অ্যানালাইসিস বিডি ডেস্ক
নির্বাচনী তফসিল ঘোষণার পর পরই সকল রাজনৈতিক দল ও জোটে মনোনয়ন সংগ্রহ নিয়ে তোড়জোর শুরু হয়েছে। ইতোমধ্যেই আওয়ামী লীগের মনোনয়ন সংগ্রহ ও জমা দেয়ার কাজ সমাপ্ত হয়েছে। বিএনপিসহ বাকিদলগুলোর মনোনয়ন কার্যক্রম কেবল শুরু হয়েছে।
আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন মহাজোটে সকল দল নৌকা প্রতীকে নির্বাচনে যাওয়ার কথা শোনা গেলেও ব্যতিক্রম দেখা যাচ্ছে বিএনপি নেতৃত্বাধীন ২৩ দলীয় জোট ও জাতীয় ঐক্যফ্রন্টে। এ জোটে মাত্র ৮ টি দল ধানের শীষ প্রতীকে নির্বাচনে গেলেও প্রধান শরীক বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী জোটের সমর্থনে স্বতন্ত্র প্রার্থী দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বলে জানা গেছে।
এরই মধ্যে গতকাল ও আজ মিলিয়ে জামায়াতের বেশ কয়েকজন প্রার্থী স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করেছেন। এবং নিজ নিজ নির্বাচনী এলাকায় সক্রিয় রয়েছেন। গতকাল ও আজ মিলিয়ে এ পর্যন্ত দলটি থেকে যারা মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করেছেন তারা হলেন-
ঠাকুরগাঁও-২ (বালিয়াডাঙ্গী-হরিপুর) আসনে মাওলানা আব্দুল হাকিম, দিনাজপুর-১ (বীরগঞ্জ-কাহারোল)আসনে মাওলানা আবু হানিফ, দিনাজপুর-৪ (খানসামা-চিরিরবন্দর) আসনে মাও আফতাব উদ্দিন মোল্লা, দিনাজপুর-৬ (নবাবগঞ্জ-বিরামপুর-হাকিমপুর-ঘোড়াঘাট)আসনে আনোয়ারুল ইসলাম, নীলফামারী-১ আসনে মাওলানা আব্দুস সাত্তার, গাইবান্ধা-১ (সুন্দরগঞ্জ) আসনে অধ্যাপক মাজেদুর রহমান, গাইবান্ধা-৩ (সাদুল্যাপুর-পলাশবাড়ী) আসনে মাওলানা নজরুল ইসলাম, চাঁপাইনবাবগঞ্জ-১ (শিবগঞ্জ) আসনে ড. কেরামত আলী, চাঁপাইনবাবগঞ্জ-২(ভোলাহাট) আসনে অধ্যাপক ইয়াহইয়া খালেদ, চাঁপাইনবাবগঞ্জ-৩ (সদর) আসনে নুরুল ইসলাম বুলবুল, রাজশাহী-১ (গোদাগাড়ী –তানোর) আসনে অধ্যাপক মুজিবুর রহমান, নাটোর-১ আসনে অধ্যাপক তাসনিম আলম, নওগাঁ-৪ (মান্দা) আসনে খ. ম. আবদুর রাকিব, সিরাজগঞ্জ-৪ (উল্লাপাড়া-সলঙ্গা)আসনে মাও রফিকুল ইসলাম খান, সিরাজগঞ্জ-৫ (বেলকুচি-চৌহালি) আসনে অধ্যক্ষ আলী আলম, বগুড়া-৫ (শেরপুর ধুনট) আসনে আলহাজ্জ দবিবুর রহমান মনোনয়ন তুলেছেন।
এছাড়া পাবনা-১ (সাঁথিয়া-বেড়া) আসনে ডা. আব্দুল বাসেত, পাবনা-৪ (আটঘরিয়া-ইশ্বরদি) আসনে অধ্যাপক আবু তালেব মণ্ডল, পাবনা-৫ (সদর) আসনে প্রিন্সিপাল ইকবাল হোসাইন, কুষ্টিয়া-২ (মিরপুর-ভেড়ামারা) আসনে মুহাম্মদ আবদুল গফুর, চুয়াডাঙ্গা-২ (দামুড়হুদা-জীবন নগর) আসনে মোহাম্মদ রুহুল আমিন, ঝিনাইদহ-৩ (মহেশপুর-কোটচাঁদপুর) আসনে অধ্যাপক মতিয়ার রহমান, যশোর-১ (শার্শা) আসনে মাওলানা আজিজুর রহমান, যশোর-২ (চৌগাছা-ঝিকরগাছা) আসনে আবু সাঈদ মুহাম্মদ শাহাদত হোসাইন, যশোর-৫ আসনে গাজী এনামুল হক, যশোর-৬ (কেশবপুর) আসনে অধ্যাপক মুক্তার আলী মনোনয়ন পত্র সংগ্রহ করেছেন।
