অ্যানালাইসিস বিডি ডেস্ক
শেখ হাসিনার রাজনৈতিক প্রতিহিংসার শিকার হয়ে কারাবন্দী আছেন আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন ইসলামি চিন্তাবিদ ও জামায়াতে ইসলামীর শীর্ষনেতা মাওলানা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদী। ভারতের ইশারায় কথিত যুদ্ধাপরাধ তথা বায়ুবীয় খুন-ধর্ষণের মিথ্যা ও ভিত্তিহীন অভিযোগে সাজানো ট্রাইব্যুনাল দিয়ে আমৃত্যু কারাদন্ড দিয়েছেন বিশিষ্ট এই আলেমেদ্বীনকে। সাধারণ মানুষতো দূরের কথা এমনকি আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরাও বিশ্বাস করে না যে মাওলানা সাঈদী যুদ্ধাপরাধ করেছেন।
আর মাওলানা সাঈদী যে কোনো অপরাধ করেন নাই সেটাতো বিচার চলাকালীন অবস্থায়ই প্রমাণ হয়ে গেছে। কথিত দেল্লা শিকদারকে মাওলানা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদী বানাতে গিয়ে সরকার যা করেছে তা বিশ্বে নজিরবিহীন। বিশেষ করে স্কাইপি কেলেংকারি ও সাঈদীর পক্ষের সাক্ষী সুখরঞ্জন বালীর অপহরণের ঘটনা শুধু বাংলাদেশ নয়, আন্তর্জাতিক মহলকে পর্যন্ত অবাক করেছে।
স্কাইপি কেলেংকারীতে দেশত্যাগী বিচারপতি সিনহা বাবু বিচারপতি নিজামুল হক নাসিমকে সোজা বলেছেন-ফাঁসির রায় দিয়ে দেন। আপনাকে আপিল বিভাগে নিয়ে আসবো। বিচারপতি নাসিমও তাই করেছেন। কিসের সাক্ষী? কিসের প্রমাণ? আপিল বিভাগে যাওয়ার জন্য পাগল বিচারপতি নাসিম কোনো প্রকার আইন কানুনের তোয়াক্কা না করেই একটা রায় দিয়ে দিলেন।
তারপর আরও এক মহা কেলেঙ্কারির ঘটনা ছিল আদালতের গেট থেকে সাঈদীর সাক্ষী সুখরঞ্জন বালীকে অপহরণ করা। ভারত জানতো সুখরঞ্জন বালী আদালতে এসে সাক্ষী দিলেই মাওলানা সাঈদী নির্দোষ প্রমাণিত হবে। তখন তার বিরুদ্ধে আর ফাঁসির রায় দেয়া যাবে না। দাদার নির্দেশ, সুখরঞ্জন বালীকে অপহরণ করে আমার দেশে পাঠিয়ে দাও। যার ছত্রছায়ায় ক্ষমতায় টিকে আছে সেই দাদার নির্দেশতো আর লঙ্ঘন করতে পারেন না। দাদার কথামতো সাঈদীর সাক্ষী বালীকে আদালত থেকে অপহরণ করে নেয়া হলো। শেখ হাসিনার এসব চক্রান্ত-ষড়যন্ত্র ছিল শুধু সাঈদী নামের এই মানুষটিকে দুনিয়া থেকে সরিয়ে দেয়া।
অবশেষে শেখ হাসিনার সাজানো ট্রাইব্যুনাল ২০১৩ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি সম্পূর্ণ অন্যায়ভাবে সাঈদীকে মৃত্যুদণ্ড প্রদান করে রায় দেয়। পরবর্তীতে রায়ের পরিণাম অবশ্যই প্রত্যক্ষ করেছে শেখ হাসিনা। শেখ হাসিনা দেখেছে যে একজন সাঈদীর জন্য কত মানুষ জীবন দিতে পারে। পরে পরিস্থিতি বেগতিক দেখে আপিলে মৃত্যুদণ্ডের আদেশ বাতিল করে তাকে আমৃত্যু কারাদণ্ড দেয়।
বয়োবৃদ্ধ এই আলেমেদ্বীন এখন কারাগারের অন্ধকার কক্ষে জীবন যাপন করছেন। কিন্তু, আমৃত্যু কারাদণ্ড দিয়েও অস্বস্তি যেন পিছু ছাড়ছে না শেখ হাসিনাকে। মাওলানা সাঈদী এখনো বেচে আছেন এটা যেন শেখ হাসিনা কোনোভাবেই মেনে নিতে পারছে না। তাই, কারাবন্দী মাওলানা সাঈদীর বিরুদ্ধে আবারো চক্রান্তে মেতে উঠেছেন তিনি। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ফারুক হত্যা মামলায় তাকে আবার ফাঁসানোর চেষ্টা করছেন।
২০১০ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে অভ্যন্তরীণ কোন্দলে ছাত্রলীগ তাদের নিজেদের কর্মী ফারুককে হত্যা করে ম্যানহোলে ফেলে দেয়। পরের দিন তার লাশ উদ্ধার করে এই হত্যাকাণ্ডের দায়ভার চাপায় ছাত্রশিবিরের ওপর। এটাকে ইস্যু বানিয়ে সারাদেশে জামায়াত-শিবিরের বিরুদ্ধে চিরুনি অভিযান চালায় সরকার। বিনা অপরাধে সারাদেশে জামায়াত-শিবিরের হাজার হাজার নেতাকর্মীকে গ্রেফতার করা হয়।
অন্যায়ভাবে গ্রেফতার করা হয় রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের তৎকালীন শিবিরের সভাপতি শামসুল আলম গোলাপকে।
তার ওপর অমানবিক নির্যাতন চালিয়ে জামায়াতের শীর্ষনেতাদের হুকুমে ফারুককে হত্যা করা হয়েছে বলে জোরপূর্বক স্বীকারোক্তি নেয়া হয়। কথিত স্বীকারোক্তির এই ভিডিও ছড়িয়ে দিয়ে বলা হয়েছিল যে, নিজামী, মুজাহিদ ও সাঈদীর নির্দেশে শিবিরের নেতাকর্মীরা ফারুককে হত্যা করেছে।
কথিত যুদ্ধাপরাধের অভিযোগে মাওলানা মতিউর রহমান নিজামী ও আলী আহসান মুহাম্মদ মুজাহিদকে নির্মভাবে হত্যা করেছে শেখ হাসিনা। সেই কথিত মামলায় এখন মাওলানা সাইদীকে ফাঁসানোর চেষ্টা করা হচ্ছে। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ভারতের চাপেই শেখ হাসিনা এসব করছে। তবে, মাওলানা সাঈদীকে নিয়ে নতুন করে আবার কোনো ষড়যন্ত্র হলে পরিস্থিতি কি হবে সেটা নিশ্চয় অবগত আছেন শেখ হাসিনা।