ধানের শীষে ভোট দেয়ায় নোয়াখালীর সুবর্ণচরে ভোটের দিন রাতে এক মহিলাকে গণধর্ষণের ঘটনার মূল পরিকল্পনাকারী ও হামলায় নেতৃত্বদানকারী আওয়ামী লীগ নেতা রুহুল আমিন মেম্বারকে বাদ দিয়ে মামলা রেকর্ড করার অভিযোগ করেছেন বাদী সিরাজ মিয়া।
এদিকে, ঘটনার তদন্তে ঢাকা থেকে মানবাধিকার কাউন্সিলের তিন সদস্যের একটি তদন্ত টিম বুধবার নোয়াখালী পৌঁছে কাজ শুরু করেছে।
বাদীর অভিযোগ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ও চরজব্বর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) ইব্রাহিম খলিল বিষয়টি এড়িয়ে গিয়ে বলেন, আসামিদের ধরার জন্য পুলিশ চিরুনি অভিযান শুরু করেছে।
তিনি জানান, মামলার আসামি স্বপনকে (৩৫) মঙ্গলবার রাত ১১টায় পার্শ্ববর্তী লক্ষ্মীপুর জেলার রামগতির একটি চর থেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এ নিয়ে দুজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
আসামি যেই হোক তাদের কোনো প্রকার ছাড় দেওয়া হবে না উল্লেখ করে নোয়াখালীর পুলিশ সুপার ইলিয়াস শরীফ জানান, আসামিদের গ্রেপ্তারের জন্য চারটি টিম অভিযান চালাচ্ছে।
রুহুল আমিন মেম্বারের বিষয়ে পুলিশ সুপার বলেন, তদন্তে প্রমাণিত হলে কাউকেও ছাড় দেওয়া হবে না।
তিনি বলেন, এ জঘন্য ঘটনার ব্যাপারে পুলিশ তৎপর রয়েছে এবং তিনি নিজে সার্বক্ষণিক মনিটর করছেন।
জানা গেছে, রুহুল আমিন মেম্বার সুবর্ণচর উপজেলা আওয়ামী লীগের প্রচার সম্পাদক।
এদিকে নোয়াখালীর জেলা প্রশাসক তন্ময় দাস, পুলিশ সুপার ইলিয়াস শরীফ মঙ্গলবার বিকেলে নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে ভিকটিমকে দেখতে যান এবং তাকে সান্ত্বনা দিয়ে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দেন।
ঢাকা থেকে আসা মানবাধিকার কাউন্সিলের তিন সদস্যের একটি তদন্ত টিম বুধবার নোয়াখালী এসে কাজ শুরু করেছেন। তারা দুপুর ১২টায় নোয়াখালীর চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট, সাড়ে ১২টায় পুলিশ সুপারের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন।
তদন্তকারী দল ঘটনাস্থল ও নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ভিকটিমকে দেখতে যাবেন বলে এ প্রতিনিধিকে জানান।
অভিযোগ উঠেছে, ঢাকা থেকে আসা তদন্ত দলের প্রতিনিধিরা ঘটনাস্থলে যাবেন শুনে রুহুল আমিন মেম্বারের নেতৃত্বে ৮/১০টি মোটরসাইকেলযোগে এলাকায় এলাকায় আতঙ্ক সৃষ্টি করছেন।
তবে রুহুল আমিনকে এই প্রতিবেদক ফোনে বারবার কল করলেও তিনি ফোন ধরেননি।
ভিকটিম জানান, রোববার ধানের শীষে ভোট দেওয়ায় ভোটকেন্দ্রেই দলবল নিয়ে চরজব্বার ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক সদস্য স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা রুহুল আমিন তাকে রাতে দেখে নেবে বলে হুমকি দেয়। রাতে ঘুমিয়ে পড়ার পর ১০টার দিকে রুহুল আমিন পুলিশ এসেছে বলে তার স্বামীকে ডাক দেয়।
তিনি বলেন, দরজা খোলার পর আওয়ামী লীগকর্মী সোহেল, আবু, বেচু, হেঞ্জু, মোশাররফ, সালাউদ্দিন, চৌধুরী, সোহাগ, সোহেল ও আরও কয়েকজন ঘরে ঢুকে তার স্বামী, ছেলে ও মেয়েকে বেঁধে ফেলে। পরে একে একে সবাই তাকে ধর্ষণ করে।
তথ্যসূত্র: দেশ রূপান্তর