• যোগাযোগ
শনিবার, এপ্রিল ১, ২০২৩
Analysis BD
  • মূলপাতা
  • বিশেষ অ্যানালাইসিস
  • রাজনীতি
  • জাতীয়
  • আন্তর্জাতিক
  • মতামত
  • কলাম
  • ব্লগ থেকে
No Result
View All Result
  • মূলপাতা
  • বিশেষ অ্যানালাইসিস
  • রাজনীতি
  • জাতীয়
  • আন্তর্জাতিক
  • মতামত
  • কলাম
  • ব্লগ থেকে
No Result
View All Result
Analysis BD
No Result
View All Result
Home কলাম

মাদকদ্রব্যে জীবনহানি : দায় কার?

মার্চ ১০, ২০২১
in কলাম
মাদকদ্রব্যে জীবনহানি : দায় কার?
Share on FacebookShare on Twitter

এইচ এম আব্দু রহিম

দেশে মাদকদ্রব্যের হিংস্র ছোবল ব্যাপক বৃদ্ধি পেয়েছে। ইদানিং ভেজাল ও বিষাক্ত মদ পান করে প্রাণহানি বাড়ছে। রাজধানী ঢাকা থেকে শুরু করে দেশের বিভিন্ন স্থানে গড়ে উঠেছে ভেজাল মদের কারখানা। আর এসব মদপান করে মানুষ মারা যাচ্ছে। গত এক মাসে ভেজাল মদ খেয়ে অন্তত একশ’ মানুষের মৃত্যু ঘটেছে। বগুড়ায় এক মাসে ১৫ জন মারা গেছে, রাজধানী ঢাকায় আলাদা আলাদা ঘটনায় মদ্যপানের বিষক্রিয়ায় ৫ জনের মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী থেকে শুরু করে ব্যবসায়ী, ছাত্র সংগঠনের নেতাকর্মী, চাকরিজীবীরা রয়েছেন।

যত্রতত্র গড়ে উঠা মদের কারখানাগুলোতে বেশি লাভের আশায় ভেজাল মদ তৈরী হচ্ছে। ভেজাল মদ তৈরি হচ্ছে পানি, চিনি, রঙ, আর স্পিরিট দিয়ে। এভাবে সারা দেশে ভেজাল মদ তৈরি হচ্ছে। আর তা পান করে মারা যাচ্ছে মানুষ। কিন্তু এ দায় কার ? সরকার ও সংশ্লিষ্টরা কিন্তু এ দায় এড়াতে পারে না। ধর্মীয় অনুশাসন না মানার কারণে যুব সমাজে মাদকাসক্তদের সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে। উঠতি বয়সী যুবকরা বিশেষ করে স্কুল কলেজগামী ছেলেরা এ মরণ নেশায় জড়িয়ে পড়ছে। কৌতূহল, পারিবারিক অশান্তি, বেকারত্ব, প্রেমে ব্যর্থতা, বন্ধুদের কুপ্ররচণা, অসৎ সঙ্গ, নানা রকম হতাশা, ও আকাশ সংস্কৃতির নেতিবাচক প্রভাবে উঠতি বয়সি ছেলেমেয়েরা মাদকাসক্ত হয়ে পড়ার কারণ। যারা নেশা করে তারা জানে নেশা কোন উপকারি বা ভাল কাজ নয়। এটা মানুষের জীবনীশক্তি নষ্ট করে দেয়। তরুণ সমাজের বহু মেধাবী ও সম্ভাবনাময় মেধাবী ও সম্ভাবনাময় প্রতিভা মাদকের নেশার কবলে পড়ে ধর্মীয় মূল্যবোধ এবং নৈতিকতা বিসর্জন দিয়ে সামাজিক অবক্ষয়ের পথ বেছে নিয়েছে।

