• যোগাযোগ
সোমবার, মার্চ ২৭, ২০২৩
Analysis BD
  • মূলপাতা
  • বিশেষ অ্যানালাইসিস
  • রাজনীতি
  • জাতীয়
  • আন্তর্জাতিক
  • মতামত
  • কলাম
  • ব্লগ থেকে
No Result
View All Result
  • মূলপাতা
  • বিশেষ অ্যানালাইসিস
  • রাজনীতি
  • জাতীয়
  • আন্তর্জাতিক
  • মতামত
  • কলাম
  • ব্লগ থেকে
No Result
View All Result
Analysis BD
No Result
View All Result
Home Home Post

এবার গায়েবি কেনাকাটায় চ্যাম্পিয়ন ত্রাণ মন্ত্রণালয়!

অক্টোবর ১, ২০১৯
in Home Post, জাতীয়
Share on FacebookShare on Twitter

শুধু বড় বড় প্রকল্প নয়, মন্ত্রণালয়ের অভ্যন্তরীণ কেনাকাটায়ও ভয়াবহ অনিয়ম-দুর্নীতি ভর করেছে। পণ্য সরবরাহ না করেই ভুয়া বিল-ভাউচারে টাকা তুলে নেয়া হচ্ছে। আবার যেসব পণ্য কেনা হয়েছে তার দাম হাঁকা হয়েছে বাজার মূল্যের চেয়ে বহুগুণ বেশি।

প্রতিমন্ত্রীর দফতরে পানি খাওয়ার জন্য ১২শ’ টাকা করে সিরামিকের ৩টি গ্লাস কেনার বিল করা হয়েছে ৩৬শ’ টাকা। ১০ পিস তোয়ালের দাম ধরা হয়েছে ২৪ হাজার ৮শ’ টাকা এবং ফুল কেনার বিল দেয়া হয় ২৪ হাজার টাকা। একদিনেই প্রতিমন্ত্রীর দফতরের জন্য ৫টি ভাউচারে ক্রোকারিজ তথা প্লেট ও কাপ-পিরিচ কেনা হয় ১ লাখ ১৬ হাজার ৪শ’ টাকার।

একেবারে অবিশ্বাস্য হলেও প্রতিমন্ত্রী, সিনিয়র সচিব ও সচিবের পিএস দফতরের সোফা ওয়াশ বাবদ খরচ দেখানো হয়েছে ৬২ হাজার ৫শ’ টাকা। এ ছাড়া মন্ত্রণালয়ের আগের মন্ত্রী মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়ার বাসার দফতরের জন্য অস্বাভাবিক সব কেনাকাটা করা হয়েছে।

জাতীয় নির্বাচনের আগে ও পরে বেশকিছু কেনাকাটা করা হয়। যেখানে দামি টিভি, ফটোকপিয়ার মেশিনসহ মূল্যবান ইলেকট্রনিক সামগ্রী রয়েছে। নিয়মানুযায়ী মন্ত্রিত্ব থেকে বিদায় নিলে এসব জিনিসপত্র ফেরত আনার কথা। কিন্তু তা আনা হয়নি।

এদিকে কেনাকাটা করতে গিয়ে মন্ত্রণালয়ের সেবা শাখায় যে ধরনের স্টক রেজিস্টার থাকার কথা, তা নেই। কোনোমতে একটি খাতা আছে, যেখানে শুধু পণ্যের নাম, দাম ও কার জন্য কেনা হচ্ছে এবং কোন প্রতিষ্ঠান সরবরাহ করে সেটি লেখা আছে। কিন্তু রেজিস্টারের অনেক স্থানে শুধু তারিখ, স্মারক ও দাম লিখে দায়সারা হয়েছে।

কোথাও তারিখও লেখা নেই। অথচ স্টক রেজিস্টারের নিয়ম হল- ঠিকাদারের কাছ থেকে পণ্যসামগ্রী বুঝে নেয়ার পৃথক রেকর্ড রাখতে হবে। এরপর সেখান থেকে বণ্টন করার ভিন্ন রেজিস্টার থাকবে। অভিযোগ আছে, চক্রটি দরপত্র সিডিউল বিক্রির টাকাও সরকারি কোষাগারে জমা দেয়নি।

কেনাকাটার পদে পদে অনিয়ম, দুর্নীতির বিষয়ে পর্যাপ্ত তথ্য-প্রমাণ আসার পর এ বিষয়ে বক্তব্য নিতে গেলে গত ১৯ সেপ্টেম্বর প্রতিবেদকের উপস্থিতিতে মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মো. শাহ কামাল কেনাকাটা সংশ্লিষ্ট সব কর্মকর্তাকে তার দফতরে তলব করেন।

এরপর সেখানে জিজ্ঞাসাবাদের মুখে বেশকিছু অনিয়ম-দুর্নীতি ও দায়িত্বহীনতা হাতেনাতে প্রমাণিত হয়। প্রতিমন্ত্রীর দফতরে পানি খাওয়ার জন্য কেনা গ্লাস আনার পর সচিব দেখেন সেটি সিরামিকের। দাম হবে বড়জোর ৪শ’ টাকা। এরপর এ সংক্রান্ত ভাউচার এনে দেখা যায়, সেখানে ৩টি গ্লাস কেনার বিল করা হয়েছে ৩৬শ’ টাকা।

অর্থাৎ প্রতিটি গ্লাসের দাম পড়েছে ১২শ’ টাকা। গ্লাস ও ভাউচার দেখে বিস্মিত হন সিনিয়র সচিব। প্রতিমন্ত্রীর দফতরের জন্য ক্রোকারিজ কেনার ভাউচার পরীক্ষা করে বড় অনিয়ম ধরা পড়ে। যে পরিমাণ চাহিদাপত্র তারা দিয়েছে হাত দিয়ে কেটে তার চেয়ে পরিমাণ বাড়ানো হয়েছে।

