অ্যানালাইসিস বিডি ডেস্ক
দেশে খুন, হত্যা, সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড, বোমা হামলা, জঙ্গি তৎপরতা, খাদ্যে ভেজাল, দুর্নীতি, ধর্ষণ, বাসে আগুন দেয়াসহ যা-ই ঘটুক এসবের জন্য প্রথম দায়ী বিএনপি-জামায়াত। ঘটনার তদন্ত পরের বিষয়। প্রথমে বিএনপি-জামায়াতকে দায়ী করে আওয়ামী লীগ নেতাদের একটা বক্তব্য দিতে হয়। এটা এখন তাদের দলীয় কর্মকাণ্ডের অন্যতম দিক। আর যেসব অপরাধ কর্মকাণ্ডে প্রকাশ্যে আওয়ামী লীগ নেতারা জড়িত থাকে, সেখানে বলা হয় বিএনপি-জামায়াত দলের ভেতর অনুপ্রবেশ করে এসব ঘটাচ্ছে। মোট কথা সকল অপকর্মের সঙ্গে বিএনপি-জামায়াতকে জড়ানো আওয়ামী লীগের দর্শনে পরিণত হয়ে গেছে।
বাংলাদেশে এখন সবচেয়ে আলোচিত-সমালোচিত বিষয় হচ্ছে খাদ্যে ভেজাল। এই ভেজালের মাত্রা এখন সকল সীমা অতিক্রম করেছে। যার কারণে দেশের সর্বোচ্চ আদালত সরকারের ওপর ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেছেন, খাদ্যে ভেজালের কারণে এখন এদেশে বসবাস করা অনিরাপদ হয়ে উঠেছে। দীর্ঘদিন ধরে অভিযোগ উঠার পরও খাদ্য পণ্যে ভেজাল বন্ধ করতে না পারায় সরকারকে তিরস্কার করেছে হাইকোর্ট।
কিন্তু, খাদ্যে পণ্যে ভেজাল বন্ধ করতে ব্যর্থ হয়ে সরকারি দলের নেতারা এখন এসব অপকর্মের দায় চাপাচ্ছেন বিএনপি-জামায়াতের ওপর।
আওয়ামী লীগ নেতা ও সাবেক স্বাস্থ্যমন্ত্রী নাসিম বিএনপি-জামায়াতকে উদ্দেশ্য করে সোমবার একটি ইফতার মাহফিলে বলেছেন, একটি রাজনৈতিক দল আছে যারা মানুষকে আগুন দিয়ে পুড়িয়ে হত্যা করে। তাদের দ্বারাই এই নরঘাতক ভেজাল ব্যবসা করা সম্ভব।
নাসিমের দেয়া বক্তব্য অনুযায়ী, যেসব কোম্পানির পণ্যে ভেজাল ধরা পড়েছে এবং যেসব ব্যবসায়ীরা খাদ্যে ভেজাল করছে তারা সবাই বিএনপি-জামায়াতের লোক।
এখন প্রশ্ন, এসব কোম্পানি ও ব্যবসায়ীরাতো দেশে দীর্ঘদিন ধরেই এসব অপকর্ম করে যাচ্ছে। আর বিগত ১১ বছর যাবত দেশ শাসন করছে আওয়ামী লীগ। সরকার বিএনপি-জামায়াতের এসব ব্যবসায়ীদেরকে ধরছে না কেন? এখনো তাদের ব্যবসা বাণিজ্য বন্ধ করে দেয়া হচ্ছে না কেন?
তারপর, পণ্যের মান যাছাই যারা করে তারাও কি বিএনপি-জামায়াতের লোক? বিএসটিআই এর পরিচালক থেকে শুরু করে বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তারা কি বিএনপি-জামায়াতের লোক? খোঁজ নিয়ে জানা যায়, সরকারি অফিসগুলো এখন আওয়ামী লীগের নেতাকর্মী দিয়ে ভরপুর। বিএনপি-জামায়াতের লোকদেরকে চাকরিচ্যুত বা ওএসডি করে রাখা হয়েছে। সরকারি প্রতিটি দপ্তরে সরকার তাদের দলীয় লোকদেরকে বসিয়েছে। এরপরও বিএনপি-জামায়াতের ভেজাল ব্যবসায়ীরা ছাড় পায় কি করে?
তারপর, এসব ব্যবসায়ীরা যদি বিএনপি-জামায়াতের লোক হয় তাহলে তাদের নাম প্রকাশ করতে সরকার বার বার গড়িমসি করছে কেন?
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সরকারের উচ্চ পর্যায়ের লোকজন এসব ভেজালের সঙ্গে জড়িত। তাদেরকে ম্যানেজ করেই অসাধু ব্যবসায়ীরা এসব অপকর্ম করে যাচ্ছে।
বিশিষ্টজনেরাও বলছেন, হাইকোর্ট থেকে ভেজাল বন্ধে বার বার সরকারকে তাগাদা দেয়ার পরও ভেজাল বন্ধ করতে পারেনি সরকার। এখানে নিশ্চয় সরকারের দুর্বলতা আছে। ব্যবসায়ীদের ক্ষমতাতো আর সরকারের চেয়ে বেশি নয়। এখানে সরকারের লোকজন ও সরকারি কর্মকর্তারা জড়িত আছে। আওয়ামী লীগ নেতারা এখন দায় এড়ানোর জন্য বিএনপি-জামায়াতের ওপর দোষ চাপাচ্ছে।