এদিকে দেশে মাদকদ্রব্য অধিদপ্তর রয়েছে। তার মানে, মাদক নির্মূল নয়, নিয়ন্ত্রণের বিষয়টি সরকার স্বীকৃত। সরকারিভাবে মাদকদ্রব্য সেবন করার জন্য লাইসেন্স দেয়া হয়। দেশে মাদকসেবীদের চাহিদা মেটাতে এর বাইরে বিদেশ থেকে বৈধ অবৈধ নানা পন্থায় মাদকদ্রব্য এ দেশে আসে। তরুণ সমাজের বহু মেধাবী ও সম্ভাবনাময় প্রতিভা মাদকের নেশার কবলে পড়ে ধর্মীয় মূল্যবোধ এবং নৈকিতা বিসর্জন দিয়ে সামাজিক অবক্ষয়ের পথ বেছে নিয়েছে। যেহেতু মাদকাসক্তির নেশাজাতীয় দ্রব্য মানব সমাজের জন্য সর্বনাশ ও চিরতরে ধ্বংস ডেকে আনে। দেশে যে কত রকমের মাদকদ্রব্য আসছে তা বলে শেষ করা যাবে না। বিশেষজ্ঞদের মতে, মাদকদ্রব্য ধীরে ধীরে মৃত্যুর দিকে নিয়ে যায়। চিকিৎসার মাধ্যমে মুক্তি মিললেও ভেজাল মেশানো মাদক সেবনে মৃত্যু থেকে রেহাই পাওয়া যাচ্ছে না। এ ক্ষেত্রে মৃত্যু পঙ্গুত্ববরণ এড়ানো যায় না। মানুষের অজ্ঞতা অসচেতনতার কারণে অবস্থার এতটা অবনতি হয়েছে। মাদকদ্রব্যের মধ্যে বেশি ভেজাল মিশানো হচ্ছে ইয়াবায়। বিশ্বের কোথাও ইয়াবার রেজিস্ট্রার্ড ফর্মুলা নেই। ফলে যেভাবে খুশি সেভাবে এটা তৈরি করা হচ্ছে। এটি গ্রহণের ফলে কিডনি লিভার ও ফুস ফুসসহ শরীরের অঙ্গ প্রতঙ্গের অপূরণীয় ক্ষতি হয়। মাত্র কয়েক হাজার টাকার কাঁচামাল দিয়ে অন্তত একলাখ ইয়াবা তৈরি করা যায়। যার মূল্য দুই থেকে তিন কোটি টাকা। লোভে পড়ে অনেকেই এটা তৈরি করছে। চাহিদা থাকায় অলিগলিতে বিক্রি হচ্ছে এসব মাদকদ্রব্য। নিষিদ্ধ মাদকদ্রব্য গোপনে বিক্রি করার কারণে এ যাচাই বাছাই করার সুযোগ থাকে না। দেশে ভেজাল মাদকদ্রব্য সেবন করে অনেকের মৃত্যু হওয়ার পর ও মাদকসেবীদের টনক নড়েনি। কারণ মাদক সেবীদের সাধারণত: ভাল-মন্দ বাছ-বিচার করার মত জ্ঞান থাকে না। আর এ মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ করছে এক ধরনের গডফাদাররা। এদেরকে আইনের আওতায় আনতে হবে। মাদক পাচার, ব্যবসা ও ব্যবহারকারীর ক্রম প্রসার রোধকল্পে রাষ্ট্রীয় ও সামাজিক পর্যায়ে নানা রকম কার্যক্রম দেখা গেলেও তেমন ইতিবাচক ফল মিলছে না। মাদক একটি ব্যক্তি পরিবারের জন্য কল্যাণ বয়ে আনে না।

দেশ জাতির জন্য ভয়াবহ পরিণাম ডেকে আনে। নানা রকম রোগ ব্যাধি বিস্তারের পাশাপাশি আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি খারাপ করে তোলে। দেশের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সহযোগিতায় দেশের অভ্যন্তরে মাদকের বিকিকিনি এবং বিভিন্ন সীমান্ত পথে দেশের অভ্যন্তরে মাদকের অনুপ্রবেশ নিয়ে সীমান্তরক্ষী বাহিনীর সংশ্লিষ্টতার অভিযোগ বহু দিনের। দেশের প্রভাবশালীদের সহযোগিতায় মাদকের কিনিবিকি এখন ওপেন সিক্রেট। বিভিন্ন সময়ে পুলিশী অভিযানে মাদকদ্রব্য আটক ও জড়িতদের আটকের কথা শোনা গেলেও মাদক ব্যবসার গডফাদারদের আটক করা হয়েছে কিংবা দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হয়েছে এমন কথা শোনা যায় না। ফলে মাদক বিরোধী নানা অভিযান থাকলেও কিছুদিন যেতে না যেতেই আবার নতুন করে মাদকের ব্যবসা আরো প্রসার ঘটে।

