অ্যানালাইসিস বিডি ডেস্ক
উন্নয়ন প্রকল্পের টাকা ভাগ-বাটোয়ারা সহ বিভিন্ন স্বেচ্ছাচারিতার কারনে করে পদ হারালেন ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সভাপতি রেজওয়ানুল হক চৌধুরী শোভন ও সাধারণ সম্পাদক গোলাম রাব্বানী। এই টাকা লেনদেনের সঙ্গে সরাসরি জড়িত জাবি ভিসি অধ্যাপক ফারজানা ইসলাম। তিনি অভিযোগ অস্বীকার করলেও গোলাম রাব্বানী ও জাবি ছাত্রলীগ নেতা সাদ্দাম হোসেনের কথোপকথন ফাঁসের মাধ্যমে প্রমাণিত হয়েছে ভিসি ফারজানা এই কমিশন কেলেংকারির সঙ্গে জড়িত।
প্রধানমন্ত্রীর কাছে লেখা চিঠিতে গোলাম রাব্বানী উল্লেখ করেছিল, উন্নয়ন প্রকল্প থেকে মোটা অংকের টাকা নিয়েছে ভিসি ফারজানার পরিবারের সদস্যরা। এটা চাপা দিতে তারা গত ঈদুল আযহার আগে ভিসি ফারজানা ইসলাম জাবি ছাত্রলীগকে ১ কোটি ৬০ লাখ টাকা দিয়েছে। এরপর ভিসি ফারজানা গোলাম রাব্বানীর অভিযোগ অস্বীকার করে বলেছেন, আমার পরিবারের ভাবমূর্তি নষ্ট করতে গোলাম রাব্বানী মিথ্যাচার করছে।
কিন্তু, রোববার চাঁদার টাকা লেনদেন নিয়ে গোলাম রাব্বানী ও জাবি ছাত্রলীগ নেতার ফোনালাপ ফাঁস হওয়ার এনিয়ে তুমুল হৈ চৈ পড়ে যায়। তাদের ফোনালাপে বেরিয়ে আসে ভিসি ফারজানা ছাত্রলীগকে এই টাকা কোথায়, কখন ও কার কাছে দিয়েছে। যদিও ভিসি ফারজানা তার বিরুদ্ধে উঠা অভিযোগকে বারবার অস্বীকার করে আসছেন।
কিন্তু লক্ষণীয় বিষয় হলো-অডিও ফাঁস হওয়ায় ছাত্রলীগ নেতা হামজা রহমান অন্তরের ওপর প্রচন্ড ক্ষুব্ধ হয়েছেন জাবি প্রক্টর সাজেদুর রহমান। এমনকি অডিও ফাঁস করায় ছাত্রলীগ নেতাকে তিনি প্রচ্ছন্ন হুমকিও দিয়েছেন। এটা থেকেও প্রমাণিত হয় জাবির উন্নয়ন প্রকল্পের টাকা নিয়ে কমিশন বাণিজ্য হয়েছে। আর ভিসিকে রক্ষায় তার পক্ষে অবস্থান নিয়েছেন প্রক্টর সাজেদুর।
এদিকে, বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্নয়ন প্রকল্পের টাকা ভাগ-বাটোয়ারা করে নেয়ার ঘটনায় ভিসি ফারজানার ওপর প্রচন্ড ক্ষুব্ধ হয়েছে শিক্ষামন্ত্রণালয়। বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন তাদের প্রাথমিক তদন্তে ঘটনার সত্যতা পেয়েছে। তার এখন একটি চার সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করবে। চূড়ান্ত তদন্তের পর ভিসি ফারজানার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবে কমিশন।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, প্রথম দিকে গোলাম রাব্বানীর অভিযোগ অস্বীকার করলেও ফোনালাপ ফাঁস হওয়ার পর চরম সংকটে পড়েছে ভিসি ফারজানা। ছাত্রলীগকে কমিশন দেয়ার ঘটনায় শুধু শিক্ষামন্ত্রণালয়ই নয়, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও এখন ফারজানার ওপর ক্ষুব্ধ। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় মনে করছে, ফারজানার পরিবারের বিরুদ্ধে কমিশন বাণিজ্যের যে অভিযোগ উঠেছে তা সত্য হওয়ার সম্ভাবনাই বেশি।
জানা গেছে, ভিসি ফারজানা তার ঘনিষ্টজনদের মাধ্যমে জেনেছেন অভিযোগ প্রমাণিত হলেই তাকে ভিসি পদ হারাতে হবে। এনিয়ে তিনি এখন পদ রক্ষায় বিভিন্ন মহলের কাছে দৌড়ঝাপ দিচ্ছেন।
সূূত্র বলছে, প্রথম দিকে ছাত্রলীগের ওপর দোষ চাপালেও এখন নিজেকে রক্ষার জন্য ভিসি ফারজানা আবার জাবি ছাত্রলীগকে ম্যানেজ করার চেষ্টা করছেন। জানা গেছে, এখানেও তিনি জাবি ছাত্রলীগের কয়েকজন নেতাকে মোটা অংকের টাকা দিয়েছেন। ছাত্রলীগ নেতারা শুধু বলবে যে ভিসি ম্যাম আমাদেরকে ঈদ সালামি হিসেবে এই টাকা দিয়েছেন। এটা নিয়ে কিছু লোক বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছে।