ধানের শীষে ভোট দেয়ায় নোয়াখালীর সুবর্ণচরে আওয়ামী লীগে নেতাদের এক নারীকে গণধর্ষণের রেশ এখনও কাটেনি। এরই মধ্যে এবার কবিরহাট থানায় যুবলীগ নেতা কর্তৃক গণধর্ষণের শিকার হয়েছেন কারাবন্দি এক যুবদল নেতার স্ত্রী (২৭)। ধানসিঁড়ি ইউনিয়নের নবগ্রামে শুক্রবার রাতে সিঁদ কেটে ঘরে ঢুকে মা ও তিন ছেলে-মেয়েকে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে ওই গৃহবধূকে ধর্ষণ করে তিনজন।
এ অভিযোগে জাকির হোসেন জহির (৪০) নামে এক যুবলীগ নেতাকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। জহির নবগ্রামের এনামুল হকের ছেলে। তিনি ধানসিঁড়ি ইউনিয়ন যুবলীগের সহসভাপতি। জিয়ানগর এলাকায় তার মুদি দোকান রয়েছে।
ধর্ষণের শিকার গৃহবধূর স্বামী স্থানীয় ব্যবসায়ী ও একজন যুবদল কর্মী। ৩০ ডিসেম্বর একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে পুলিশ এক মামলায় তাকে গ্রেফতার করে। দলের নেতাকর্মীরা জানান, তিনি এখন নোয়াখালী কারাগারে রয়েছেন।
গৃহবধূর বরাত দিয়ে তার মামা জানান, রাত দেড়টার দিকে জহিরসহ ৭ জন সিঁদ কেটে তার ভাগ্নের (গৃহবধূর স্বামী) বসতঘরে ঢোকে। তারা ভাগ্নের স্ত্রীকে বলে- তোর কাছে ৬০ হাজার টাকা আছে, সেগুলো আমাদের দিয়ে দে। এ নিয়ে ভাগ্নেবউয়ের সঙ্গে তাদের বাকবিতণ্ডাও হয়। পরে তারা ঘরের লাইট বন্ধ করে ভিকটিমের মা, ভিকটিমের এক ছেলে ও দুই মেয়েকে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে। দুর্বৃত্তদের মধ্যে তিনজন ভিকটিমকে পালাক্রমে গণধর্ষণ করে। রাত ৩টার দিকে ধর্ষকরা ঘর থেকে বের হয়ে যায়।
তারা ঘরে থাকা নগদ টাকা, ২ ভরি স্বর্ণ ও মোবাইল লুট করে নিয়ে যায়। গৃহবধূর মামা আরও বলেন, এ ঘটনার পর কয়েকজন দুর্বৃত্ত পাশের এক বাড়ির ঘরের দরজা ভেঙে ভেতরে ঢুকে ঘরে থাকা লোকজনকে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে এক ভরি স্বর্ণ ও নগদ ৩৪ হাজার টাকা নিয়ে যায়। এর সঙ্গে ওই দুর্বৃত্তদের সম্পর্ক থাকতে পারে। ঘটনা ভিন্ন খাতে নিতেও এটি করা হয়ে থাকতে পারে।
কবিরহাট থানার ওসি মির্জা মোহাম্মদ হাছান যুগান্তরকে বলেন, দুপুর ১টার দিকে ওই গৃহবধূ থানায় এসে অভিযোগ করেন। তার অভিযোগকে মামলা হিসেবে নেয়া হয়েছে। এতে ৬-৭ জনকে আসামি করা হয়েছে। গৃহবধূ জানিয়েছেন, এর ভিত্তিতে জহির উদ্দিন ওরফে জাকির হোসেন নামে একজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তাকে আদালতে তুলে রিমান্ডের আবেদন জানানো হবে। অন্য আসামিদের ধরতে অভিযান চালানো হচ্ছে। ওসি আরও বলেন, ওই গৃহবধূকে পরীক্ষার জন্য নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
সহকারী পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) হাসান মাহমুদ যুগান্তরকে বলেন, চিকিৎসকের প্রতিবেদন পাওয়ার অপেক্ষায় রয়েছি। দুর্বৃত্তরা কয়েক লাখ টাকা ও স্বর্ণালংকারও নিয়ে গেছে।
৩০ ডিসেম্বর ভোট গ্রহণের রাতে সুবর্ণচরে স্বামী-সন্তানদের বেঁধে রেখে এক গৃহবধূকে ধর্ষণ করে কয়েকজন। গৃহবধূ অভিযোগ করেন, ধানের শীষে ভোট দেয়ার কারণে ভোটকক্ষে তাকে দেখে নেয়ার হুমকি দেয়া হয়েছিল। রাতে তিনি গণধর্ষণের শিকার হন।
তথ্যসূত্র: যুগান্তর