মাদক ব্যবসায়ীদের প্রধান র্টাগেট হলো তরুণ সমাজ। দেশের তরুণ সমাজ মাদকের ভয়াবহ প্রভাবে বিপদগামী হচ্ছে। মাদকের নীল ছোবলে ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে আমাদের আগামী প্রজম্ম। যা একটি দেশের জন্য ভয়াবহ দুঃসংবাদ। সামাজিক নিরাপত্তাহীনতার প্রকট রূপের পিছনে মাদক অন্যতম বড় উপসর্গ হিসাবে দেখা দিয়েছে। এর মত উদ্বেগজনক ঘটনা আর কি হতে পারে। মাদকাসক্তদের হিতাহিত জ্ঞান থাকে না, যে কোন অনৈতিক কাজে লিপ্ত হতে বিবেক বাধা দেয় না। মিথ্যা কথা বলা তাদের একটি স্বাভাবিক বিষয়। কোন ধরনের অপরাধবোধ তাদের স্পর্শ করে না। মাদক সেবনকারীর দেহ মন চেতনা, মনন, প্রেষণা, আবেগ, বিচার বুদ্ধি সবই মাদকের নিয়ন্ত্রণে চলে যায়। এক গবেষণায় দেখা গেছে, মাদকাসক্তের কারণে বিগত ১০ বছরে ২০০ মা বাবা খুন হয়েছেন। দেশে মাদকের সংখ্যা প্রায় ৭৫ লাখ এবং প্রতি বছরে এর পিছনে প্রায় ৬০ হাজার কোটি টাকা নষ্ট হচ্ছে।

প্রতিনিয়ত এসব ঘটনা ঘটে চলেছে। প্রতিকারের কোন ব্যবস্থা নেই।

মিয়ানমার তৈরি করছে ইয়াবা আর ভারত তৈরি করছে ফেনসিডিল। করোনার ইয়াবা আর ফেনসিডিল সেবন করছে বাংলাদেশের লাখ লাখ মানুষ। ফলে ভারত আর মিয়ানমার এ দেশের কাছ থেকে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে। পত্রিকার সূত্রমতে, দেশে প্রতি বছর ২৫ হাজার কোটি টাকার মাদকদ্রব্য বেচাকেনা করা হয়। পত্রিকা মারফতে জানা যায়, প্রতিদিন রাজধানী ঢাকা শহরেই ইয়াবা বাবদ হাত বদল হয় ৭ কোটি টাকা। তবে সরকার বলছে মাদকাসক্তদের সংখ্যা ৭৫ লাখ। আর বেসরকারি হিসেব মতে, এক কোটির ও বেশি।

এদের অধিকাংশ তরুণ তরুণী ও যুবক যুবতী। মাদক গ্রহণকারী ৮০ ভাগের বয়স ১৫ থেকে ৩৫ বছরের মধ্যে। বিশ্বের নেশাগ্রস্ত দেশের মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান ৭ম। ঢাকা শহরে শুধু ১০ লাখ মাদকসেবী রয়েছে। এটা পরিসংখ্যান ব্যুরোর অনুপাতে বের করা হয় তাহলে মানুষ আঁতকে উঠার কথা। তার মানে ৬৮ হাজার গ্রামে গড়ে ১৫০ জন করে মাদকসেবী রয়েছে। সারা দেশে ইয়াবা ছেয়ে গেছে। এসব প্রতিষেধক, প্রতিরোধ, দমন নিয়ন্ত্রণের তো উপায় নেই। মাদক নিয়ন্ত্রণ অধিদফতর ঠুনকো জগন্নাথে পরিণত হয়েছে।

