মাহমুদুর রহমান
প্রবাস জীবনে প্রধানত তিন উপায়ে বাংলাদেশের খবর পেয়ে থাকি। প্রথমত, টেলিফোনের মাধ্যমে। কিন্তু, সেখানে বাধা হলো, ওপার থেকে বন্ধু-বান্ধব, আত্মীয়-স্বজন ঠিকমত মুখ খুলতে পারেন না। সারাক্ষন বাংলাদেশে ফ্যাসিস্ট সরকারের গোয়েন্দা দল যে শিকারী কুকুরের মত ওৎ পেতে আছে। একবিংশ শতকে সহস্র ইলেকট্রনিক চোখ আর কানের জ্বালায় গোপনীয়তা বলে আর কোন বস্তু অবশিষ্ট নেই। তার উপর অবৈধ ক্ষমতা হারানোর ভয়ে সর্বক্ষন কাতর শেখ হাসিনা জনগনের মুখ বন্ধ রাখার জন্য একের পর এক কাল আইন করে চলেছেন। খবরের দ্বিতীয় মাধ্যম আজকাল ইউটিউব। কিন্তু, সেখানে আবার এত মিথ্যে কথা প্রচার হয় যে তার সাথে শুধু দখলদার প্রধানমন্ত্রীর মিথ্যা বচনের ফুলঝুরির তুলনা চলে। সংবাদের তিন নম্বর সোর্স জাতীয় পত্রিকার অন-লাইন ভার্সন। আকারে ইঙ্গিতে প্রকাশিত খবর থেকে প্রকৃত তথ্য বের করে নিতে হয়। বাংলাদেশের অধিকাংশ পত্রিকাই দীর্ঘদিন ধরে ফ্যাসিস্ট শাসক এবং তাদের প্রভূ, দিল্লির নির্লজ্জ দালালি করে চলেছে। ওই সব পত্রিকার অন-লাইনে ঢুকতে রুচি হয় না। মাত্র দুই-তিনটি পত্রিকা স্ব-আরোপিত সেন্সরের মধ্যেও কিছু সত্য এখনও প্রকাশ করছে। আমার ধারনা এই পত্রিকাগুলোর আয়ু আসছে জানুয়ারী পর্যন্ত। বাংলাদেশের বিরোধী দলের আন্দোলন বিমুখতার সুযোগ নিয়ে ওই সময়ের মধেই দিল্লি তার মুল এজেন্ট শেখ হাসিনাকে আবারও বিনা ভোটে ক্ষমতায় প্রতিষ্ঠিত করে ফেলবে। তখন তাবৎ মিডিয়া প্রান-বাঁচানোর তাগিদে শেখ মুজিব কন্যার পদতলে গড়াগড়ি দেবে। ভূমিকা বেশ দীর্ঘ হয়ে গেল। এবার আসল কথায় আসি।
গত দু-তিন দিন ধরে উপরোক্ত তিন সংবাদ সোর্সেই গনস্বাস্থ্যের প্রতিষ্ঠাতা ডাক্তার জাফরুল্লাহর বর্তমান সেনাপ্রধান সম্পর্কে করা বিরূপ মন্তব্য এবং তার প্রতিক্রিয়ার খবর পাচ্ছি। ডা: জাফরুল্লাহ সম্ভবত: আজিজ নামের বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর একাধিক জেনারেলের ঘটনা গুলিয়ে ফেলে সেনাবাহিনীর বর্তমান প্রধান জেনারেল আজিজ সম্পর্কে টক শো’তে ভুল অভিযোগ করেছেন। কিংবা এমনও হতে পারে যে সেনাপ্রধান জেনারেল আজিজ আহমেদের অতীত Career সম্বন্ধে ডা: জাফরুল্লাহকে ভূল তথ্য সরবরাহ করা হয়েছে। সঙ্গত কারনেই সেনাসদর ক্ষেপে গেছে এবং ২৪ ঘন্টার মধ্যে আইএসপিআর ডাক্তার জাফরুল্লাহর বক্তব্যের প্রতিবাদ করেছে। বিভিন্ন মাধ্যমে শুনতে পাচ্ছি যে আপাদমস্তক দেশপ্রেমিক, একাত্তরের রনাঙ্গনের মুক্তিযোদ্ধা, বর্ষীয়ান গুরুতর অসুস্থ মানুষটির বিরুদ্ধে হয় মামলা হয়ে গেছে অথবা তার প্রস্তুতি চলছে। ইতোমধ্যে একদিন তার গণস্বাস্থ্য হাসপাতাল একদল ডিবি পুলিশ বেশ কয়েক ঘন্টা ঘিরেও রেখেছিল। সবাই ধরে নিয়েছিল যে তিনি গ্রেপ্তার হচ্ছেন। শেষ পর্যন্ত অজানা কারনে তাকে গ্রেপ্তার না করেই ডিবি পুলিশের দল ঘেরাও প্রত্যাহার করে নিয়েছে। আমি এখন সেনাসদরের প্রতিবাদলিপির একটি অংশ উদ্বৃত করছি:
