অ্যানালাইসিস বিডি ডেস্ক
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের আলোচিত দুর্নীতিবাজ সেই আবজাল দম্পতিকে খুঁজে পাচ্ছে না দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। জানা গেছে, দুদকের একটি দল কয়েক দিন ধরে আবজাল দম্পতির খোঁজে সম্ভাব্য সব জায়গায় অভিযান চালিয়েছে। কিন্তু তাদের হদিস মিলছে না। দুদকের কর্মকর্তারা কোনো ধারণাও করতে পারছেন না ওই দম্পতি আসলে এখন কোথায়।
জানা গেছে, গত ৬ জানুয়ারি আবজাল হোসেন ও তাঁর স্ত্রী রুবিনা খানমের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা দিয়ে পুলিশের বিশেষ শাখার (এসবি) বিশেষ পুলিশ সুপার (ইমিগ্রেশন) বরাবর চিঠি দেয় দুদক। এরপর গত ১০ জানুয়ারি আবজালকে দুদকে ডেকে জিজ্ঞাসাবাদ করে দুদকের অনুসন্ধান দল। ২১ জানুয়ারি দুদকের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে আবজাল হোসেন ও তাঁর স্ত্রী রুবিনা খানমের স্থাবর-অস্থাবর সম্পদ ক্রোক, অর্থাৎ হস্তান্তর বা লেনদেন বন্ধ এবং ব্যাংক হিসাবগুলোর লেনদেন জব্দ (ফ্রিজ) করার আদেশ দেন ঢাকার মহানগর দায়রা জজ আদালত।
কিন্তু দেখা গেছে, ব্যাংক লেনদেন বন্ধে আদালতের নিষেধাজ্ঞা থাকার পরও একাধিক ব্যাংক থেকে টাকা উত্তোলন করেছেন এই দম্পতি। বিভিন্ন গণমাধ্যমে এনিয়ে সংবাদ প্রকাশিত হলে প্রশাসনসহ সব জায়গায় তোলপাড় সৃষ্টি হয়ে যায়। ওই সময় সংশ্লিষ্ট ব্যাংকগুলোর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার কথা বলা হলেও এখন পর্যন্ত এনিয়ে দুদক কিছুই করেনি।
আর এখন দুর্নীতিবাজ এই দম্পতিকে খুঁজেই পাচ্ছে না দুদক। রোববার দুদক কার্যালয়ে নিজ দপ্তরে দুদক সচিব বলেছেন, শোনা যাচ্ছে তাঁরা দেশ ছেড়ে গেছেন। কিন্তু এর সপক্ষে আমাদের কাছে কোনো তথ্য নেই। আবজাল দম্পতির দেশত্যাগের ওপর নিষেধাজ্ঞা থাকা সত্ত্বেও তাঁরা দেশ ত্যাগ করেছেন কি না, সেটা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
তবে একাধিক সূত্রে জানা গেছে, আবজাল দম্পতি অতি গোপনে দেশত্যাগ করেছেন। প্রথমে তারা সীমান্ত দিয়ে ভারত ঢুকেছেন। ওইখান থেকে তারা কানাডা কিংবা যুক্তরাষ্ট্রে যেতে পারে। আর এক্ষেত্রে তাদেরকে সার্বিক সোগযোগিতা করেছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের উর্ধ্বতন কয়েকজন কর্মকর্তা। তাদের নির্দেশেই বিজিবি আবজাল দম্পতিকে সীমান্তে আটক করেনি।
আরেকটি অসমর্থিত সূত্রে জানা গেছে, আবজাল দম্পতির দেশত্যাগে সাবেক স্বাস্থ্যমন্ত্রী নাসিমেরও হাত আছে। কারণ, নাসিমের ঘনিষ্ঠজনদের সঙ্গে আবজাল দম্পতির ভাল সম্পর্ক রয়েছে।
এদিকে, রাজনীতিক বিশ্লেষকসহ সচেতন মানুষও মনে করছেন, সরকারের সহযোগিতা ছাড়া এত বড় দুর্নীতিবাজের পক্ষে দেশত্যাগ করা সম্ভব না। হয়তো ক্ষমতাসীন দলের উচ্চপর্যায়ের কেউ ফেঁসে যেতে পারে সেই কারণে আবজাল দম্পতিকে দেশত্যাগে সহযোগিতা করেছেন। কেউ বলছেন স্বয়ং দুদকের কর্মকর্তারাই কোটি কোটি টাকার বিনিময়ে আফজালকে দেশ ছাড়তে সহায়তা করেছেন।