এ ছাড়া একটি চাহিদাপত্র ফটোকপি করে অতিরিক্ত ৪টি ভাউচার প্রস্তুত করা হয়েছে। এ মন্ত্রণালয়ের সাবেক মন্ত্রী সরকারি বাসা ছেড়ে দেয়ার পর সেখানে থাকা সরকারি টিভি, কম্পিউটার, ফটোকপিয়ার মেশিনসহ অন্যান্য জিনিসপত্র মন্ত্রণালয়ে ফেরত আনা হয়েছে কি না- প্রশ্ন করা হলে কর্মকর্তারা সচিবকে নাসূচক জবাব দেন।

একজন কর্মচারী জানান, মন্ত্রী বাসা ছেড়ে দেয়ার পর সেগুলো কারা যেন নিয়ে গেছে! এমন কথা শুনে হতবাক সচিব। তিনি বলেন, আমি তোমাদের এগুলো বহু আগে আনার নির্দেশ দিয়েছিলাম।

এ সময় সিনিয়র সচিব শাহ কামাল সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের ভর্ৎসনা করেন। সেবা শাখার প্রশাসনিক কর্মকর্তা শেখ এজাজুল কামালকে তাৎক্ষণিকভাবে বদলি করেন। এ ছাড়া সব কাগজপত্র জব্দ করে পরবর্তী করণীয় ঠিক করতে জরুরি বৈঠক ডাকেন।

দুপুরে বৈঠকের পর বিকালে বিষয়টি নিয়ে প্রতিমন্ত্রী ডা. মো. এনামুর রহমানের দফতরে দ্বিতীয় দফা বৈঠক হয়। বিস্তারিত জানার পর প্রতিমন্ত্রী চরম ক্ষোভ প্রকাশ করেন। এরপর তিনি নির্দেশ দেন, এখন থেকে তার অনুমোদন ছাড়া কোনো কেনাকাটা করা যাবে না।

এদিকে এরকম সব অবিশ্বাস্য কেনাকাটার বিষয়ে কাছে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী ডা. মো. এনামুর রহমান বিস্ময় ও ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, এভাবে যারা কেনাকাটার বিল-ভাউচার করেছে তাদের ক্ষমা নেই। ইতিমধ্যে তদন্ত কমিটি করে দিয়েছি। জড়িত কাউকে ছাড়া হবে না। কেউ তার দীর্ঘদিনের অর্জিত সুনাম ক্ষুণ্ণ করার অপচেষ্টা করলে সমুচিত জবাব দেবেন।

দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মো. শাহ কামাল বলেন, অতিরিক্ত সচিব ড. মো. নজরুল আনোয়ারকে প্রধান করে ৩ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করেছি। প্রতিবেদন পাওয়ার পর দৃষ্টান্তমূলক ব্যবস্থা নেয়া হবে। প্রয়োজনে অধিকতর তদন্তের জন্য দুদকে চিঠি দেয়া হবে।

তিনি বলেন, সম্প্রতি একনেক সভায় প্রধানমন্ত্রী সরকারি যে কোনো ধরনের কেনাকাটার ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ সতর্ক থাকার নির্দেশনা দিয়েছেন। তাই ইতিমধ্যে তিনি মন্ত্রণালয়ের বিভিন্ন কেনাকাটাসহ প্রতিটি প্রকল্পের অনিয়ম-দুর্নীতি চিহ্নিত করতে শুদ্ধি অভিযান শুরু করেছেন। বিশেষ করে কোন জিনিসের দাম বাস্তবে কত এবং তা কত দিয়ে কেনা হয়েছে সেটি যাচাই করে দেখা হচ্ছে।

মন্ত্রণালয়ের সাধারণ কর্মকর্তা-কর্মচারীদের অনেকে জানিয়েছেন, অভ্যন্তরীণ এই কেনাকাটার অনিয়ম-দুর্নীতি তো টিআর, কাবিখা ও কাবিটা দুর্নীতির কাছে অতি ক্ষুদ্র অংশ। ইতিমধ্যে প্রভাবশালী যে চক্রটি এক শ্রেণির দালালের মাধ্যমে বরাদ্দপত্র কেনাবেচা করে বিপুল অর্থ-বিত্তের মালিক বনে গেছে তাদের বিষয়ে দুদকের পক্ষ থেকে অনুসন্ধান হওয়া জরুরি।

যথাযথভাবে তাদের পরিবারের অর্থ-সম্পদের হিসাব নিলে সব জারিজুরি ফাঁস হয়ে যাবে। তারা বলেন, ওদের সহযোগীরাই অভ্যন্তরীণ কেনাকাটার সঙ্গে জড়িত। এই সেবা শাখার দুর্নীতিপরায়ণ কর্মকর্তাদের এতদিন কেন বদলি করা সম্ভব হয়নি তার কারণ অনুসন্ধান করলে আসল রহস্য ধরা পড়বে।

তারা বলেন, প্রতিটি বরাদ্দপত্র ধরে গভীর অনুসন্ধান করলে ভয়াবহ তথ্য জানা যাবে। এক শ্রেণির গণমাধ্যম কর্মীও এ ধরনের বরাদ্দপত্র বিক্রি করে মোটা অঙ্কের কমিশন নিয়েছেন। এমন কদর্য অভিযোগও মন্ত্রণালয়ে চাউর আছে।