“ সেনাবাহিনী প্রধানসহ সেনাবাহিনীর মত রাষ্ট্রীয় একটি প্রতিষ্ঠানকে জনসম্মুখে হেয় করার হীন অপচেষ্টা মর্মে স্পষ্টত: প্রতীয়মান হয়। ” (bdnews24.com, on-line version, 13.10.2018)
সেনাসদর কিংবা আইএসপিআর ডাক্তার জাফরুল্লাহর বক্তব্যকে হীন অপচেষ্টা’ মনে করতেই পারে। ২৪ ঘন্টার মধ্যে প্রতিবাদলিপি পাঠিয়ে তারা দ্রুত সিদ্ধান্ত গ্রহন এবং পেশাদারিত্বের প্রমান রাখতেও সক্ষম হয়েছে। দেশপ্রেমিক জনগনও সেনাবাহিনীকে নিয়ে সর্বদাই গর্ব করতে চায়। কিন্তু, সেনাবাহিনীর পেশাদারিত্ব নিয়ে জনমনে প্রশ্ন তখনই উঠে যখন দেখা যায় যে ডাক্তার জাফরুল্লাহ’র মত প্রবীন মানুষের একটি ভূলকে সেনাসদর গুরুত্বের সাথে গ্রহন করলেও ক্ষমতাসীন শাসক দল এবং তাদের বিদেশী প্রভুর করা একের পর এক ভয়ংকর ধরনের অবমাননাকর বক্তব্যে একই সেনাসদর রহস্যজনক ভাবে নীরব থাকে। আওয়ামী লীগ সভানেত্রী, দখলদার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, তার পুত্র সজীব ওয়াজেদ জয় এবং ভারতের সাবেক রাষ্ট্রপতি শ্রী প্রণব মুখার্জীর তিনটি মন্তব্যের প্রতি- এই প্রসংগে আমি পাঠকের দৃষ্টি আকর্ষন করব।
শেখ হাসিনা তখন বিরোধী দলের নেত্রী। মাত্র কিছুদিন আগেই ১৯৯১ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ শোচনীয় ভাবে পরাজিত হয়েছে। রাগে, ক্ষোভে যাকেই সামনে পাচ্ছেন, তুলোধোনা করছেন। একে তো দল হেরেছে। তার উপর নিজেও ঢাকার দুই দুটো আসন থেকে বিপুল ভোটে পরাজিত হয়েছেন। সাদেক হোসেন খোকার কাছে পরাজয় তবু মানা যায়। কিন্তু, কোথাকার মেজর মান্নান, যাকে ঢাকার লোকজন তখন চেনে না বললেই চলে তার কাছে শেখ পরিবারের কন্যার পরাজয়ের অন্তর্জ্বালা মেটানো একেবারেই অসম্ভব। সেই সময় ভারতের বিদায়ী রাষ্ট্রদূত গেছেন বিরোধী দলের নেত্রীর সাথে সৌজন্য সাক্ষাৎ করতে। আর যায় কোথায়? শেখ হাসিনা বাংলাদেশ সেনাবাহিনীকে তার দলের পরাজয়ের জন্য অপরাধী সাব্যস্ত করে সেনাসদরের ভাষায় কেবল “রাষ্ট্রীয় একটি প্রতিষ্ঠানকে জনসম্মুখে হেয় করার হীন অপচেষ্টা”-ই করলেন না, রীতিমত চরম রাষ্ট্রবিরোধী বক্তব্য দিলেন একজন বিদেশী কূটনীতিকের কাছে। সেই ভারতীয কূটনীতিক কৃষ্ণন শ্রীনিবাসন (Krishnan Srinivasan) এর দি জামদানী রেভোলিউসন (The Jamdani Revolution) থেকেই উদ্ধৃত করি,
