বহুল আলোচিত ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলায় ১৯ জন আসামিকে মৃত্যুদণ্ড ও ১৯ জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড প্রদানের ঘটনা সম্পর্কে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারী জেনারেল ডা. শফিকুর রহমান বুধবার প্রদত্ত এক বিবৃতিতে বলেন, “২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলার রায়ে সরকারের ইচ্ছারই প্রতিফলন ঘটেছে। আসামিপক্ষ এ রায় প্রত্যাখ্যান করেছে।
বর্তমানে দেশে একটি কর্তৃত্ববাদী সরকার ক্ষমতায় রয়েছে। বিচার বিভাগের উপর সরকারের পূর্ণ কর্তৃত্ব রয়েছে। বহুল আলোচিত ও সমালোচিত সাবেক প্রধান বিচারপতি এস.কে সিনহার বক্তব্যে প্রমাণিত হয়েছে দেশের বিচার বিভাগের উপর সরকারের পূর্ণ নিয়ন্ত্রন রয়েছে। দেশে গণতন্ত্র, ন্যায় বিচার ও আইনের শাসন বলতে কিছুই অবশিষ্ট নেই। এ অবস্থায় দেশে কারো পক্ষেই ন্যায়বিচার পাওয়া সম্ভব নয়। কাজেই দেশবাসীর কাছে এ রায় গ্রহণযোগ্য নয়।
২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলার আসামিরা ন্যায় বিচার পেয়েছে কিনা সে বিষয় দেশে-বিদেশে সকলের মনেই প্রশ্ন রয়েছে।”
ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন
সম্পাদক পরিষদের আপত্তি, জাতীয় সংসদের ভেতরে ও বাইরে বিভিন্ন মহলের আপত্তি, সুশীল সমাজের আপত্তি এবং বিভিন্ন রাজনৈতিক দল এবং গণতান্ত্রিকবিশ্বসহ আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থার পক্ষ থেকে আপত্তি ও উদ্বেগ উপেক্ষা করে ডিজিটাল নিরাপত্তা বিলে প্রেসিডেন্ট স্বাক্ষর করায় গভীর উদ্বেগ এবং উৎকণ্ঠা প্রকাশ করেছে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী। দলটির সেক্রেটারি জেনারেল ডা: শফিকুর রহমান গতকাল এক বিবৃতিতে বলেন, জনগণের ভোট ছাড়াই ক্ষমতায় আসা গণবিচ্ছিন্ন সরকার স্বাধীন মত প্রকাশে বাধা সৃষ্টি করার উদ্দেশ্যেই ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন পাশ করল এবং প্রেসিডেন্ট সেই বিলে সই করার মাধ্যমে তিনি নিজেকে কালো আইনের সাথে সম্পৃক্ত করলেন, যা জাতির জন্য অত্যন্ত দুঃখজনক।
রাষ্ট্রের অভিভাবক হিসেবে তিনি তার দায়িত্ব পালনে ব্যর্থ হয়েছেন। প্রেসিডেন্ট তার সাংবিধানিক ক্ষমতা প্রয়োগ না করে জাতিকে হতাশ করলেন। তিনি আরো বলেন, আওয়ামী লীগ সরকার পুনরায় ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত হওয়ার উদ্দেশ্যেই তড়িঘড়ি করে এ আইন পাশ করল। এমনকি মন্ত্রিপরিষদের বৈঠকেও এই বিলটি নিয়ে আলোচনা করা হয়নি। তিনজন মন্ত্রী সম্পাদক পরিষদের সাথে আলোচনা করে বিলটি সংশোধনের উদ্যোগ গ্রহণের আশ্বাস দিলেও তারা এ নিয়ে আর আলোচনা করেননি।
জামায়াত সেক্রেটারি বলেন, এ আইনে পুলিশকে সীমাহীন ক্ষমতা দেয়া হয়েছে। পুলিশের সন্দেহ হলে ওয়ারেন্ট ছাড়াই যে কাউকে গ্রেফতার করতে পারবে। আওয়ামী লীগ সরকার এ আইন পাশের মাধ্যমে সংবাদপত্রের স্বাধীনতা হরণ করল। সাংবাদিকদের পক্ষে অনুসন্ধানী সংবাদ সংগ্রহ ও প্রকাশ করা আর সম্ভব হবে না। এর ফলে স্বাধীন মত প্রকাশের পথ রুদ্ধ করা হলো। এ কালো আইনের মাধ্যমে অনেক রক্ত ও ত্যাগের বিনিময়ে অর্জিত স্বাধীনতার মূল চেতনা গণতন্ত্রকে হত্যা করা হলো। গণতন্ত্রে বিশ্বাসী কোনো সরকার স্বাধীনভাবে মতপ্রকাশে এভাবে বাধা দিতে পারে না।
তিনি জাতির বৃহত্তর স্বার্থে এবং জনমতের প্রতি সম্মান দেখিয়ে এ কালো আইন অবিলম্বে বাতিল করার আহ্বান জানানোর পাশাপাশি জামায়াতের এ নেতা দেশের গণমাধ্যমের নেতাকর্মী ও জনসাধারণকে এই কালো আইনের বিরুদ্ধে প্রতিবাদে সোচ্চার হওয়ার আহ্বান জানান।
বিজ্ঞপ্তি