অ্যানালাইসিস বিডি ডেস্ক
ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের বিগত ১১ বছরের শাসনামলে সরকারের অন্যায় অপকর্মের সমালোচনা করার কারণে বিরোধী দলের নেতাকর্মীসহ অনেক বিশিষ্ট ব্যক্তির বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহ মামলা হয়েছে। এসব মামলায় অনেকেই জেল খেটেছেন। কিন্তু একটা পর্যায়ে দেখা গেছে রাষ্ট্রদ্রোহীতার কথিত অভিযোগগুলো মিথ্যা ও ভিত্তিহীন ছিল। আবার কথিত মানহানি ও আদালত অবমাননার মামলায়ও বিরোধী দলের নেতাসহ অনেক বিশিষ্ট ব্যক্তিকে সরকার জেল খাটিয়েছে। আরও সহজভাবে বলা যায়-কোনো প্রকার আইন কানুনের তোয়াক্কা না করে ক্ষমতার জোরে সরকার যখন যাকে খুশী তার বিরুদ্ধে ভুয়া মামলা দিয়ে কারারুদ্ধ করে রাজনৈতিক প্রতিহিংসা চরিতার্থ করে যাচ্ছে।
কিন্তু, যারা প্রকৃতি অর্থে এদেশ, দেশের স্বাধীনতা সার্বভৌম ও জনগণের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছে। দেশের ভেতর ধর্মীয় সংঘাত লাগানোর চেষ্টা করছে। পশ্চিমাদের কাছে গিয়ে এদেশের মুসলমানদের বিরুদ্ধে অসত্য, মিথ্যা ও ভুয়া অভিযোগ দিয়ে তাদেরকে বাংলাদেশের ভূখন্ড দখলের পরিস্থিতি সৃষ্টি করছে সরকার তাদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নিচ্ছে না।
হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের নেত্রী প্রিয়া সাহা সম্প্রতি মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের কাছে গিয়ে বাংলাদেশে সংখ্যালঘু নির্যাতনের যে ভিত্তিহীন অভিযোগ করেছেন তা দেশের বিরুদ্ধে এক ভয়াবহ চক্রান্ত। যুক্তরাষ্ট্র দীর্ঘদিন ধরেই সেন্টমার্টিনে একটি সেনা ঘাটি করার জন্য বিভিন্নভাবে চেষ্টা করে আসছে। বাংলাদেশে ঢুকতে তারা বিভিন্ন অজুহাত খুজতেছে। এখন প্রিয়া সাহারা পশ্চিমাদের সেই চক্রান্ত বাস্তবায়নে সহযোগী হয়ে কাজ করছেন।
কিন্তু লক্ষণীয় বিষয় হলো-প্রিয়া সাহা এত বড় একটি অপরাধ করার পরও বিশ্বনেতার দাবিদার শেখ হাসিনা চুপ হয়ে গেলেন। রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে চক্রান্তকারী এই হিন্দু মহিলার শাস্তির দাবিতে দেশবাসী ক্ষোভে ফুসলেও কবরের নীরবতা বিরাজ করছে সরকারি মহলে। কয়েকজন প্রিয়া সাহার বিরুদ্ধে মামলার ঘোষণা দিলেও এতে বাধা দিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আর সরকারের আইনমন্ত্রী আনিসুল হক তো বললেন-প্রিয়া সাহার অভিযোগ কোনো বড় ঘটনা নয়। এটা নিয়ে এত চিন্তার কোনো কারণ নেই।
এছাড়া, পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. আব্দুল মোমে তো বুধবার আরও আজিব কথা শুনালেন। প্রিয়া সাহাকে শাস্তিতো দেবেন না বরং উল্টো তাকে নিরাপত্তা দেয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে সরকার।
সংবাদ সম্মেলনে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছেন, প্রিয়া সাহা মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে সাক্ষাতের পরিপ্রেক্ষিতে বাংলাদেশে এলে তাকে গ্রেফতার বা মামলার পরিকল্পনা সরকারের রয়েছে কিনা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের অ্যাসিস্ট্যান্ট সেক্রেটারি অ্যালিস ওয়েলস আমার কাছে জানতে চেয়েছিলেন। আমি তাকে বলেছি, প্রিয়া সাহাকে গ্রেফতারের পরিকল্পনা আমাদের নেই। আমরা তার বিরুদ্ধে মামলাও করতে চাই না। আমরা তাকে নিরাপত্তা দিতেও প্রস্তুত।
পররাষ্ট্রমন্ত্রীর এ বক্তব্য গণমাধ্যমে প্রকাশিত হওয়ার পরই রাজনৈতিক অঙ্গনসহ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সমালোচনার ঝড় উঠেছে। বিভিন্ন নেতিবাচক ভাষায় মানুষ তাদের ক্ষোভ প্রকাশ করছে।
অনেকেই বলছেন, প্রিয়া সাহা এদেশের একজন নাগরিক। তার অপরাধ সীমাহীন। কিন্তু, সরকার তার বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নিয়ে তাকে নিরাপত্তার দেয়ার ঘোষণা দিয়েছে! এর মাধ্যমে শেখ হাসিনা এই প্রিয়া সাহার কাছে মাথা নত করেছে। তার কাছে তিনি নতি স্বীকার করেছে। আর প্রিয়া সাহা দেখাই দিল যে তিনি রাষ্ট্রের চেয়েও আরও বেশি ক্ষমতাধর।