সূত্র জানায়, মন্ত্রণালয়ের অভ্যন্তরীণ কেনাকাটা হয় সেবা শাখার মাধ্যমে। এ শাখার প্রশাসনিক কর্মকর্তা শেখ এজাজুল কামাল। তার সহযোগী হিসেবে আছেন আরও দু’জন। এরা হলেন : অফিস সহকারী সুরাইয়া পারভিন ও ফেরদৌস। মূলত এদের মাধ্যমে নথি উপস্থাপিত হতো।

প্রশাসনিক কর্মকর্তা স্বাক্ষর করে নথি উপস্থাপন করার পর সেখানে স্বাক্ষর করতেন সিনিয়র সহকারী প্রধান মো. মাজেদুর রহমান। পরিকল্পনা শাখার কর্মকর্তা হিসেবে তার এখানে এ ধরনের দায়িত্ব পালন করার সুযোগ নেই। অথচ রহস্যজনক কারণে তাকে অতিরিক্ত দায়িত্ব হিসেবে এখানে রাখা হয়েছে।

তিনি এ মন্ত্রণালয়ে ৭ বছর কর্মরত আছেন। এরপর কেনাকাটার প্রস্তাব অনুমোদন করতেন যুগ্ম সচিব আবুল বায়েজ মিয়া। যুগ্ম সচিব পর্যায়ে ২৫ হাজার টাকার মধ্যে কেনাকাটা নিষ্পত্তি হয়। এ জন্য পরিকল্পিতভাবে কেনাকাটার প্রায় সব বিল-ভাউচার এই সীমার মধ্যে সম্পন্ন করা হতো।

তোয়ালে সমাচার : গত ১০ ডিসেম্বর মন্ত্রীর দফতরের তোয়ালে সরবরাহ বাবদ বিল করা হয় ২৪ হাজার ৮৬০ টাকা, যা অন্যান্য মনোহারি কেনাকাটা সংক্রান্ত রেজিস্টারের ২৫৯নং পৃষ্ঠায় ১১নং সিরিয়ালে লেখা আছে।

এ বছর ২১ জানুয়ারি মন্ত্রীর দফতরে তোয়ালে কেনার বিল করা হয় ১৭ হাজার ৬৫ টাকা, যা একই রেজিস্টারের ২৫৬ পৃষ্ঠায় ৪০নং সিরিয়ালে লেখা আছে। এ বছর ১২ এপ্রিল প্রতিমন্ত্রীর দফতরের জন্য ১০ পিস তোয়ালে কেনার বিল করা হয় ১৬ হাজার ৫শ’ টাকা।

ব্যবহার্য দ্রবাদি কেনাকাটা সংক্রান্ত রেজিস্টারের ১৯৫ পৃষ্ঠায় ১৪নং সিরিয়ালে লেখা আছে। ১৪ মে তোয়ালে ও ডিজিটাল ঘড়ি কেনার বিল করা হয় ১৮ হাজার ৭১৬ টাকা। এটি লেখা আছে ২৬৮ পৃষ্ঠায় ৫৮নং সিরিয়ালে।

গত ১৭ জুন প্রতিমন্ত্রীর দফতরে ১০ পিস তোয়ালে সরবরাহের বিল করা হয় ২৪ হাজার ৮শ’ টাকা, যা অন্যান্য মনোহারি কেনাকাটা সংক্রান্ত রেজিস্টারের ২৭০ পৃষ্ঠায় ৭০নং সিরিয়ালে লেখা আছে।

প্রথমত প্রশ্ন হল- এতসব তোয়ালে তারা কী করেন এবং দ্বিতীয়ত, তোয়ালের বিল যেভাবে করা হয়েছে তার সঙ্গে বাস্তব বাজারমূল্যের আদৌ কোনো মিল আছে কি না। প্রতিমন্ত্রীর দফতরের দায়িত্বশীল কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, একবার শুধু তারা তোয়ালে পেয়েছেন। তবে প্রতিটির দাম বড়জোর ৩শ’ টাকা হবে।

ফুলের বিলে ভূতের আসর : এ বছর ৩ জানুয়ারি উন্নতমানের ফুল কেনার বিল করা হয়েছে ৪ হাজার ৮৮০ টাকা। কিন্তু কোথায়, কার জন্য কেনা হয়েছে তা লেখা নেই। রেজিস্টারের ২৬৬নং পৃষ্ঠার ৪৩নং সিরিয়ালে এভাবে লেখা হয়েছে। ২৭০নং পৃষ্ঠায় ৬৯নং সিরিয়ালে গত ১৭ জুন ফুল কেনা বাবদ বিল দেখানো হয়েছে ২৪ হাজার টাকা।

জানতে চাইলে সেবা শাখার পক্ষ থেকে বলা হয়- এটি প্রতিমন্ত্রীর দফতরে প্রতিদিন যে ফুল দেয়া হয় তার বিল। এ ছাড়া প্রতিমন্ত্রীর দফতরে ১৮ ফেব্রুয়ারি উন্নতমানের পকেট নোটপ্যাড সরবরাহের বিল করা হয়েছে ৭ হাজার ৯শ’ টাকা।

সোফা ওয়াশ-কাণ্ড : মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব ও সচিবের একান্ত সচিব (পিএস) দফতরের সোফা ওয়াশ করার বিল করা হয়েছে ৪১ হাজার ৫শ’ টাকা। গত ১৯ জুন সিনিয়র সচিবের সোফা ওয়াশের বিল করা হয় ১৯ হাজার টাকা। যা আসবাবপত্র কেনাকাটা সংক্রান্ত রেজিস্টারের ৯৭ পৃষ্ঠার ৬০নং সিরিয়ালে লেখা আছে।

