অ্যানালাইসিস বিডি ডেস্ক
গণভবনে দাওয়াত দিয়ে ডাকসুর নবনির্বাচিত ভিপি নুরুল হক নুরসহ অন্যদেরকে বিভিন্ন নসিহত করাসহ ব্যাপক আপ্যায়ন করিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। কোটা আন্দোলন নিয়েও অনেক কথা বলেছেন প্রধানমন্ত্রী। নুরদেরকে শুনিয়েছেন তার বাবা শেখ মুজিবুর রহমানের ছাত্রজীবনের গল্পও। মোট কথা, কোটা আন্দোলনের এই নেতাকে বশে নেয়ার জন্য যা যা করা দরকার সবই করেছেন প্রধানমন্ত্রী।
গত বছর কোটা আন্দোলনের সময় ছাত্রলীগ দিয়ে নুরুল হক নুরসহ অন্যদেরকেও অমানবিক নির্যাতন করিয়েছেন শেখ হাসিনা। এমনকি ডিবি পুলিশ দিয়েও তাদেরকে গুম করেছেন। ডিবি পুলিশ তাদেরকে অপহরণ করে নিয়ে অন্ধকার কুঠুরিতে রেখে অমানবিক নির্যাতন করেছে। কোটা আন্দোলন দমনের জন্য যা করার দরকার ছিল শেখ হাসিনা তখন সবই করেছেন।
দেখা গেছে, ওই সময় কোটা সংস্কারের যৌক্তিকতা নিয়ে কথা বলার জন্য নুরুল হক নুর প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করতে একাধিকবার চেষ্টা করেছেন। নুর তখন বলেছিলেন, আমরা প্রধানমন্ত্রীকে বিষয়টি বুঝিয়ে বলতে চাই। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী তাদেরকে এক মিনিট সময়ও দেননি। ওই সময় শত আবদার করেও নুরুরা প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করতে পারেননি।
কিন্তু, ব্যাপক ভোটডাকাতির মাধ্যমে ডাকসু নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ায় ছাত্রলীগ ছাড়া সবাই যখন ভোট বাতিল করে নতুন নির্বাচনের দাবিতে আন্দোলনে নেমেছে তখনই নুরুদেরকে গণভবনে দাওয়াত দিলেন প্রধানমন্ত্রী। অভিযোগ রয়েছে, পরিস্থিতি সামাল দিতেই সরকার পরিকল্পিতভাবে নুরুল হক নুরকে ডাকসুর ভিপি হিসেবে ঘোষণা করে।
এদিকে, ভিপি নির্বাচিত হওয়ার পরও ভোট বাতিলের দাবিতে সাধারণ শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের সঙ্গে একাত্মতা ঘোষণা করেন নুর। নুরের নেতৃত্বে ভোটবর্জনকারী ৫ টি প্যানেলের প্রার্থীরা ভিসিকে আল্টিমেটামও দিয়েছিলেন। শনিবার ছিল ভিসিকে দেয়া আল্টিমেটামের শেষ দিন। কথা ছিল বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ দাবি না মানলে শনিবার নতুন কর্মসূচি দেয়া হবে।
কিন্তু, আল্টিমেটামের শেষ দিন নুরকে গণভবনে দাওয়াত দেন প্রধানমন্ত্রী। নুরসহ ডাকসু নির্বাচনে বিজয়ী সভায় শনিবার প্রধানমন্ত্রীর আহ্বানে সাড়া দিয়ে গণভবনে যান।
নুরদের সম্মানে গণভবনের এই আয়োজন নিয়ে তিন ধরেই বিভিন্ন মহলে চলছে আলোচনা-সমালোচনা। যেদিন নতুন কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে সেদিন কেন গণভবনে তাদেরকে দাওয়াত করা হলো এনিয়ে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীসহ সকল মহলে নানা প্রশ্ন দেখা দিয়েছে।
বিশিষ্টজনেরাসহ সচেতন মানুষ মনে করছেন, নুরদেরকে গণভবনে ডাকা প্রধানমন্ত্রীর একটা কৌশল। মূলত: ডাকসুর ভোট বাতিল করে নতুন নির্বাচনের দাবিতে যে আন্দোলন শুরু হয়েছে সেটাকে কৌশলে দমন করতেই নুরদেরকে গণভবনে নিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। নিজেদের স্বার্থেই শেখ হাসিনা এখন নুরদেরকে গণভবনে ডেকে নিয়ে পক্ষে নেয়ার চেষ্টা করছেন। এখন দেখার বিষয়, গণভবনের খাবার খেয়ে নুর কি সরকারের ফাঁদে পা দেবে নাকি সাধারণ ছাত্রদের অধিকার আদায়ের আন্দোলনে নেতৃত্ব দেবেন।