অ্যানালাইসিস বিডি ডেস্ক
নিরাপদ সড়ক চাই আন্দোলন নিয়ে অনেক জলঘোলা হয়েছে। গুজব পাল্টা গুজবে ঢাকা শহর গুজবের শহরে পরিণত হয়েছে। এমনি প্রেক্ষাপটে গত সোমবার ছাত্রলীগের নতুন সাধারণ সম্পাদক গোলাম রব্বানী দাবী করেছেন তার দল ছাত্রলীগ নিরাপদ সড়কের দাবিতে আন্দোলনরত শিক্ষার্থী ও পেশাগত দায়িত্ব পালনরত সাংবাদিকদের কারো উপর হামলা করা তো দূরের কথা নখের আঁচড় পর্যন্ত দেয়নি।
সোমবার দুপুরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় মধুর ক্যান্টিন সংলগ্ন আইবিএ ভবন প্রাঙ্গণে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন। গোলাম রাব্বানী আরো বলেন, ছাত্রলীগের সভাপতিকে নিয়ে রোববার আমি গণভবনে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করতে গিয়েছিলাম। প্রোগ্রাম শেষ করে আমরা যখন ল্যাবএইড হাসপাতাল ক্রস করি, বিনা উসকানিতে অপরপ্রান্ত থেকে কিছু স্কুল-কলেজ ড্রেস পরা অস্ত্রধারী আমাদের ওপর আক্রমণ করে। এ সময় আমাদের বহন করা গাড়ির কাচ ভেঙ্গে যায়।
গোলাম রব্বানীর এমন সাক্ষাৎকার সোশ্যাল মিডিয়ায় অল্প সময়ের মধ্যেই ভাইরাল হয়ে পড়ে। এটা নিয়ে ছাত্রসমাজের মধ্যে হাসি ঠাট্টা শুরু। হাজার হাজার শেয়ার ও কমেন্ট হয়। সবগুলো কমেন্টেই ছিল গোলাম রব্বানীর বিরুদ্ধে। এর মধ্যে আমরা গুটি কয়েক কমেন্ট তুলে ধরার চেষ্টা করছি।
সানজিদা সুলতানা ইতি বলেছেন, নখের আঁচড় কেন দিবে, সব ছাত্রছাত্রী কে আওয়ামীলীগ আর ছাত্রলীগ চুমাইছে।
রাজন বেলায়েত বলেন, পূর্বের ধারাবাহিকতা শুরু করে দিলেন উনি!গো এহেইড উইথ প্রিভিয়াস লায়ার……
নিশাত শিবলি বলেন, আচ্ছা, ভাইয়া, আপনার কথা মেনে নিলাম, তাহলে কারা করেছে একটু বলবেন, কাদের সাথে পুলিশের এত সখ্যতা গড়ে উঠল, কে তাহলে এই “হেলমেট বাহিনী”?
কাজী মোশাহিদ হোসেন ব্যাঙ্গ করে বলেন, এই বক্তব্যে কোন সত্যতা নেই। বিষয়টি পুরোপুরি গুজব। এতে কেউ বিভ্রান্ত হবেন না।পুলিশকে গুজব রটনাকারীদের বিরুদ্ধে তথ্য দিয়ে সহযোগিতা করুন। -স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
মোঃ আশরাফুজ্জামান বলেন, তাইতো বাবাজ্বী, ছাত্রলীগ কি এরকম “অপবিত্র ও নোংরা” কাজ করতে পারে? আহারে! ছিঃ নাউজুবিল্লাহ্। যারা অভিযোগ করেছে তারা ছাত্রলীগের “ঐতিহ্য ” (?) নষ্ট করতে চায়, তাই না বাবু??
মহিউদ্দিন আহমেদ বলেন, নখের আঁচড় দিবা কেন তোমরা,তোমাদের ডাইনি মায়ের নির্দেশে কোমলমতি ছাত্র-ছাত্রীদের বাঁশের লাঠি,হকিস্টিক,চাপাতি এবং রাম দা দিয়ে আঘাত করেছো।
ফয়সাল আহমেদ বলেছেন, জ্বি স্যার। আন্দোলন মোটামুটি শেষ, আপনি এবার ঘুমান। রাত হয়েছে, হাজার বছরের পুরানো রাত।
উল্লেখ্য ‘নিরাপদ সড়ক চাই’ আন্দোলনে পঞ্চম দিন থেকে শুরু হয়েছে ছাত্রলীগের হামলা। ছাত্রছাত্রীদের অহিংস আন্দোলনে ছাত্রলীগের হেলমেট বাহিনী হামলা চালিয়ে আন্দোলনটিকে সহিংস আন্দোলনে রূপ দেয়। ইতিমধ্যে অনেক ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের আক্রমণের ছবি প্রকাশ হয়েছে।
এরমধ্যে রুবেল হোসেন নামে এক ছাত্রলীগ নেতা ও তার অনুসারীদের দেখা যায়। সে নর্দান বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের নেতা।
বার্তা সংস্থা এপির সাংবাদিক আহাদের উপর হামলা করছে ছাত্রলীগের ঢাকা কলেজের যুগ্ম আহ্বায়ক ইব্রাহীম ও তার অনুসারীরা।
এছাড়াও ছাত্রদের আন্দোলনে ছাত্রদের সাথে সংঘর্ষে আহত ছাত্রলীগ নেতাদের দেখতে হাসপাতালে যান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, সড়ক ও সেতু মন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরসহ অন্যান্য নেতারা।
শিক্ষার্থীদের সাথে সংঘর্ষে আহত এক ছাত্রলীগ নেতাকে দেখতে হাসপাতালে গিয়েছেন শেখ হাসিনা।
স্কুল কলেজের ছাত্রদের উপর হামলাকারী এক ছাত্রলীগ নেতাকে দেখতে হাসপাতালে যান সড়ক ও সেতু মন্ত্রী ওবায়েদুল কাদের।
যদি ছাত্রদের সাথে ছাত্রলীগের সংঘর্ষ নাই হবে তবে তারা কেন আহত হবে? কেনই বা আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতারা তাদের দেখতে যাবে? এমন প্রশ্নের সদুত্তর দিতে পারেন নাই গোলাম রব্বানী।