অপরদিকে সচিবের পিএসের সোফা ওয়াশের বিল করা হয়েছে ২২ হাজার ৫শ’ টাকা। অর্থাৎ সচিবের চেয়ে ৩ হাজার ৫শ’ টাকা বেশি। ২৫ জুন তারিখ দিয়ে এ বিলের বিষয়টি লেখা আছে এ সংক্রান্ত রেজিস্টারের ১৭৩ পৃষ্ঠার ১০নং সিরিয়ালে।

একই তারিখে ১১নং সিরিয়ালে প্রতিমন্ত্রীর দফতরের সোফা ওয়াশের বিল করা হয়েছে ২১ হাজার টাকা। অর্থাৎ সব মিলিয়ে প্রতিমন্ত্রী, সিনিয়র সচিব ও সচিবের পিএর দফতরের সোফা ওয়াশ বাবদ সরকারের খরচ হয়েছে ৬২ হাজার ৫শ’ টাকা।

খোঁজ নিয়ে দেখা গেছে, সচিবের পিএস দফতরে যে সোফা আছে তার বাজারমূল্য হতে পারে বড়জোর ৩০ হাজার টাকা। অথচ ওয়াশ করার বিল দেখানো হয়েছে প্রায় ২৩ হাজার টাকা। এ ছাড়া প্রতিমন্ত্রী ও সচিবের সোফা প্রায় নতুন।

সিনিয়র সচিবের সোফা অফ হোয়াইট কালারের এক ধরনের বিশেষ রেকসিন দিয়ে মোড়ানো। এটি ওয়াশ করা নিয়ে প্রশ্ন আছে। তাছাড়া মেশিন দিয়েও যদি করা হয় সেই মেশিনের বাজারমূল্য বড়জোর ৫ হাজার টাকা।

কালি কেনায় গোঁজামিলের ভয়াবহ চিত্র : প্রিন্টার ও ফটোকপিয়ার মেশিনের কালি কেনা নিয়ে বড় ধরনের অনিয়ম হয়েছে। তদন্ত কমিটি যদি এগুলো ধরে ধরে সূক্ষ্মভাবে অনুসন্ধান করে তবে দেখা যাবে, বাস্তবে কোনো কালি কেনা ছাড়াই ভুয়া বিল করে টাকা তুলে নেয়া হয়েছে।

এন্ট্রি খাতার অনেক স্থানে স্মারক নম্বর ও তারিখ এলোমেলা। কার দফতরের জন্য কেনা হয়েছে, তা-ও লেখা নেই। কয়েকটি উদাহরণ দিলে বিষয়টি স্পষ্ট হবে। যেমন- কম্পিউটারসামগ্রী কেনাকাটা সংক্রান্ত রেজিস্টারের ৩৩ পৃষ্ঠার ১২নং সিরিয়ালে ১৩ নভেম্বর মন্ত্রীর বেইলি রোডের বাসার অফিসের জন্য ২টি টোনার বা কালি সরবরাহের বিল করা হয় ২৩ হাজার ১৫০ টাকা।

৩৪ পৃষ্ঠায় ১৫নং সিরিয়ালে ফের মন্ত্রীর বাসার অফিসের জন্য পেছনের তারিখ দিয়ে মাত্র দু’দিন আগে ৮ নভেম্বর টোনার কেনার বিল দেখানো হয় ২৩ হাজার ১৫০ টাকার। আবার একই পৃষ্ঠায় ১৭নং সিরিয়ালে ৪ ডিসেম্বর মন্ত্রীর বেইলি রোডের বাসার অফিসের জন্য প্রিন্টারের ২টি কালি সরবরাহের বিল করা হয় ২৩ হাজার ৭৫০ টাকা।

১৮নং সিরিয়ালে এ বছর ১৩ জানুয়ারি কম্পিউটারের কালির বিল করা হয়েছে ২৩ হাজার ১৫০ টাকা। কিন্তু কোন দফতরের জন্য, তা উল্লেখ নেই। ৩৫ পৃষ্ঠায় ২১নং সিরিয়ালে তারিখ উল্লেখ ছাড়াই ফের মন্ত্রীর বাসার অফিসের জন্য ২টি টোনার সরবরাহের বিল করা হয়েছে ১৭ হাজার ২০০ টাকা।

কম্পিউটারসামগ্রী কেনাকাটা সংক্রান্ত রেজিস্টারের ৩১ পৃষ্ঠায় ৩নং সিরিয়ালে তারিখ উল্লেখ ছাড়াই সিনিয়র সচিবের দফতরে কালার লেজার জেট কেনা দেখানো হয় ২৩ হাজার ৮৫০ টাকা, ৪নং সিরিয়ালে সচিবের দফতরে ফটোকপিয়ার মেশিনের টোনার ও অতিরিক্ত সচিবের দফতরের জন্য ২২ হাজার ১৩০ টাকা লেখা আছে।

৫নং সিরিয়ালে ২০১৮ সালের ৯ সেপ্টেম্বর এইচপি লেজার কালার জেট টোনার কেনা বাবদ বিল করা হয়েছে প্রায় ২৪ হাজার, এ বছর ১৫ এপ্রিল সিনিয়র সচিবের দফতরের জন্য টোনার কেনার বিল ১৯ হাজার ৭৩০ টাকা এবং হলুদ প্রিন্টার ২৪ হাজার ৭৮৫ টাকা। ৩৪নং সিরিয়ালে ২৩ এপ্রিল বিল করা হয়েছে ১৬ হাজার ৩৩৫ টাকা।