৩২ ধরণের মাদক দেশে সেবন চলছে। এ পর্যন্ত ভিন্ন ভিন্ন নামে যে মাদক উদ্ধার হয়েছে সেগুলো হচ্ছে হেরোইন, গাঁজা, চোলাই মদ দেশি মদ, বিদেশি মদ, বিয়ার, রেক্টিফায়েড স্পিরিট, কেডিন, ফেনসিডিল তাড়ি, প্যাথেডিন, টিডি জেসিক, ভাং, কোডিন চ্যাবলেট, ফার্মেন্টেড, ওয়াশ (জাওয়া), বনোজেসিক ইনজেকশান (বুপ্রেনরফিন), টেরাহাইড্রোবানাবিল, এক্সএলমুগের, মরঢিন, ইয়াবা, আইএসপিল, ভায়াগ্রা, সানাগ্রা, টলুইন, পটাশিয়াম পারম্যাঙ্গানেট, মিথাইল, ইথানল ও কিটোন। রাজধানীতে পাইকারী খুচরা মিলিয়ে ৫শতাধিক মাদক স্পট নিয়ন্ত্রণ করছে সহ¯্রাধিক চি‎িহ্নত মাদক ব্যবসায়ী। এছাড়া রয়েছে অসংখ্য ভাসমান বিক্রেতা। ২০০২ সালে দেশে মাদক অপরাধীদের সংখ্যা ছিল ৯ শতাংশ। বর্তমানে তা ৪০ শতাংশ ছাড়িয়ে গেছে। মিয়ানমার থাইল্যান্ড ও লাওস নিয়ে গঠিত ‘গোল্ডেন ট্রায়াঙ্গল’ হো ভারত, নেপাল ও তিব্বতের সীমান্তবর্তী অঞ্চল নিয়ে ‘গোল্ডেন ক্রিসেন্ট’ বাংলাদেশকে ঘিরে ফেলেছে।

ফলে বাংলাদেশ বিশ্বের বৃহত্তম মাদক উৎপাদক ও ব্যবসায়ীদের থাবার মধ্যে অবস্থান করছে। বাংলাদেশকে ঘিরে প্রতিবেশী দেশের সীমান্তে গড়ে উঠেছে হাজার হাজার ফেনসিডিল কারখানা। সংঘবদ্ধ দল মিয়ানমার হতে কক্সবাজার দিয়ে সারা দেশে সুকৌশলে ছড়িয়ে দিচ্ছে ইয়াবা। নতুন নেশার ফাঁদে জড়িয়ে পড়েছে যুব সমাজ। ফেনসিডিল, হেরোইন, ইয়াবার কোনটি দেশে উৎপাদিত না হলে তা পাওয়া যাচ্ছে যত্রতত্র।

মাদকের করাল গ্রাস থেকে সন্তানদের না ফিরাতে পেরে পরিবারের শান্তি রক্ষায়, বাবা মা তার সন্তানকে পুলিশে সোপর্দ করছেন। মাদকাসক্ত সন্তানদের হাতে পিতামাতাও জীবন হারাচ্ছে অহরহ। আমাদের বর্তমান সমাজজীবনে মাদকের ব্যবহার সবাইকে উদ্বিগ্ন করেছে। এর বিষাক্ত ছোবলে অকালে কেড়ে নিচ্ছে অনেক প্রাণ। অনেক সম্ভাবনাময় তরুণ তরুণী হচ্ছে বিপথগামী। এ থেকে পরিত্রাণের আশায় ১৯৯০ সালে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইন ১৯৯০ সালের ২০ নং আইন) প্রণীত হয়।

মাদক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণও মাদকাসক্তদের চিকিৎসা ও পুনর্বাসনকল্পে ওই আইন ১৯৯০ সালের ১লা ফেব্রুয়াাির প্রণয়ন করা হয়। ওই আইনের ২(ঠ) ধারায় মাদকের সংজ্ঞা নির্ধারণ করে দেয়া হয়েছে। সে মতে মূলত অপিয়াম পপি বা তৎনিঃসৃত আঠালো পদার্থ; আফিম; আফিম থেকে উদ্ভূত মরফিন, কোডিন, হেরোইন ইত্যাদি এবং এদের ক্ষারগুলো; শতকরা ০.২%-এর অধিক মরফিনযুক্ত