“She also mentioned Hill Tracts but has no semblance of an idea of the nature of a political solution’ though the Awami League kept on talking about one. She said it would be useful if India denied any connection with the Shanti Bahini, and claimed that the Shanti Bahini raids were mainly a put-up job by the Bangladesh Army in order to entrench themselves. I then asked her in that event who would believe our denial in any case.” (Krishnan Srinivasan, The Jamdani Revolution, Page-414, Academic Press and Publishers Library, Dhaka,2009)
এখানে শেখ হাসিনা তিনটি মারাত্মক দেশবিরোধী, মিথ্যা এবং সেনাবাহিনীর জন্য অবমাননাকর মন্তব্য করেছেন:
১। আওয়ামী লীগ সভানেত্রী ভারতীয় হাইকমিশনারকে পরামর্শ দিচ্ছেন যাতে শান্তি বাহিনীকে সহায়তা দেয়ার কথা ভারত বেমালুম অস্বীকার করে।
২। শেখ হাসিনা বিদ্রোহী শান্তি বাহিনীর পক্ষে সাফাই গেয়ে বলছেন যে বিদ্রোহী শান্তি বাহিনী বাংলাদেশে কোন আক্রমন চালাচ্ছে না।
৩। দেশের ভবিষ্যৎ প্রধানমন্ত্রী সেনাবাহিনীর কাঁধে মিথ্যা অভিযোগ আরোপ করে মন্তব্য করছেন যে, শান্তি বাহিনীর নামে যে অন্তর্ঘাতমূলক কর্মকান্ড চলছে সেগুলো প্রকৃতপক্ষে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর সদস্যরাই চালাচ্ছে।
শেখ হাসিনার উপরোক্ত দেশদ্রোহীতামূলক (seditious)) বক্তব্যে হতবাক হয়ে ভারতীয় হাইকমিশনার শুধু বলেছিলেন, আমরা শান্তিবাহিনীর সাথে সম্পর্কের কথা অস্বীকার করলে কে আমাদেরকে বিশ্বাস করবে?
আজ থেকে ৯ বছর আগে কৃষ্ণন শ্রীনিবাসনের বই ঢাকা থেকে প্রকাশিত হলেও এ বিষয়ে সেনাসদর কিংবা আইএসপিআর থেকে কোন বক্তব্য আমার দৃষ্টিতে অন্তত: পরেনি।
অবৈধ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পুত্র এবং আইটি বিষয়ক উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয় এবং তার ইসলাম বিদ্বেষী মার্কিন বন্ধু কার্ল সিওভাচ্চো (Carl Ciovacco) ২০০৮ সালের নভেম্বরে হাভার্ড ইন্টারন্যাশনাল রিভিউতে প্রকাশিত এক নিবন্ধে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীতে ইসলামিস্টদের অনুপ্রবেশ ঘটেছে বলে দাবী করেছিলেন। সজীব জয় ইঙ্গিত করেছিলেন যে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় গেলে সেনাবাহিনীতে ব্যাপক শুদ্ধি অভিযান চালানো হবে। সম্পূর্ণ লেখাটি সেনাবাহিনীর প্রতি বিদ্বেষে পরিপূর্ন ছিল। শেখ হাসিনার পুত্র তার লেখায় আরো দাবী করেছিলেন যে বাংলাদেশে ইসলামী চরমপন্থা বৃদ্ধির জন্য এদেশের সেনাবাহিনীই দায়ী। নিবন্ধের ভাষায়,
Islamic extremism is also on the rise in Bangladesh because of the growing number of Islamists in the military.” (Stemming the rise of Islamic Extremism in Bangladesh)