কিন্তু কীসের বিল, তা উল্লেখ নেই। ৩৮নং সিরিয়ালে ১৩ মে সিনিয়র সচিবের প্রিন্টারের কালি কেনা বাবদ বিল করা হয় ৮ হাজার ৭৮৫ টাকা। আবার ২০ মে ৩৯নং সিরিয়ালে সিনিয়র সচিবের দফতরের প্রিন্টারের কালি বা টোনার কেনা বাবদ বিল করা হয় ২৪ হাজার ৭৮৫ টাকা।

এদিকে একই রেজিস্টারের ৩২ পৃষ্ঠায় ৬নং সিরিয়ালে ২ অক্টোবর ফটোকপিয়ার মেশিনের টোনার ২৪ হাজার ৪৩০ টাকা; কিন্তু কোন দফতরের জন্য তা লেখা নেই। আবার ৭নং সিরিয়ালে পেছনের তারিখ দিয়ে ৩০ এপ্রিল সেবা শাখার কালার প্রিন্টার সরবরাহ বাবদ বিল দেখানো হয় ২৪ হাজার ৮৭৫ টাকা। ১১নং সিরিয়ালে সচিব দফতরের জন্য ৯ নভেম্বর একটি টোনার বা কালি সরবরাহ দেখানো হয় ২৪ হাজার ৯৮০ টাকার।

এছাড়া এ বছরের ১৪ ফেব্রুয়ারি এই রেজিস্টারের ৩৪ পৃষ্ঠায় ২৩, ২৪, ২৫ ও ২৬নং সিরিয়ালে টোনার কেনার বিল দেখানো হয় যথাক্রমে ১৭ হাজার ১৫০ টাকা, ১৯ হাজার ৫০০ টাকা, ২০ হাজার ৯৫০ টাকা ও ২১ হাজার ৯৫০ টাকা। অথচ এগুলো কোন দফতরের জন্য, তা উল্লেখ নেই। ৩৯ পৃষ্ঠার ৪৭নং সিরিয়ালে ১৭ জুন বিল করা হয়েছে ৮ হাজার ৪৬৫ ও ১২ হাজার ৩৭৫ টাকা। কিন্তু কীসের বিল, কার জন্য, তা লেখা নেই।

বিদায়ী অর্থবছরের ২৪ জুন পৃথক ভাউচারে টোনার কেনা হয় ১৭টি। যার মোট দাম ধরা হয় ১ লাখ ৫৬ হাজার ৭২৫ টাকা। ২৭ জুন কেনা হয় ২০টি কম্পিউটার, ১টি প্রিন্টার ও ফ্যাক্স মেশিন। যার দাম ধরা হয় ১৮ লাখ ৫৪ হাজার ৪০০ টাকা।

কোকারিজ বিলের ছড়াছড়ি : দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী ডা. মো. এনামুর রহমানের দফতরের জন্য ৩২৫৫১০৫ কোডে মনিহারি তৈজসপত্র বা কোকারিজ কেনা হয় ২৫ জুন। প্রতিমন্ত্রী দফতরের চাহিদাপত্র মোতাবেক ডায়েরি নং ৮৭ সিরিয়ালে ২৩ হাজার ৬০০ টাকার তৈজসপত্র কেনাকাটা দেখানো হয়েছে।

এমনকি অবিশ্বাস্য হলেও সত্য যে, একই তারিখে ৮৮, ৮৯, ৯০ ও ৯১নং ডায়েরির সিরিয়ালে প্রতিমন্ত্রীর দফতরের জন্য আরও চার সেট তৈজসপত্র কেনা হয়েছে বলে দেখানো হয়। যথাক্রমে যার টাকার পরিমাণ ২৪ হাজার ২০০ টাকা, ২১ হাজার, ২২ হাজার ৮০০ ও ২৪ হাজার ৮০০ টাকা। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, অতিরিক্ত চারটি চাহিদাপত্র ছিল ভুয়া।

কিন্তু তা ফটোকপি করে খাতাকলমে পাঁচ সেট তৈজসপত্র কেনা দেখানো হয়েছে। প্রতিমন্ত্রীর দফতরের একজন কর্মকর্তা জানান, তারা কোকারিজ সেট পেয়েছেন মাত্র ১টি। তাছাড়া এত প্লেট-গ্লাস দিয়ে তারা কী করবেন। আগের প্লেট-গ্লাস ও কাপ-পিরিচ তো আছেই। গত অর্থবছরের একেবারে শেষদিকে গুরুতর এই অনিয়ম করা হয়।

ঠিকাদার তার বিলও নিয়ে গেছে। এ সংক্রান্ত নথিপত্র যথাযথভাবে যাচাই করলে এবং প্রতিমন্ত্রী দফতরে খোঁজ নিলে এর সত্যতা মিলবে। তারা জানান, তদন্ত শুরু হওয়ার পর এখন নতুন করে কোকারিস কিনে বিভিন্ন শাখায় দেয়া হচ্ছে।

এখানেই শেষ নয়, ১৭ জুন কালার প্রিন্টার কেনা হয় ৬৬নং সিরিয়ালে ১৯ হাজার ৭৯৫ টাকায়। গত বছর ২৪ এপ্রিল ব্যবহার্য দ্রব্যাদি উল্লেখ করে ১৩নং সিরিয়ালে বিল করা হয়েছে ১৫ হাজার ৬৯০ টাকা। সূত্র বলছে, এর সবই গোঁজামিল দিয়ে শুধু খাতাকলমে কেনাকাটা করা হয়েছে। বাস্তবে কেনা হয়নি।

