অ্যানালাইসিস বিডি ডেস্ক
বাংলাদেশের সাংবাদিকরা বিভিন্ন অপরাধ কর্মকাণ্ডে জড়িত। নারী কেলেঙ্কারি, মাদক থেকে শুরু করে ক্যাসিনো ব্যবসা পর্যন্ত সাংবাদিকরা জড়িত। আর বিভিন্ন প্রতিবেদনের নামে চাঁদাবাজি করে কোটিপতি বনে গিয়েছেন অনেকেই। এমনকি অনেক সাংবাদিক আছেন যারা নিজের স্বার্থ রক্ষায় যথেষ্ট তৎপর।
বাংলাদেশে যে কয়জন সাংবাদিক নেতা আওয়ামী লীগের দালাল হিসেবে পরিচিত তাদের অন্যতম হলেন প্রধানমন্ত্রীর তথ্য উপদেষ্টা ইকবাল সোবহান চৌধুরী। তিনি সব সময় সাংবাদিকদের অধিকার ও স্বার্থের চেয়ে নিজেদের স্বার্থকেই বড় করে দেখে থাকেন।
এদেশে সংঘটিত নির্মম হত্যাকাণ্ডগুলোর একটি হলো সাংবাদিক সাগর-রুনি হত্যাকাণ্ডের ঘটনা। এই সাংবাদিক দম্পতির কাছে রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ সেক্টর বিদ্যুৎ খাতের দুর্নীতির অনেক গোপন নথি ছিল। যে দুর্নীতির সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তার পরিবারের সদস্যরা জড়িত ছিল। বিভিন্ন গোয়েন্দা মারফত এই তথ্য জানার পরই দুর্নীতি চাপা দিতে এই সাংবাদিক দম্পতিকে তাদের বাসায় নির্মমভাবে হত্যা করা হয়।
নির্মম এই হত্যাকাণ্ডের বিচারের দাবিতে যখন সাংবাদিক সংগঠনগুলো রাস্তায় নেমে আসে তখনই তথ্য উপদেষ্টার পদ দিয়ে ইকবাল সোবহান চৌধুরীকে কিনে নেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। শুধু উপদেষ্টার পদই নয়, শত কোটি টাকা টাকা দিয়ে ডিবিসি নামে একটি টিভি চ্যানেলের মালিকও বানিয়ে দেন তাকে। এরপর থেকেই সাগর-রুনি হত্যাকাণ্ডের বিচারের দাবিতে গড়ে উঠা আন্দোলন আস্তে করে ঝিমিয়ে পড়ে।
সুবিধাবাদী ইকবাল সোবহান চৌধুরীর কর্মকাণ্ডে বিব্রত সাংবাদিক সমাজ। তিনি নিজের স্বার্থ হাসিলের জন্য নীতি-নৈতিকতাকে বিসর্জন দিয়ে সরকারের সকল অপকর্মকে অকুণ্ঠ সমর্থন দিয়ে যাচ্ছেন। এমনকি ডিজিটাল নিরাপত্তা নামে সরকার যে কালো আইন পাস করেছে এটার পেছনেও ইকবাল সোবহানের হাত রয়েছে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ইকবাল সোবহানের ক্ষমতাকে ব্যবহার করে ফেনীতে তার পরিবারের লোকজনও দেদারছে অপকর্ম করে যাচ্ছে। মাদক থেকে শুরু করে ক্যাসিনো ব্যাবসা সর্বত্রই জড়িয়ে আছেন তিনি।
২০১৮ সালে ২৬ সেপ্টেম্বর রাতে চট্টগ্রাম সিটি গেট এলাকা থেকে র্যাপিড এ্যাকশান ব্যাটালিয়ন (র্যাব-৭) সদস্যরা ইকবাল সোবহান চৌধুরীর ভাই মাছুম সোবহান চৌধুরী (৪০), তার স্ত্রী উপমা চৌধুরী (২৬), ভাতিজা ইফফাত চৌধুরী (১৮), শাহাদাত মোহাম্মদ সায়েম ও হানিফকে অস্ত্র ও মাদকসহ গ্রেফতার করে। পরে অস্ত্র ও মাদক উদ্ধারের পৃথক তিনটি মামলায় চট্টগ্রাম জেলা কারাগারে পাঠায়।
এছাড়া সম্প্রতি ক্যাসিনো ইস্যুতে উঠে এসেছে তার নাম। যুবলীগ নেতারা অবৈধ ক্যাসিনো ব্যবসা করছে এটা বেশ কয়েকজন সাংবাদিক নেতা ও সিনিয়র সাংবাদিক অনেক আগে থেকেই জানেন। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সাংবাদিকদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য প্রধানমন্ত্রীর সাবেক তথ্য উপদেষ্টা ইকবাল সোবহান চৌধুরী।
এছাড়া ডিবিসির হেড অফ নিউজ প্রণব সাহা। ২০১৮ সালে নারী কেলেঙ্কারির অভিযোগ আছে তার বিরোদ্ধে। তার নিজের সহকর্মী সাংবাদিক সুপ্রীতি ধরের মেয়ে শুচিস্মিতা সীমন্তি হ্যাশট্যাগ মি-টু দিয়ে ফেসবুকে প্রকাশ করেন তার সঙ্গে ১১ বছর আগের ঘটনা। উচ্চশিক্ষার জন্য ইউরোপের থাকা সীমন্তি অভিযোগ করেছিলেন, ডিবিসি টেলিভিশনের সাংবাদিক প্রণব সাহার বিরুদ্ধে। ২০১৮ সালের ৩০শে অক্টোবর সীমন্তি তার ফেসবুক পাতায় #মি-টু দিয়ে লিখেছিলেন তার যখন বয়স ১৬ তখন প্রণব সাহা শরীরে বহুবার আপত্তিকর-ভাবে স্পর্শ করেছেন। দীর্ঘ সময় ধরে তিনি সবার অগোচরে এই বেদনা বয়ে বেড়াচ্ছিলেন এবং ওই ঘটনা তার হৃদয়ে একটি দীর্ঘস্থায়ী ক্ষতের সৃষ্টি করেছিল।
এ ব্যাপারে সীমন্তি বিবিসির সাক্ষাতকারে বলেছিলেন, “প্রণব সাহা ফ্যামিলি ফ্রেন্ড ছিলেন। উনি অনেক সময় আসতেন। আমি যখন পড়তাম আমার রুমে আসতেন এবং উনি যেভাবে টাচ করতেন এটা একেবারেই অগ্রহণযোগ্য। ২০০৭ থেকে ২০০৮ সালের মধ্যে অনেকবার এ ঘটনা হয়েছে আমার সাথে। এতবার হয়েছে যে আমি হিসাবই করতে পারবো না। চেষ্টা করেছি যাতে একস্ট্রিম কোনও পর্যায়ে না যায়।”