতীক এবং স্থানীয় কাউন্সিলর আব্দুল জলিল নজরুলের টিফিন ক্যারিয়ারের এজেন্ট এবং কর্মীদের কে জোরপূর্বক বের করে দিয়ে সেন্টার দখল করে জাল ভোটের মহাৎসব করছে।
১৯। ২৪নং ওয়ার্ডে উমর শাহ তেররতন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় সেন্টারে কাউন্সিলর আজাদের নেতৃত্বে সশস্ত্র শতাধিক নৌকা প্রতীকের কর্মী জোরপূর্বক সেন্টারে ঢুকে ঘড়ি প্রতীক সহ অন্যান্য প্রতিদ্ব›দ্ধী প্রার্থীর সকল এজেন্টদের বের করে দিয়ে সেন্টার দখল করে জাল ভোট প্রদান অব্যাহত রেখেছে।
২০। ২৭ নং ওয়ার্ডে হবিনন্দি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ছাত্রলীগের একটি সশস্ত্র গ্রুপ টেবিল ঘড়ি প্রতীকের কর্মীদের কে জোরপূর্বক বের করে দিয়ে সেন্টার দখল করে জাল ভোটের মহাৎসব করছে।
২১। ১৭ নং ওয়ার্ড আম্বরখানা দরগা গেইট সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় সেন্টারে সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আশফাক আহমদ ও মহানগর ছাত্রলীগের সেক্রেটারি তুষার আহমদের নেতৃত্বে নৌকা প্রতীকের কর্মীরা ব্যালেট ছিনতাই করে নিয়ে যায়।