এছাড়া প্রতিটি বিল করা হয়েছে অস্বাভাবিক। সেবা শাখার যুক্তি অনুযায়ী প্রতিটি বিলের সঙ্গে ১৫ শতাংশ ভ্যাট ও ৩ শতাংশ এআইটি যুক্ত করলেও কোনো জিনিসের দাম এত বেশি হওয়ার কথা নয়।

প্রতিমন্ত্রীর দফতরে আসবাবপত্রের মধ্যে ২০১৮ সালের ১০ অক্টোবর ১টি চেয়ার কেনা হয়েছে ১৮ হাজার টাকায়, যার ডায়েরি নং ৯। এছাড়া ডায়েরির ৪৮ ও ৪৯নং সিরিয়ালে ১২ মে প্রতিমন্ত্রীর দফতরের অনার বোর্ডের জন্য দুই ধাপে বিল করা হয়েছে ২৪ হাজার ২০০ টাকা করে ৪৮ হাজার ৪০০ টাকা। এছাড়া কম্পিউটারসামগ্রী কেনাকাটার কথা বলে ২৪ জুন ডায়েরির ৯ ও ১১নং সিরিয়ালে বিল করা হয়েছে যথাক্রমে ২১ হাজার ২৫০ টাকা ও ২৩ হাজার ৩০০ টাকা।

শেষ মুহূর্তে মন্ত্রীর বাসায় টিভি কেনাকাটা : ত্রাণ ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা মন্ত্রণালয়ের সাবেক মন্ত্রী মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়ার ২৪ বেইলি রোডস্থ সরকারি বাসভবনের জন্য ১টি রঙিন টিভি কেনার বিল অনুমোদন করা হয় ২০১৮ সালের ১৭ অক্টোবর। পরদিন মন্ত্রীর দফতরের জন্য কেনা হয় আরও একটি স্যামসাং টিভি।

দুটি টিভি ২ লাখ ২৫ হাজার টাকা করে ৪ লাখ ৫০ হাজার টাকা। এছাড়া এ বছর ১৯ জানুয়ারি মন্ত্রীর সরকারি বাসার জন্য ১টি কম্পিউটার, ১টি স্ক্যানার এবং ১টি ফটোকপিয়ার মেশিন কেনা হয় ২ লাখ ৯৬ হাজার টাকা দিয়ে। অপরদিকে মন্ত্রীর সংসদীয় কার্যালয়ের জন্য কোনো তারিখ ছাড়াই ৪৮ ইঞ্চির ১টি টিভি কেনা হয় ১ লাখ ৩৫ হাজার টাকায়।

বিষয়টি এখন জানাজানি হওয়ায় সিনিয়র সচিবের কড়া নির্দেশনার কারণে টিভি ও ইলেকট্রনিক্স জিনিসপত্র মন্ত্রণালয়ে ফেরত আনতে তোড়জোড় চলছে। সূত্র বলছে, তবে এসব টিভি ও ফটোকপিয়ার মেশিনের কয়েকটি ব্যবহৃত হচ্ছে মন্ত্রণালয়ের সেবা ও অডিট শাখার প্রভাবশালী দু’জন ননক্যাডার কর্মকর্তার বাসায়।

যারা ইতঃপূর্বে এ মন্ত্রণালয়ে টিআর, কাবিখা ও কাবিটা প্রকল্পের বরাদ্দপত্র কেনাবেচার সঙ্গে জড়িত। যাদের মধ্যে একজন কর্মকর্তা অব্যাহতভাবে গত বছর মে ও জুনে বড় ধরনের বরাদ্দ দেয়ার সময় ‘রাতের জিও জারির’ সঙ্গে জড়িত ছিলেন। ১০ বছরে ওই কর্মকর্তার নিজের ও পরিবারের নামে-বেনামে সহায়সম্পত্তির ব্যাপক উত্থান ঘটেছে। দুদক তদন্ত শুরু করলে সব গোমর ফাঁস হয়ে যাবে।

মন্ত্রীর বাসায় মালামাল সমাচার : ২০১৮ সালের ৮ নভেম্বর ১৮ হাজার ৪৭২ টাকার মালামাল। পরের সিরিয়ালে একই বছর ২৫ অক্টোবর দিয়ে লেখা আছে ১৮ হাজার ২৭৭ টাকার মালামাল সরবরাহ। মন্ত্রীর বিদায় সংবর্ধনা দেয়ার সময় ডিজিটাল ব্যানার তৈরির বিল করা হয় ১৮ হাজার ২৭৭ টাকা।

মন্ত্রীর দফতরে উন্নতমানের অন্যান্য লিখে বিল করা হয়েছে ২০ হাজার ৬৩৮ টাকা। এখানে কোনো তারিখ উল্লেখ নেই, যা কথিত রেজিস্টারের ২৬২ পৃষ্ঠার ২৮নং সিরিয়ালে উল্লেখ করা হয়েছে। এ বছর ১৪ জানুয়ারি মন্ত্রীর ২৪ বেইলি রোডের বাসায় ১৩ হাজার ৭৭৬ টাকার স্টেশনারি মালামাল সরবরাহ।

২১ জানুয়ারি মন্ত্রীর দফতরে স্টেশনারি মালামাল সরবরাহ দেখানো হয়েছে ২০ হাজার ৬৩০ টাকার। একই তারিখে মন্ত্রীর বেইলি রোডের বাসার দফতরে মালামাল সরবরাহ দেখানো হয় ২১ হাজার ৮০৫ টাকার। এটি রেজিস্টারের ৩৭নং সিরিয়ালে এন্ট্রি করা হয়েছে। অথচ একই তারিখ উল্লেখ করে ৩৯নং সিরিয়ালে লেখা আছে মন্ত্রীর বাসার দফতরে ২২ হাজার ৫৯০ টাকার মনোহারি দ্রব্য সরবরাহ করা হয়েছে।

