অ্যানালাইসিস বিডি ডেস্ক
কোনোভাবেই বন্ধ হচ্ছে না সড়ক দুর্ঘটনা। এমনকি নিরাপদ সড়কের দাবিতে শিক্ষার্থীরা যখন রাস্তায় আন্দোলন করে তখনও দেশের বিভিন্ন স্থানে বাস ও ট্রাক চাপায় প্রতিদিন ৮-১০ জন করে নারী-পুরুষ ও শিশু মারা গেছে। সর্বশেষ শুক্রবার সকালে ওয়ার্কর্স পার্টির সভাপতি ও সাবেক মন্ত্রী রাশেদ খান মেনন অল্পের জন্য রক্ষা পেয়েছেন। ধাক্কাটা আরেকটু জোরে লাগলেই হয়তো মেনন না ফেরার দেশে চলে যেতেন।
গত বছর নিরাপদ সড়ক চাই আন্দোলনের সময় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সড়কে শৃঙ্খলা ফেরানোর লক্ষ্যে একাধিক নির্দেশনা দিয়েছিলেন। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, আজ পর্যন্ত প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনাগুলোর একটিও বাস্তবায়ন করেনি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ।
চলতি বছরের প্রথম দিকেও সংবাদ সম্মেলনে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, সড়ক দুর্ঘটনার দায় আমরা এড়াতে পারি না। নিজেদের ব্যর্থতার কথাই ওবায়দুল কাদের সেদিন স্বীকার করেছেন। কাদেরের ভাষায়- মন্ত্রণালয় ও বিআরটিএ’র কথা পরিবহন মালিক ও শ্রমিকরা শুনছে না।
এরপর, সর্বশেষ বৃহস্পতিবার ঢাকা মহানগর পুলিশ কমিশনার আছাদুজ্জামান মিঞা বলেছেন, সড়কে শৃঙ্খলা ফেরাতে সরকার, বিআরটিএ ও পুলিশ ব্যর্থ হয়েছে। নিজেদের ব্যর্থতা ঢাকতে তিনি পথচারীদেরকেও গ্রেফতারের নির্দেশ দিয়েছেন।
ডিএমপি কমিশনারের বক্তব্য রাজনৈতিক অঙ্গনসহ বিভিন্ন মহলে ব্যাপক আলোচনা-সমালোচনার জন্মদিয়েছে। তার বক্তব্যের সূত্র ধরে রাজনীতিক বিশ্লেষকসহ সচেতন মানুষ বলছেন, পুলিশ কমিশনারের বক্তব্যে প্রমাণ হলো বাংলাদেশ এখন ব্যর্থ রাষ্ট্র। কারণ, রাষ্ট্রের সবগুলো সংস্থা মিলেও যেখানে গণপরিবহনে শৃঙ্খলা ফেরাতে পারেনি, সেখানেতো রাষ্ট্রের আর কার্যকারিতা থাকে না। রাষ্ট্রের চেয়ে এখন পরিবহন সেক্টর বেশি শক্তিশালী। যার কারণে, রাষ্ট্র তাদের সঙ্গে পারছে না।
তারা বলছেন, যেখানে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশ বাস্তবায়ন হয় না। মন্ত্রণালয়ের নির্দেশ মানে না অধিদপ্তর। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের নির্দেশ মানে না ট্রাফিক পুলিশরা। আর পুলিশের কথা মানে না পরিবহন শ্রমিকরা। আর সরকারের কথা রাখে না পরিবহন মালিকরা। সেখানে রাষ্ট্রকে আর কার্যকর রাষ্ট্র বলার কোনো সুযোগ নেই। বাংলাদেশ কার্যত এখন একটি ব্যর্থ রাষ্ট্র।