অ্যানালাইসিস বিডি ডেস্ক
নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাওয়া নিজ দলের চাঁদাবাজ, টেন্ডারবাজ, খুনি, সন্ত্রাসী, ধর্ষক, চোরাকারবারি, মাদকাসক্ত ও মাদক ব্যবসায়ীদেরকে নিয়ন্ত্রণের মধ্যে আনতে রাজধানীসহ সারাদেশে শুদ্ধি অভিযান চালাচ্ছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এখন পর্যন্ত যে কয়টা জায়গায় অভিযান চালানো হয়েছে সবগুলোই হলো মদ-জুয়ার আসর। অথচ, ক্লাবের জুয়ার আসরে চালানো এই অভিযানকে দুর্নীতি বিরোধী অভিযান হিসেবে প্রচার করছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরসহ দলটির নেতারা।
ইতিমধ্যে শেখ হাসিনার কথিত দুর্নীতি বিরোধী অভিযান নিয়ে বিভিন্ন শ্রেণি পেশার মানুষের মধ্যে ব্যাপক প্রশ্ন তৈরী হয়েছে। হঠাৎ শেখ হাসিনার এই অভিযানের উদ্দেশ্য নিয়েও জনমনে সন্দেহ সংশয় দেখা দিয়েছে। আর মানুষের মনে সন্দেহ সৃষ্টি হওয়ার যৌক্তিক কারণও আছে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।
দেশের অর্থনীতি এখন অতীতের যেকোনো সময়ের চেয়ে খারাপ। দেশের ব্যাংকগুলোর অবস্থা খুবই সংকটপূর্ণ। টাকা নিয়ে ব্যাংকগুলোকে সরকার ফোকলা করে দিয়েছে। শেয়ারবাজার থেকে কিছু দিন পর পর হাতিয়ে নিচ্ছে লাখ লাখ কোটি টাকা। পুঁজি হারিয়ে পথে বসেছে বিনিযোগকারীরা। এরপর রাষ্ট্রের বিভিন্ন সেক্টরে এখন লুটপাটের মহোৎসব চলছে। সাম্প্রতিক সময়ে রুপপুরের বালিশ, ফরিদপুর মেডিকেলের পর্দা, খাগড়াছড়ির ঢেউ টিন, মেডিকেল কলেজের বই, ট্রেনের কর্মচারীর বেতন, প্রশিক্ষণের নামে বিদেশ সফর করে রাষ্ট্রীয় অর্থ লুটপাটের মহোৎসব চলছে।
এছাড়া, কথিত উন্নয়ন প্রকল্পের নামে সরকার সারাদেশে হাজার হাজার কোটি টাকার উন্নয়ন প্রকল্পের সাইন বোর্ড টানিয়েছে। প্রতিটি প্রকল্প থেকেই সরকারের মন্ত্রী-এমপি ও প্রশাসনের লোকজন লুটে নিচ্ছে শত শত কোটি টাকা। জনগণ হতাশ হয়ে বলছেন, শেখ হাসিনা এখন পুরো দেশটাকে উন্নয়নের নামে লুটপাটের এক লঙ্করখানায় পরিণত করেছে। যে যেভাবে পারে সেভাবেই লুটে নিচ্ছে। অথচ, এসব দুর্নীতিবাজরা একেবারেই ধরা ছোয়ার বাইরে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, যুবলীগ-ছাত্রলীগ, স্বেচ্ছাসেবকলীগ, কৃষকলীগ ও আওয়ামী লীগের একটি অংশ এখন শেখ হাসিনার নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গেছে। তারা এতই বেপরোয়া হয়ে উঠেছে যে, তিনি কোনোভাবেই আর তাদেরকে নিয়ন্ত্রণে আনতে পারছেন না। এসব সন্ত্রাসী, চাদাবাজ, টেন্ডারবাজ, জুয়ারী আর মাদক ব্যবসায়ীদেরকে নিয়ন্ত্রণে আনতেই মূলত দলের ভেতর শুদ্ধি অভিযান চালাচ্ছেন।
বিশ্লেষকরা বলছেন, প্রভাবশালী দুর্নীতিবাজদের ধরা শেখ হাসিনার উদ্দেশ্য নয়। এর বাস্তব উদাহরণ হলো-হুইপ সামসুল হক চৌধুরী। জুয়ার আসর থেকে হুইপের বিরুদ্ধে শত শত কোটি টাকা নেয়ার অভিযোগ তোলায় একজন পুলিশ কর্মকর্তাকে বরখাস্ত করেছে সরকার। এর মাধ্যমেই প্রমাণ হয়-প্রভাবশালী দুর্নীতিবাজদের ধরা হাসিনার উদ্দেশ্য নয়।