কোকারিজের ছড়াছড়ি : শুধু বিগত অর্থবছরের শেষদিকে ২৩ জুন বিভিন্ন ভাউচারে কোকারিজ কেনার বিল দেখানো হয় ৭টি। সেখানে যথাক্রমে বিল করা হয়েছে ২৩ হাজার ৯০০, ১৯ হাজার ৭০০, ২৪ হাজার ৮৫০, ১৮ হাজার ৫০, ৯ হাজার, ২৩ হাজার ৪০০ ও ২১ হাজার ৬০০ টাকা।

এর মধ্যে সভাকক্ষের জন্য প্লেট ও কাপ-পিরিচের সরবরাহের বিল করা হয়েছে ৫৪ হাজার টাকার। এছাড়া এ বছর ২৬ জুন একই দিনে বিভিন্ন শাখায় কোকারিজের নামে পৃথক দুটি বিল করা হয়েছে যথাক্রমে ২২ হাজার ৩৭০ ও ২৪ হাজার ৫৮০ টাকা।

আরও যত অনিয়ম : আসবাবপত্র কেনাকাটা খাতেও অনিয়মের ছড়াছড়ি এবং অবিশ্বাস্য রকম মূল্য ধরা হয়েছে চেয়ার-টেবিল, ফাইল ক্যাবিনেট প্রভৃতির। এ সংক্রান্ত রেজিস্টারের ২৭নং সিরিয়ালে কোনো তারিখ উল্লেখ ছাড়াই আইন ও প্রশিক্ষণ শাখার অতিরিক্ত সচিবের কক্ষে ১টি ফাইল ক্যাবিনেট ও ৩টি ভিজিটর চেয়ারের দাম ধরা হয়েছে ৪৮ হাজার টাকা।

১২নং সিরিয়ালে ৩ ডিসেম্বর অতিরিক্ত সচিবের (সিপিপি) জন্য ১টি চেয়ার কেনার বিল করা হয় ১৬ হাজার ৮০০ টাকা। ১৫নং সিরিয়ালে অতিরিক্ত সচিব ড. নজরুল আনোয়ারের কক্ষের জন্য ১টি কম্পিউটার টেবিল ও ৩টি ভিজিটর চেয়ারের দাম ধরা হয়েছে ২২ হাজার টাকা।

কিন্তু বাস্তবে ওই কক্ষে যে টেবিল দেখা গেছে, তার দাম সর্বোচ্চ ৩ হাজার টাকা হবে। চেয়ারের দাম বড়জোর ৯ হাজার টাকা। ২০নং সিরিয়ালে সিনিয়র সচিবের কক্ষের সোফার লেদার পরিবর্তন করার বিল করা হয় ২৪ হাজার ৫০০ টাকা।

আসবাবপত্র কেনাকাটা খাতের রেজিস্টারে ৯৩নং পৃষ্ঠায় ৩৬নং সিরিয়ালে এ বছর ১০ ফেব্রুয়ারি স্টিলের আলমারি কেনার বিল করা হয়েছে ২৪ হাজার ৯০০ টাকা। কিন্তু কার জন্য, তা লেখা নেই। ৩৯নং সিরিয়ালে ২৪ ফেব্রুয়ারি সচিবের দফতরের জন্য ১৮ হাজার ৫০০ টাকার বিল; কিন্তু কী কেনা হয়েছে, তা উল্লেখ নেই।

২৫ মার্চ প্রতিমন্ত্রীর দফতরের জন্য ২৫ মার্চ ৪০ ও ৪১নং সিরিয়ালে ২টি বিল করা হয়েছে ২১ হাজার ৮০০ ও ২২ হাজার ২০০ টাকা। কিন্তু কী কেনা হয়েছে, তা লেখা নেই। মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে ট্রলি সরবরাহের বিল করা হয়েছে ১০০ পৃষ্ঠার ৭৪ ও ৭৫নং সিরিয়ালে দুটি ভাউচারে যথাক্রমে ২৪ হাজার ও ২২ হাজার টাকা উল্লেখ করে।

৯৫ পৃষ্ঠায় ৪৮ ও ৪৯নং সিরিয়ালে ১২ মে প্রতিমন্ত্রীর অনার বোর্ড বাবদ ২টি ভাউচারে ২৪ হাজার ২০০ টাকা করে ৪৮ হাজার ৪০০ বিল করা হয়েছে। ১৭৩ পৃষ্ঠায় ১৫নং সিরিয়ালে নতুন তালা সরবরাহ বাবদ বিল করা হয়েছে ২৪ হাজার ৬২৫ টাকা।

মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (অডিট) রণজিৎ সেনের দফতরে জুনে ডায়েরির ৩১নং সিরিয়ালে ১টি ড্রয়ার কেনা হয়েছে, যার দাম ধরা হয়েছে ২৪ হাজার টাকা। এছাড়া ২৩ জুন ৭৮নং সিরিয়ালে কেনা হয়েছে ১৮ হাজার ৫০ টাকার কোকারিজ। তবে তথ্যানুসন্ধানে জানা গেছে, এগুলো তার দফতরে দেয়া হয়নি।