সজীব ওয়াজেদ জয় বর্নিত সেনাবাহিনীতে শুদ্ধি অভিযানের সঙ্গে বিডিআর হত্যাকান্ডের কোন সংযোগ আছে কী না আমার জানা নেই। তবে ওই দূর্ভাগ্যজনক এবং অনাকাঙ্খিত বিদ্রোহে বিডিআর এর মত দেশপ্রেমিক এবং ঐতিহ্যবাহী সীমান্ত প্রতিরক্ষা বাহিনী ধ্বংস হয়েছে এবং বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর চৌকশ ও মেধাবী অফিসারদের নৃশংস ভাবে হত্যার মধ্য দিয়ে সামগ্রিকভাবে আমাদের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাকে অনেকাংাশ দূর্বল করা হয়েছে। আশ্চর্যের বিষয় হলো যে সেনাসদর এবং আইএসপিআর দীর্ঘ দশ বছর পেরিয়ে গেলেও হাভার্ড ইন্টারন্যাশনাল রিভিউতে প্রকাশিত নিবন্ধ সম্পর্কে একটি বাক্যও উচ্চারন করেনি।
সম্প্রতি ভারতের সাবেক রাষ্ট্রপতি শ্রী প্রণব মুখার্জী তার আংশিক রাজনৈতিক জীবনচরিত রচনা করেছেন। ২০১৭ সালে প্রকাশিত বইটির নাম, The Coalition Years। ২০০৮ সালের ফেব্রুয়ারীতে তিনি এবং বাংলাদেশের তৎকালিন সেনাপ্রধান জেনারেল মইন সেই বছরের ডিসম্বরে অনুষ্ঠিতব্য নির্বাচনে শেখ হাসিনাকে ক্ষমতায় আনা এবং জেনারেল মইনের জীবিকা ও জীবনের নিরাপত্তা বিষয়ে যে আলোচনা করেছিলেন তার বর্ণনা বইটির ১১৪ পাতায় পাওয়া যাবে। ফেব্রুয়ারী মাসেই বাংলাদেশ সেনাপ্রধান এবং ভারত সম্মিলিত ভাবে সিদ্ধান্ত নিয়েছিল যে নির্বাচনে শেখ হাসিনাকেই জেতাতে হবে। ২০০৮ ডিসেম্বরের নির্বাচনে বিএনপির ৩০ আসন প্রাপ্তি দিল্লি ষড়যন্ত্রেরই ফসল ছিল। জেনারেল মইন যে নিরাপদে মেয়াদ পূর্ণ করে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের আশ্রয়ে যেতে পেরেছিলেন তার পেছনেও ছিল শ্রী প্রণব মুখার্জীর আশীর্বাদ। এবার ঘটনাটি শেখ হাসিনার বিশেষ মুরব্বী প্রণব মুখার্জীর জবানীতে বলি,
“ In February 2008, Bangladesh Army Chief Moeen Ahmed came to India on a six-day Visit. He called on me too. During the informal interaction, I impressed upon him the importance of releasing political prisoners. He was apprehensive about his dismissal by Sheikh Hasina after her release. But I took personal responsibility and assured the general of his survival after Hasina’s return to power…. Sheikh Hasina has been a close family friend.” (The Coalition Years, Pranab Mukherjee, Page-114, Rupa Publications, New Delhi, 2017)
প্রণব মুখার্জীর এই বই প্রকাশিত হওয়ার পর বাংলাদেশ সেনাবাহিনী কিংবা দেশটির সেনাপ্রধানের আর কোন ইজ্জত কী অবশিষ্ট থাকে? বাংলাদেশ সেনাবাহিনীকে প্রণবের চেয়ে বেশি ‘হেয়’ করার ক্ষমতা এক ডাক্তার জাফরুল্লাহর কেন, তার মত একশ জন টকশো বক্তারও নেই। কই এখনও তো সেনাসদর বললো না যে, শ্রী প্রণব মুখার্জী তার বইতে অসত্য তথ্য দিয়ে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর মত একদা