অ্যানালাইসিস বিডি ডেস্ক
২৯ বছর পর অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) ও হল সংসদ নির্বাচন। প্রাচ্যের অক্সফোর্ড খ্যাত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শুধু গণতান্ত্রিক আন্দোলনের প্রাণকেন্দ্রই নয়, যোগ্য, সাহসী ও দেশপ্রেমিক নেতৃত্ব তৈরির জন্যও এই প্রতিষ্ঠানটির সুনাম রয়েছে। বর্তমানে দেশের রাজনীতিতে যারা নেতৃত্ব দিচ্ছেন তাদের বড় একটি অংশ ডাকসুর বিভিন্ন পর্যায়ে দায়িত্ব পালন করে আসছেন। বিগত ২৯ বছর ধরে ডাকসুর নির্বাচন না হওয়ায় দেশের রাজনীতিতেও নতুন নেতৃত্ব সৃষ্টি হচ্ছে না। তাই ডাকসু নির্বাচন এখন সময়ের দাবি বলেও মনে করছেন শিক্ষাবিদসহ বিশিষ্টজনেরা।
জানা গেছে, আগামী মার্চ অথবা এপ্রিলেই ডাকসু নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। ইতিমধ্যে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ছাত্রসংগঠনগুলোর নেতাদের সঙ্গে কয়েক দফা বৈঠক করেছেন। নির্বাচন পরিচালনার জন্য রিটার্নিং কর্মকর্তাও নিয়োগ দিয়েছে কর্তৃপক্ষ। এখন যেকোনো দিন ডাকসু ও হল সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করা হতে পারে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বিএনপির ছাত্রসংগঠন জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলও ডাকসু নির্বাচনে অংশ নিতে যাচ্ছে। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ও ছাত্রলীগের পক্ষ থেকে ছাত্রদলকে আশ্বস্ত করা হয়েছে যে, তারা নির্বাচনে অংশ নিলে তাদেরকে কার্যক্রমে কোনো বাধা দেয়া হবে না। কিন্তু, ডাকসু নির্বাচন কতটুকু অবাধ ও সুষ্ঠু হবে এটা নিয়ে শিক্ষাবিদ, ঢাবির শিক্ষার্থীসহ রাজনৈতিক অঙ্গনেও যথেষ্ট সন্দেহ সংশয় দেখা দিয়েছে।
কারণ, সরকার এমন এক সময়ে ডাকসু নির্বাচন দিতে চাচ্ছে যখন দেশের সবকিছুই রয়েছে তাদের একক নিয়ন্ত্রণে। আর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ও বর্তমানে এককভাবে নিয়ন্ত্রণ করছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের ছাত্রসংগঠন ছাত্রলীগ। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিটি হলের নিয়ন্ত্রণ তাদের হাতে। সবচেয়ে লক্ষণীয় বিষয় হলো বিশ্ববিদ্যালয়ের বর্তমান ভিসি ড. আখতারুজ্জামান আওয়ামী লীগের কর্মীর মতোই সব কিছু করে যাচ্ছেন।
বিশেষ করে ৩০ ডিসেম্বরের ভয়াবহ ভোট ডাকাতির নির্বাচনের পর বর্তমান সরকারের সময়ে দেশে আর কোনো নির্বাচন সুষ্ঠু হবে একথা এখন আর কেউ বিশ্বাস করে না। বিশিষ্টজনেরাও মনে করছেন, ডাকসু নির্বাচন জাতীয় সংসদ নির্বাচনের মতোই হবে। নির্বাচনের দিন ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা ভোট দেয়ার জন্য ক্যাম্পাসের কাছেও যেতে পারবে না।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ২৯ বছর পর নির্বাচনে ছাত্রদল যদি অংশ না নেয় তাহলে ডাকসু নির্বাচনের কোনো গ্রহণযোগ্যতা থাকবে না। তাই বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ও ছাত্রলীগ কৌশলে ছাত্রদলকে নির্বাচনে আনার জন্য টোপ দিয়েছে। এটা মূলত তাদেরকে নির্বাচনে এনে বৈধতা নেয়া।
এদিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের সচেতন শিক্ষার্থীরা মনে করছেন, নির্বাচনটা পুরোই সংসদ নির্বাচনের মতো হবে। এই নির্বাচনে ছাত্রদলের কোনোভাবেই অংশ নেয়া উচিত হবে না। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের ডাকা বৈঠকেও ছাত্রদলের যাওয়া উচিত হচ্ছে না। হয়তো ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক আকরামুল হাসান ছাত্রলীগের পাতানো ফাঁদে পা দিয়েছে।