অতিরিক্ত সচিব (উ. প.) ফয়েজুর রহমানের দফতরে ২৫ মে ডায়েরির ৬৩নং সিরিয়ালে কোকারিজ কেনা হয় ২০ হাজার ৭৬০ টাকার। একই দিনে ৬৪নং সিরিয়ালে ফের কোকারিজ কেনাকাটা দেখানো হয় ২১ হাজার ৪৯০ টাকার। প্রশ্ন হল, একজন অতিরিক্ত সচিব এত কোকারিজ কী করেন। তবে বাস্তবে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, এ ধরনের কোনো চাহিদাপত্র কিংবা কোকারিজ সরবরাহ করা হয়নি।

অতিরিক্ত সচিব (সিপিপি) মোয়াজ্জেম হোসেনের দফতরে ১৫ অক্টোবর কেনাকাটা দেখানো হয় ৮নং সিরিয়ালে ১টি টেবিল ২৪ হাজার ৮০০ টাকা। ২০১৮ সালের ৩ ডিসেম্বর ৭৮নং সিরিয়ালে ১টি চেয়ার ১৬ হাজার ৮০০ টাকা। এরপর ২৫ জুন ৭৮নং সিরিয়ালে একটি বুক সেলফ ২৪ হাজার ৮০০ টাকা।

২৬৮নং পৃষ্ঠায় ২৮ মে উল্লেখ করে ৩ জন কর্মকর্তার নামে পৃথকভাবে কেনাকাটার বিল দেখানো হয়েছে যথাক্রমে ২০ হাজার ৭৬০ টাকা, ২১ হাজার ৪১০ টাকা এবং ২৪ হাজার ৪৬০ টাকা। কিন্তু কী কেনা হয়েছে, তা উল্লেখ করা নেই।

মন্ত্রণালয়ের অভ্যন্তরীণ কেনাকাটায় এহেন অনিয়ম-দুর্নীতির বিষয়ে জানতে চাইলে ১৮ সেপ্টেম্বর মন্ত্রণালয়ের দফতরে প্রশাসনিক কর্মকর্তা শেখ এজাজুল কামাল বলেন, ‘ভাই আমি হজ করে এসেছি। কিছু ভুলত্রুটি আগে করেছি। করিনি এমন কথা বলব না। তবে ভবিষ্যতে আর করব না। বলেন, আপনাকে কীভাবে খেদমত করতে পারি।’

সিনিয়র সহকারী প্রধান মাজেদুর রহমান বলেন, ‘আমি এখানে আসতে চাইনি। জোর করে আমাকে এই শাখার দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। প্লিজ কিছু লিখবেন না। সামনে আমার পদোন্নতি।’

সূত্র: যুগান্তর

সম্পর্কিত সংবাদ

নতুন কারিকুলামের নামে মাউশি’র তামাশা
জাতীয়

নতুন কারিকুলামের নামে মাউশি’র তামাশা

মার্চ ১৪, ২০২৩
আজ সাবেক মন্ত্রী মাওলানা ইউসুফের মৃত্যুবার্ষিকী
জাতীয়

আজ সাবেক মন্ত্রী মাওলানা ইউসুফের মৃত্যুবার্ষিকী

ফেব্রুয়ারি ৯, ২০২৩
আজ শহীদ মাওলানা তিতুমীরের জন্মবার্ষিকী
জাতীয়

আজ শহীদ মাওলানা তিতুমীরের জন্মবার্ষিকী

জানুয়ারি ২৭, ২০২৩

জনপ্রিয় সংবাদ

  • বসুন্ধরার মালিকের পরিবারে চাঞ্চল্যকর যত খুন

    বসুন্ধরার মালিকের পরিবারে চাঞ্চল্যকর যত খুন

    0 shares
    Share 0 Tweet 0
  • মামুনুল হক স্ত্রীসহ লাঞ্ছনার ঘটনা ক্ষমতাসীনদের পূর্ব পরিকল্পিত

    0 shares
    Share 0 Tweet 0
  • শাহ আব্দুল হান্নান : একটি নাম একটি ইতিহাস

    0 shares
    Share 0 Tweet 0
  • মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে নয় বিরোধিতা করে জেলে গিয়েছিল মোদি

    0 shares
    Share 0 Tweet 0
  • আ.লীগ নেতারাই পূজা মন্ডপে কোরআন রেখেছিল

    0 shares
    Share 0 Tweet 0

সাম্প্রতিক সংবাদ

মন্ত্রীর আশ্রয়ে সোনা চোরাচালান

মন্ত্রীর আশ্রয়ে সোনা চোরাচালান

মার্চ ২৫, ২০২৩
আজ শহীদ শায়খ আহমেদ ইয়াসিনের শাদাতবার্ষিকী

আজ শহীদ শায়খ আহমেদ ইয়াসিনের শাদাতবার্ষিকী

মার্চ ২২, ২০২৩
নতুন কারিকুলামের নামে মাউশি’র তামাশা

নতুন কারিকুলামের নামে মাউশি’র তামাশা

মার্চ ১৪, ২০২৩
এমন জনপ্রিয়তার দৃষ্টান্ত বাংলাদেশে অদ্বিতীয়, বিশ্বে বিরল

এমন জনপ্রিয়তার দৃষ্টান্ত বাংলাদেশে অদ্বিতীয়, বিশ্বে বিরল

ফেব্রুয়ারি ২৮, ২০২৩
পিলখানা ট্রাজেডি, অন্তরালের কিছু কথা!

পিলখানা ট্রাজেডি, অন্তরালের কিছু কথা!

ফেব্রুয়ারি ২৫, ২০২৩
  • Privacy Policy

© Analysis BD

No Result
View All Result
  • মূলপাতা
  • বিশেষ অ্যানালাইসিস
  • রাজনীতি
  • জাতীয়
  • আন্তর্জাতিক
  • মতামত
  • কলাম
  • ব্লগ থেকে

© Analysis BD