অ্যানালাইসিস বিডি ডেস্ক
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় নিয়ে সরকারের পরিকল্পনা ভেস্তে গেছে। নুরুল হক নুরকে ভিপি পদ দিয়ে কোটা আন্দোলনের নেতাদেরকে নিজেদের পক্ষে নেয়ার চেষ্টা করেছিল সরকার। কিন্তু সরকারের সেই চেষ্টা এখন পর্যন্ত সফল হয়নি। ভিপি হিসেবে শপথ নেয়ার বিষয়ে এককভাবে কোনো সিদ্ধান্ত নেবেন না বলে জানিয়েছেন নুরুল হক নুর। ভোট বর্জনকারী প্যানেলগুলোর সিদ্ধান্তের সঙ্গে একাত্মতা ঘোষণা করেছেন নুর।
ইতিমধ্যে বুধবার দুপুরে নুরের নেতৃত্বে ছাত্রনেতারা ভোট বাতিল করে অবিলম্বে নতুন তফসিল ঘোষণার দাবিতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি ড. আখতারুজ্জামানকে স্মারকলিপি দিয়ে আসছেন। যদিও ভিসি জানিয়ে দিয়েছেন যে, নতুন নির্বাচন সম্ভব নয়। এমনকি ক্যাম্পাসে কেউ বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করলে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেবেন বলে ছাত্রদেরকে সতর্ক করে দিয়েছেন ভিসি।
এদিকে, ভোটবর্জনকারী ৫ প্যানেলের প্রার্থী তাদের সমর্থকরা আজ নতুল তফসিল ঘোষণার দাবিতে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে আগামী শনিবার পর্যন্ত সময় বেঁধে দিয়েছেন। যদি এই সময়ের মধ্যে দাবি মান না হয় তাহলে দাবি আদায়ে লাগাতার কঠোর কর্মসূচি দেয়ার হুমকি দিয়েছেন তারা।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, এবারের আন্দোলন আর কোটা আন্দোলনের মতো হবে না। কোটা আন্দোলনটা ছিল সাধারণ ছাত্রদের নিয়ে। ওই আন্দোলনে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও বিশিষ্টজনদের সমর্থন থাকলেও তাদের সরাসরি কোনো সম্পৃক্ততা ছিল না। এবার যেহেতু রাজনৈতিক দলগুলোর ছাত্রসংগঠন ডাকসু নির্বাচনে অংশ নিয়েছিল, তাই ভোট বাতিলের এই আন্দোলনে রাজনৈতিক দলগুলোর প্রত্যক্ষ সম্পৃক্ততা থাকবে। আর সমর্থন থাকবে সকল শ্রেণি পেশার মানুষের। তাই ভোট বাতিল ও নতুন নির্বাচনের দাবিতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে গড়ে উঠা আন্দোলন আগের চেয়ে এখন আরও বেশি তীব্র হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
এছাড়া আন্দোলনরত ছাত্রদের সঙ্গে কথা বলেও এমন আভাস পাওয়া গেছে। একজন ছাত্রনেতা জানান, কোটা আন্দোলনের সময় অনেকে বিপক্ষে ছিলেন। আবার অনেকে নিরব ছিলেন। ভোটডাকাতির প্রতিবাদে গড়ে উঠা চলমান আন্দোলনে ছাত্রলীগ নেতাকর্মী ছাড়া সবাই এক কাতারে এসে দাঁড়িয়েছে। শিক্ষক-শিক্ষার্থী, বিশিষ্টজন, রাজনৈতিক দলসহ সবাই ভোট বাতিল করে নতুন নির্বাচনের পক্ষে। তাই দাবি আদায়ে যে ধরণের আন্দোলন করা দরকার তাই করা হবে। কারণ, এত বড় অন্যায় মেনে নেয়া যায় না। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ শুধু ভোট ডাকাতি করেনি, তারা আমাদের ন্যায্য অধিকার ছিনিয়ে নিয়ে গেছে। আন্দোলনের মাধ্যমে আমাদেরকে অধিকার আদায় করতেই হবে।
সরকারের ইশারায় যদি কর্তৃপক্ষ নতুন তফসিল ঘোষণা না করে তাহলে আপনারা কী করবেন এমন প্রশ্নের জবাবে ওই ছাত্রনেতা বলেন, দুনিয়ার ইতিহাসে কোনো স্বৈরাচারই জনগণের ন্যায্য দাবি মানেনি। জনগণের তীব্র আন্দোলনের মাধ্যমেই স্বৈরাচাররা দাবি মানতে বাধ্য হয়। ঢাবি ভিসিও আজ স্বৈরাচারের ভাষায়ই কথা বলেছেন। ছাত্রসমাজ তার এসব হুঙ্কারকে ভয় করে না। অতীতের স্বৈরাচারদের মতো ঢাবি কর্তৃপক্ষও আন্দোলনের মুখে দাবি মানতে বাধ্য হবে।
তাহলে আন্দোলন কী ধরণের হতে পারে এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, সেটা নির্ভর করবে সরকার ও ঢাবি কর্তৃপক্ষের আচরণের ওপর। তারা যদি দাবি না মেনে কঠোর হওয়ার চেষ্টা করে তাহলে পরিস্থিতি খারাপ হবে। আগের মতো এবারও সরকার যদি নির্যাতন করার চেষ্টা করে তাহলে আন্দোলন সারাদেশে ছড়িয়ে পড়বে। পরে যা সামাল দেয়া সরকারের জন্য কঠিন হতে পারে।