অ্যানালাইসিস বিডি ডেস্ক
বাংলাদেশে সেবাখাতের যেসব প্রতিষ্ঠানগুলো অনিয়ম-দুর্নীতিতে জর্জড়িত, এদের মধ্যে অন্যতম হলো ঢাকা ওয়াসা। প্রতিষ্ঠানটির পদে পদে চলে ঘুষ বাণিজ্য। গত বুধবার টিআইবির পক্ষ থেকে ‘ঢাকা ওয়াসা: সুশাসনের চ্যালেঞ্জ ও উত্তরণের উপায়’ শীর্ষক এক গবেষণা প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়েছে। প্রতিবেদনে ওয়াসার অনিয়ম ও দুর্নীতি সম্পর্কে বলা হয়েছে, সেবাগ্রহীতাদের ৮৬.২ ভাগ ওয়াসার কর্মচারী এবং ১৫.৮ ভাগ দালালকে ঘুষ দিয়ে থাকেন। এর মধ্যে পানির সংযোগ গ্রহণে ২০০ থেকে ৩০০০০ টাকা, পয়ঃনিষ্কাশন লাইনের প্রতিবন্ধকতা অপসারণে ৩০০ থেকে ৪৫০০ টাকা, গাড়িতে করে জরুরি পানি সরবরাহ করার ক্ষেত্রে ২০০ থেকে ১৫০০ টাকা, মিটার ক্রয়/পরিবর্তন করতে ১০০০ থেকে ১৫০০০ টাকা মিটার রিডিং ও বিল-সংক্রান্ত বিষয়ে ৫০ থেকে ৩০০০ টাকা এবং গভীর নলকূপ স্থাপনে এক লাখ থেকে দুই লাখ টাকা পর্যন্ত ঘুষ গ্রহণ করা হয়।
টিআইবির এই প্রতিবেদনের প্রতিবাদে শনিবার পাল্টা সংবাদ সম্মেলন করেছে ঢাকা ওয়াসা। সংবাদ সম্মেলনে ঢাকা ওয়াসার ব্যবস্থাপনা পরিচালক প্রকৌশলী তাকসিম এ খান টিআইবির প্রতিবেদনকে নিম্নমানের উল্লেখ করে এটাকে তিনি প্রত্যাখ্যান করেছেন। এছাড়া নগরবাসীকে তিনি সুপেয় পানি খাওয়াচ্ছেন বলেও দাবি করেন।
এখানে লক্ষণীয় বিষয় হলো- অনিয়ম দুর্নীতিতে জর্জড়িত এই প্রতিষ্ঠানটির সংবাদ সম্মেলনে দুর্নীতিবাজ এমডি তাকসিম এ খানের পাশে বসা ছিলেন আওয়ামী পন্থী সাংবাদিক নেতা শাবান মাহমুদ।
শনিবার দুপুরের পর থেকেই সাংবাদিক সমাজসহ রাজনৈতিক অঙ্গনেও ওয়াসার সংবাদ সম্মেলনে শাবান মাহমুদের উপস্থিতি নিয়ে বিভিন্ন ধরণের গুঞ্জন-কানাঘুষা চলছে। এছাড়া সিনিয়র-জুনিয়র সাংবাদিকরাও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে শাবান মাহমুদের ওপর চরম ক্ষোভ প্রকাশ করছেন।
দেখা যায়- শাবান মাহমুদ প্রতিদিনই টেলিভিশন টকশোতে সরকারের দুর্নীতি-লুট্পাট, খুন-হত্যার পক্ষে সাফাই গান। শাবান মাহমুদ একজন সাংবাদিক নেতা হলেও অনেকে তাকে আওয়ামী লীগের কর্মী বলেই মনে করেন। কারণ, আওয়ামী লীগ নেতাদের মতো শাবান মাহমুদও বঙ্গবন্ধু আর শেখ হাসিনার প্রশংসা করা ছাড়া বক্তব্য শুরু করেন না। সহজে বলা যায়- নীতি-নৈতিকতা ও পেশাদারিত্ব বিসর্জন দিয়ে শাবান মাহমুদ বর্তমানে শেখ হাসিনা অনুগত চাটুকারে পরিণত হয়েছেন।
অনেকেই মনে করছেন, ওয়াসা থেকে মোটা অংকের টাকা খেয়ে দুর্নীতিবাজদের পক্ষে অবস্থান নিয়েছেন শাবান মাহমুদ। ওয়াসা একটি সরকারি প্রতিষ্ঠান আর শাবান মাহমুদ একজন সাংবাদিক নেতা। এই দুর্নীতিবাজদের সঙ্গে তার সম্পর্ক কি? নিশ্চয় তিনি মোটা অংকের টাকা খেয়ে ওয়াসার এমডির পাশে বসেছেন।