অ্যানালাইসিস বিডি ডেস্ক
সংসদ সদস্য হিসেবে শপথ নেননি বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। শপথ না নেয়ায় বিধি অনুযায়ী মঙ্গলবার রাতে স্পীকার শিরিন শারমীন চৌধুরী মির্জা ফখরুলের আসন বগুড়া-৬ শূন্য ঘোষণা করেছেন। এখন নিয়ম অনুযায়ী নির্বাচন কমিশন ওই আসনের উপনির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করবে।
কী কারণে মির্জা ফখরুল শপথ গ্রহণ করেন নি? সেটা তিনি মঙ্গলবার একটি অনুষ্ঠানে জানিয়েছেন। তিনি বলেছেন- দলের সিদ্ধান্তেই তিনি শপথ নেননি। এটা তাদের রাজনৈতিক কৌশল। তবে, কৌশলের বিষয়ে বিস্তারিত আর কিছু বলেননি।
তবে, মির্জা ফখরুল বিষয়টি পরিষ্কার না করলেও একাধিক সূত্রে জানা গেছে, তার শপথ না নেয়ার পেছনে দুইটি কারণ থাকতে পারে।
প্রথম কারণ, বিএনপির স্থায়ী কমিটির বৈঠকের চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত ছিল দলটির কোনো এমপি শপথ নেবেন না। কিন্তু সরকারের কঠিন চাপের কারণে ৪ জন এমপি শপথ নিতে বাধ্য হয়েছেন। সরকারের বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার লোকেরা বাড়ি বাড়ি গিয়ে শপথ নিতে তাদের ওপর প্রচন্ড চাপ সৃষ্টি করেছিলেন। এমনিক ব্রাহ্মণবাড়িয়ার এমপি উকিল আব্দুস সাত্তারকে একটি সভা থেকে সাদা পোশাকের পুলিশ উঠিয়ে নিতে চাইছিলেন। সরকারের অতিমাত্রার চাপ সহ্য করতে না পেরে তারা শপথ নিয়েছেন।
এদিকে, ৪ এমপির শপথের পর বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভীও জরুরি সংবাদ সম্মেলন করে দাবি করেছিলেন যে, শপথ নিতে সরকার জবরধস্তি করেছে। যখন তাদেরকে আর আটকানোই গেল না তখন নিরুপায় হয়ে তারেক রহমান এটাকে দলীয় সিদ্ধান্ত হিসেবেই ঘোষণা দিতে ফখরুলকে নির্দেশ দিয়েছেন। এই কারণে শপথ নেননি মির্জা ফখরুল।
এছাড়া বিএনপির সিনিয়র নেতারাও এখন বলছেন যে, শপথের বিষয়ে দলীয় কোনো সিদ্ধান্ত ছিল না। যার কারণে ফখরুলের সংবাদ সম্মেলনেও তারা কেউ যান নি।
দ্বিতীয় কারণ হলো- বগুড়া-৬ আসনটি মূলত দলের চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার। মির্জা ফখরুলের ধারণা খুব শিগগিরই খালেদা জিয়া জামিনে মুক্তি পাবেন। এরপর ওই আসনে উপনির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করলে বিএনপির পক্ষ থেকে আবার খালেদা জিয়াকে সেখানে প্রার্থী করার চেষ্টা করা হবে। বিএনপির ৫ এমপি যেহেতু সংসদে যোগ দিয়েছেন সেহেতু খালেদা জিয়াও বিজয়ী হয়ে সংসদে যাবেন। আর খালেদা জিয়া সংসদে গেলে তখন নির্বাচন নিয়ে সরকার আর প্রশ্নের সম্মুখীন হবে না। সেজন্য সরকারও খালেদা জিয়ার নির্বাচন করা নিয়ে আর বেশি আপত্তি করবে না। তাই, মির্জা ফখরুলের শপথ না নেয়ার এটাও একটা কারণ হতে পারে।
তবে দ্বিতীয় কারণটি সঠিক হয়ে থাকলেও তা আপোষহীন খালেদা জিয়া কতটা আদৌ নির্বাচনে দাঁড়িয়ে এই সরকারের সঙ্গে আপোষ করবেন কিনা তা নিয়ে ব্যাপক সংশয় রয়েছে। যদিও রাজনীতির শেষ বলে কিছু নেই।