অ্যানালাইসিস বিডি ডেস্ক
গত ৩০ ডিসেম্বরের কারচুপি, কেন্দ্র দখল আর ভোট ডাকাতির নির্বাচনে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ থেকে শুরু করে অসংখ্য হেভিওয়েট ব্যক্তি, প্রার্থী এবং সমাজের সিনিয়র ও সম্মানিত নাগরিকরা নিজের ভোটাধিকার প্রয়োগ করেননি। সাবেক রাষ্ট্রপতি ও জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদও ভোট প্রয়োগ করেননি। ভোট থেকে বঞ্চিত হয়েছেন তিনবারের প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া।
ভোট দেয়ার ইচ্ছা থাকলেও সকাল থেকেই সারাদেশে একচেটিয়াভাবে নৌকার সমর্থকরা কেন্দ্র দখল করে সিল মারা ও ভোটের আগের রাতেই ব্যালট বাক্স ভরে রাখার ঘটনা প্রকাশিত হতে থাকায় দেশের সিনিয়র নাগরিক ও সুশীল সমাজের লোকজন ভোট দেয়া থেকে নিজেদেরকে বিরত রেখেছেন। সাধারণ মানুষের বড় একটি অংশও এমন বিতর্কিত নির্বাচনে ভোটদান থেকে নিজেদেরকে বিরত রাখেন। ক্ষমতাসীন দলের বাইরের অনেক লোককে কেন্দ্রে প্রবেশও করতে দেয়নি তাদের নেতাকর্মীরা।
ভোট দেননি সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা আকবর আলী খান। ভোট দেননি আইন ও শালিস কেন্দ্রের সুলতানা কামালও। ভোট দেননি দেশের সম্মানিত বিচারপতিগণ। ভোট দেননি ফেয়ার ইলেকশন মনিটরিং এলায়েন্সের (ফেমা) সভাপতি মুনিরা খানমও।
ঢাকা-৩ আসনে ধানের শীষের প্রার্থী গয়েশ্বর চন্দ্র রায় ভোটকেন্দ্রে গিয়েও অনিয়ম কারচুপি দেখে ভোট না দিয়েই চলে আসেন। ঢাকা-৮ আসনে বিএনপির প্রার্থী মির্জা আব্বাস ভোট দিতে কেন্দ্রে যান। নানা অনিয়মের অভিযোগ করে প্রতিকার না পেয়ে প্রতিবাদে নিজের ভোট দেয়া থেকে বিরত থাকেন। ঢাকা-৯ আসনের প্রার্থী মির্জা আব্বাসের স্ত্রী আফরোজা আব্বাসও কেন্দ্রে গিয়ে অনিয়ম দেখে ভোট না দিয়ে চলে আসেন।
নোয়াখালী-৫ (কোম্পানীগঞ্জ ও কবিরহাট) আসনে বিএনপি তথা ঐক্যফ্রন্টের প্রার্থী ব্যারিস্টার মওদুদ আহমেদ তার নিরাপত্তা না থাকায় তিনি তার ভোটাধিকার প্রয়োগ করেননি। কুমিল্লা-৩ (মুরাদনগর) আসনের বিএনপির প্রার্থী কে এম মজিবুল হক ভোট না দিয়েই কেন্দ্র থেকে ফিরে গেছেন। ভোট দেননি কুমিল্লা-৫ আসনের বিএনপির প্রার্থী অধ্যক্ষ মোহাম্মদ ইউনুস। ফরিদপুর-৩ আসনে বিএনপি ও জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট মনোনীত প্রার্থী চৌধুরী কামাল ইবনে ইউসুফও ভোট দেননি। ভোট দেননি ফরিদপুর-২ আসনের বিএনপি প্রার্থী শামা ওবায়েদ।
চট্টগ্রামের ১৬টি আসনের মধ্যে ১২টি আসনেই ভোট দেননি বিএনপি নেতৃত্বাধীন জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের প্রার্থীরা। ভোট না দেওয়া উল্লেখযোগ্য হেভিওয়েট প্রার্থীদের মধ্যে রয়েছেন চট্টগ্রাম-১০ (হালিশহর-পাহাড়তলী) আসনে আবদুল্লাহ আল নোমান, চট্টগ্রাম-১১ (বন্দর-পতেঙ্গা) আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, চট্টগ্রাম-৮ (চান্দগাঁও-বোয়ালখালী) আসনে আবু সুফিয়ান, চট্টগ্রাম-৫ (হাটহাজারী) আসনে মেজর জেনারেল (অব) সৈয়দ মোহাম্মদ ইব্রাহিম, চট্টগ্রাম-১ (মিরসরাই) আসনে নুরুল আমিন চেয়ারম্যান।
এছাড়া চরম বিতর্কিত ও একতরফা একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ভোট বর্জন করেছেন প্রায় একশত এর মত প্রার্থী। তারা ব্যাপক অনিয়ম আর কারচুপির অভিযোগে নির্বাচন বয়কট করেন। পাশাপাশি পুনরায় নির্বাচনের জন্য তফসিল ঘোষণার দাবি জানান।