অ্যানালাইসিস বিডি ডেস্ক
বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়া প্রাণঘাতী করোনা ভাইরাস যখন বাংলাদেশে ছড়িয়ে পড়ছে ঠিক তখন ক্ষমতাসীন সরকারের নির্দেশে জামায়াত ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল নিরপরাধ এটিএম আজহারুল ইসলামকে কথিত মামলার রায়ে মৃত্যুদন্ড বহাল করেছে আদালত।
দেখা গেছে করোনা আতঙ্কে ইতিমধ্যে মুজিববর্ষের সকল আয়োজন লন্ডভন্ড হয়েছে। এছাড়া রাজনৈতিক আর অর্থনৈতিক সংকটতো রয়েছে। সব মিলিয়ে বাংলাদেশ এখন একটা ভয়াবহ সংকটের মধ্যদিয়ে অতিক্রম করছে। এতো সব সংকটের মধ্যে হঠাৎ কেন জামায়াত নেতা আজহারুল ইসলামের রায় দেওয়া হলো? এর নেপথ্য কি? এটিএম আজহারে রায়কে পুঁজি করে পর্দার আড়ালে অন্য কিছু ঘটছে নাতো?
সূত্রে জানা যায়, ভারতের নির্দেশেই শেখ হাসিনা আজহারুল ইসলামের ইস্যুটিকে সামনে নিয়ে এসেছে। দিল্লিতে মুসলমানদের ওপর হত্যা নির্যাতনের প্রতিবাদে ক্ষোভে ফুঁসে উঠেছে পুরো বাংলাদেশ।মুজিববর্ষে প্রধান মেহমান হিসেবে নরেন্দ্র মোদির থাকার কথা ছিল।কিন্তু বাংলাদেশের ধর্মপ্রাণ মানুষের প্রতিবাদ বিক্ষোভের মুখে ঢাকা সফর বাতিল করতে বাধ্য হয়েছেন নরেন্দ্র মোদি।
জানা গেছে, ঢাকাস্থ ভারতীয় হাইকমিশন দিল্লিকে জানিয়েছে বাংলাদেশে ভারতবিরোধী বিক্ষোভের নেপথ্যে ছিল জামায়াতে ইসলামী। বিভিন্ন সংগঠনকে জামায়াত ভারতের বিরুদ্ধে মাঠে নামিয়েছে। এমনকি জামায়াত ও তাদের ছাত্রসংগঠন ছাত্রশিবিরও মাঠে নেমে বিক্ষোভ করেছে। ভারতীয় হাইকমিশনের এই বার্তা পাওয়ার পরই জামায়াতের ওপর ক্ষুব্ধ হয়ে উঠেন মোদি।
দিল্লির পক্ষ থেকে শেখ হাসিনাকে বার্তা দিয়েছে যে সম্পর্ক ঠিক রাখতে হলে জামায়াতকে নিশ্চিহ্ন করতে হবে। ফাঁসির দন্ডপ্রাপ্ত জামায়াত নেতা আজহারকে শেষ করে দিতে হবে। দিল্লির এই বার্তা গণভবনে আসার পরই আজহারুল ইসলামের রায় কার্যকরের পদক্ষেপ গ্রহণ করে শেখ হাসিনা।
বিশ্লেষকরা বলছেন, শুধু মোদিকে খুশি নয় মুজিববর্ষ পালন নিয়ে বিপাকে সরকার। একদিকে অর্থের যোগান দিতে গিয়ে ব্যাংক লুট করছে অন্যদিকে প্রচারণার প্রসারতা হলেও করোনা আতঙ্কে সেটা বাস্তবায়ন সম্ভব হচ্ছেনা। ইতিমধ্যে মোদিসহ বিদেশিরা না আসার ঘোষনাও দিয়েছেন। তাই শাক দিয়ে মাছ ঢাকার জন্য ইস্যৃু সৃষ্টি করছে তারা।
অনেকেই প্রশ্ন তুলেছেন পৃথিবী জুড়ে যখন হাজার হাজার মানুষ মারা যাচ্ছে তখন বাংলাদেশ কিভাবে দুই দিনে করোনা আক্রান্ত রোগীকে সুস্থ করে তুলছে? অন্যদেশের উন্নত চিকিৎসা ব্যবস্থা থাকার সত্বেও তারা পারছে না। তাই করোনা ইস্যুকে গোপন করতেই এই রায় দেওয়া হয়েছে বলে মনে করছেন তারা। মূলত বাংলাদেশে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা গোপন করতে চাইছে সরকার।
জামায়াতে ইসলামীর সাবেক আমির মাওলানা মতিউর রহমান নিজামী, সাবেক সেক্রেটারি জেনারেল আলী আহসান মুহাম্মদ মোজাহিদ, সাবেক সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল কামারুজ্জামান ও আব্দুল কাদের মোল্লা এবং নির্বাহী পরিষদ সদস্য মীর কাসেম আলীকে কথিত যুদ্ধাপরাধের মিথ্যা ও ভিত্তিহীন অভিযোগে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে নির্মমভাবে হত্যা করেছে শেখ হাসিনা।
সাজানো ও ভুয়া সাক্ষীর দ্বারা সাক্ষ্য প্রদান করিয়ে দোষী সাব্যস্ত করে দলীয় ও অনুগত বিচারপতি দিয়ে জামায়াতের নিরপরাধ শীর্ষ নেতৃবৃন্দের বিরুদ্ধে ফাঁসির আদেশ দেয়া হয়েছিল। ক্ষমতা টিকিয়ে রাখতে দাদার দেশ ভারতকে খুশী রাখতেই মূলত শেখ হাসিনা জামায়াত নেতৃবৃন্দকে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে হত্যা করেছে। পাঁচ জন শীর্ষ নেতাকে ফাঁসিতে ঝুলিয়েও শেখ হাসিনার মনের খায়েশ মিটেনি। জামায়াতের আরেক সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল নিরপরাধ এটিএম আজহারুল ইসলামকেও এখন ফাঁসিতে ঝুলানোর আয়োজন করছে ক্ষমতাসীনরা।
রোববার হাইকোর্ট নামের মুজিব কোর্ট এটিএম আজহারুল ইসলামের মৃত্যুদণ্ডের পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশ করেছে। আইনে রিভিউ করার অপশন থাকায় এটিএম আজহারুল ইসলামকে এখনই ফাঁসিতে ঝুলাতে পারছে না শেখ হাসিনার প্রশাসন। দেশ বিদেশের মানুষকে আইনি প্রক্রিয়া দেখানোর জন্য মুজিব কোর্টের বিচারপতিরা আজহারুল ইসলামের ফাঁসি কার্যকরের আদেশ দিতে পারছে না।