গৌরবজ্জ্বল প্রতিষ্ঠানকে অপমানিত করেছেন, একটি স্বাধীন, স্বার্বভৌম রাষ্ট্রের সেনাপ্রধানের পদকে হেয় করেছেন! রাষ্ট্রের গোপন এবং নিজস্ব বিষয় নিয়ে পার্শ্ববর্তী রাষ্ট্রের পররাষ্ট্র মন্ত্রীর (তখন প্রণব মুখার্জী সেই পদেই ছিলেন) সঙ্গে পরামর্শের অপরাধে জেনারেল মইনের বিচারের দাবীও তো আজ পর্যন্ত সেনাবাহিনীর মধ্যে থেকে উঠেনি! ব্যাক্তি অথবা প্রতিষ্ঠান উভয় ক্ষেত্রেই জনগনের কাছ থেকে সম্মান, মর্যাদা, আস্থা ইত্যাদি অর্জন করতে হয়। প্রতিষ্ঠান আছে বলেই জনগন সম্মান করতে বাধ্য নয়। মুখে সম্মান করলেও অন্তরে ঘৃনা থেকেই যায়। বিদেশের দালাল, দখলদার কোন প্রধানমন্ত্রীর অবৈধ ক্ষমতা টিকিয়ে রাখতে সেনাবাহিনী যদি কোন সাবেক রাষ্ট্রপতিকে অসুস্থ সাজিয়ে জোর করে ক্যান্টনমেন্টে নিয়ে যায়, অথবা কোন কর্মরত প্রধান বিচারপতিকে বন্দুকের নল দেখিয়ে দেশ ত্যাগে বাধ্য করে তাহলে প্রতিষ্ঠানের মান-মর্যাদা ধূলিস্মাৎ হতে বাধ্য। আর মান-মর্যাদা যখন ধূলায় লুটায়, নতুন করে তাকে আর হেয় করা যায়না।
১৯৭১ সালের ২৬ মার্চ চট্রগ্রামে শহীদ জিয়ার নেতৃত্বে পাকিস্তানী হানাদার বাহিনীর বিরুদ্ধে সশস্ত্র যুদ্ধের ডাক দিয়ে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর জন্ম হয়েছিল। ১৯৭৫ সালের ৭ নভেম্বর সেনাবাহিনী এবং জনতার গৌরবজ্জ্বল সম্মিলিত বিপ্লব বাংলাদেশ সেনাবাহিনীকে জনপ্রিয়তার শিখরে উঠিয়েছিল। স্বাধীনতার প্রতীক রূপে প্রতিষ্ঠানটির স্থান হয়েছিল বাংলাদেশের প্রতিটি দেশপ্রেমিক জনগনের হৃদয়ের মনিকোঠায়। ১৯৯০ সালে এরশাদ বিরোধী গণ আন্দোলনে জনগনের গনতান্ত্রিক আকাঙ্খাকে মূল্য দিয়ে সেনাবাহিনী প্রতিষ্ঠানকে আরো মর্যাদাশীল করতে সক্ষম হয়েছিল। সেই সেনাবাহিনী ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারী জনগনের পাশে না দাঁড়িয়ে ফ্যাসিস্ট শাসককে সহায়তার মাধ্যমে প্রতিষ্ঠানকে প্রশ্নবিদ্ধ করেছে। সেনাবাহিনীর প্রতি বাংলাদেশের জনগনের যথেষ্ট ভালবাসা এবং দূর্বলতা রয়েছে। সেই আস্থা ও ভালবাসার মর্যাদা রক্ষা করতে পূনর্বার ব্যর্থ হলে রাষ্ট্র, জনগন এবং প্রতিষ্ঠান ভয়ানকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবে। মহান আল্লাহ তাআলা যেন সবাইকে সুমতি দেন, সঠিক পথে পরিচালিত করেন।
ফুটনোট: আমার লেখাটি শেষ করার আগেই শুনলাম সেনাপ্রধান সম্পর্কে টকশো’তে ভুল তথ্য দেযার জন্য ডাক্তার জাফরুল্লাহ সংবাদ সম্মেলন করে আনুষ্ঠানিকভাবে দু:খ প্রকাশ করেছেন। তিনি সঠিক কাজই করেছেন। এখন সেনাসদরের কাছে আমার প্রশ্ন তারা কী সেনাবাহিনীর ভাবমূর্তি হেয় করার জন্য শেখ হাসিনার কাছ থেকেও ক্ষমা প্রার্থনা দাবী করার হিম্মত রাখে?
লেখক: সম্পাদক, দৈনিক আমার দেশ (১৪ অক্টোবর, ২০১৮)