বাগেরহাট-৩ (মংলা-রামপাল)আসনে অ্যাডভোকেট আবদুল ওয়াদুদ, বাগেরহাট-৪ (মোড়েলগঞ্জ-শরণখোলা) আসনে অধ্যাপক আবদুল আলীম, খুলনা-৫ (ফুলতলা-ডুমুরিয়া) আসনে অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার, খুলনা-৬ (কয়রা-পাইকগাছা) মাও আবুল কালাম আযাদ, সাতক্ষীরা-১ (কলারোয়া-তালা) আসনে অধ্যক্ষ ইজ্জতুল্লাহ, সাতক্ষীরা-২ (সদর) আসনে মুহাদ্দিস আবদুল খালেক, সাতক্ষীরা-৩ (আশাশুনি-দেবহাটা) আসনে মুফতি রবিউল বাশার, সাতক্ষীরা-৪ (কালিগঞ্জ-শ্যামনগর) আসনে গাজী নজরুল ইসলাম, পিরোজপুর-১ (সদর -নাজিরপুর-স্বরূপকাঠি) আসনে শামীম সাঈদী, পটুয়াখালী-২ (বাউফল) আসনে ড.শফিকুল ইসলাম মাসুদ মনোনয়ন পত্র সংগ্রহ করেছেন।
ময়মনসিংহ-৬ (ফুলবাড়িয়া) আসনে অধ্যাপক জসিম উদ্দিন, কুমিল্লা ৬ (সদর) আসনে কাজী দ্বীন মোহাম্মদ, কুমিল্লা-১১ (চৌদ্দগ্রাম) আসনে ডা. সৈয়দ আবদুল্লাহ মো.তাহের, লক্ষীপুর-২ (রায়পুর-সদর আংশিক) আসনে মাস্টার রুহুল আমীন, লক্ষীপুর-৩ আসনে ডা. আনোয়ারুল আজিম, ফেনী-৩ আসনে ডা. ফখরুদ্দিন মানিক, চট্টগ্রাম-১০ (ডাবলমুরিং) আসনে আলহাজ্ব শাহজাহান চৌধুরী, চট্টগ্রাম-১৫ (লোহাগাড়া-সাতকানিয়া) আসনে মাওলানা শামসুল ইসলাম, চট্টগ্রাম-১৬ (বাঁশখালী) মাওলানা জহিরুল ইসলাম, কক্সবাজার-২ (কুতুবদিয়া-মহেশখালী) আসনে হামিদুর রহমান আজাদ মনোনয়ন পত্র সংগ্রহ করেছেন।
এছাড়াও ঢাকা-১৫ আসনসহ আরও বেশ কয়েকটি আসনে মনোনয়ন ফরম সংগ্রহের প্রস্তুতি চলছে বলে জামায়াতের দলীয় সূত্রে জানা গেছে।
উল্লেখ্য, স্বাধীনতা পরবর্তী বাংলাদেশে ১৯৮৬ সালে তৃতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রথম জামায়াত অংশ নেয়। সেই নির্বাচনে দলটি ৭৬টি আসনে মনোনয়ন দিয়েছিল। ওই নির্বাচনে দলটি ১০টি আসনে বিজয়ী হয়। ১৯৮৮ সালের ৩ মার্চ চতুর্থ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারি ১০ জাতীয় সংসদ নির্বাচন বর্জন করে জামায়াত। ১৯৯১ সালের ২৭ ফেব্রুয়ারি পঞ্চম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জামায়াত ১৮টি আসনে বিজয়ী হয়। এই নির্বাচনে দলটি ২২২ জন প্রার্থী দিয়েছিল। ১৯৯৬ সনের ১২ জুন অনুষ্ঠিত সপ্তম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জামায়াত ৩টি আসনে জয়ী হয়। ২০০১ সনের ১ অক্টোবর অনুষ্ঠিত অষ্টম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জামায়াত ১৭টি আসন পায়। মহিলা আসনগুলো থেকে ৪টি আসনে জয়ী হয় তারা। ২০০৮ সনের ২৯ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জামায়াত ২টি আসনে বিজয়ী হয়। ওই নির্বাচনে দলটি জোটগতভাবে ৩৯টি ও ৪টিতে এককভাবে নির্বাচন করে।