যে কোস পদার্থ, কৃত্রিম উপায়ে তৈরি আফিমের সমধর্মী দ্রব্য যথা পেথিডিন, হাইড্রোমরফিন, ডিমেরাল, বেটাপ্রোডাইন ইত্যাদি, কোকা পাতা এবং তা থেকে উদ্ভুত সব দ্রব্য, কোকেন এবং ০.১%-এর অধিক কোকেনযুক্ত যে কোন পদার্থ অথবা কোকেনের যে কোন ক্ষার, চারস হাশিশ, গাঁজাগাছ, গাঁজা বা ভাং সহযোগে প্রস্তুত যে কোন পদার্থ, এলকোহল এবং ০.৫%-এর অধিক এলকোহল যুক্ত যে কোন পদার্থ, রেক্টিফাইড স্পিরিট এবং তৎসহযোগে যে কোন ওষুধ বা তরল পদার্থ, বিয়ার, বারবিচুয়েটস, তাড়ি, পচুই, মেথিলেটেড স্পিরিট ইত্যাদি দ্রব্য মাদক হিসেবে পরিচিত।

ভারতের তৈরি ফেনসিডিল সিরাপ আমাদের দেশে মাদক হিসেবে পরিচিত। এলকোহল ব্যতীত অন্য কোন মাদকদ্রব্যের চাষাবাদ, উৎপাদন, প্রক্রিয়াজাতকরণ, বহন, পরিবহন, আমদানি-রপ্তানি, সরবরাহ, ক্রয়, বিক্রয়, ধারণ, সংরক্ষণ, গুদামজাতকরণ, প্রদর্শন প্রয়োগ ও ব্যবহার ওই আইনের ৯ ধারায় নিষিদ্ধ করা হয়েছে। আশির দশকের শুরুর দিকে বাংলাদেশে ব্যাপকভাবে মাদকের ব্যবহার ছড়িয়ে পড়ে ছিল। ওই সময় বিদেশ থেকে আসা মাদক সম্পর্কিত অপরাধের বিচার করা হতো ১৯৭৪ সালের বিশেষ ক্ষমতা আইন অনুসারে। সেখানে শুধু শুল্ক ফাঁকি দিয়ে চোরা পথে আমদানি নিষিদ্ধ পণ্য দেশে নিয়ে আসা বা নিজ হিফাজতে রাখার অপরাধেই আসামীর বিচার হতো। জনজীবনে ব্যাপক ক্ষতিসাধনকারী এই মাদক সংক্রান্ত অপরাধের জন্য ওই আইন পর্যাপ্ত ছিল না।

তাই মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ এবং মাদকাসক্তদের চিকিৎসা ও পুনর্বাসন কল্পে ১৯৯০ সালের মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইন প্রণয়ন করা হতো। ১৯৯০ সালের ২রা জানুয়ারি থেকে এই আইন কার্যকরি হয়। কুড়ি বছরেরও অধিককাল পথ পরিক্রমায় মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ হয়নি। এর প্রসার বেড়েই চলেছে। অভিভাবকরা আজ চিন্তিত তাদের সন্তানদের মাদকাসক্তি নিয়ে। আইন সঠিকভাবে প্রয়োগ হয়নি বলে উদ্বেগ উৎকন্ঠা বেড়েছে।

বিবিসি জানায়, দেশের কক্সবাজার সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিজিবি গত ১২ মার্চ অভিনব কায়দায় কোরআন শরীফের ভেতরে করে ১৫ হাজার ইয়াবা পাচারের সময় তিন ব্যক্তি কে আটক করে। গত বছর ১০ই মার্চ কক্সবাজার থেকে এক ব্যক্তিকে আটক করা হয় যার মাথার পাগড়ির মধ্যে ৬০০০ ইয়াবা বড়ি লুকানো ছিল। টেকনাফে ২ লাখ মানুষের মধ্যে ৮০ হাজার ব্যক্তি কোন না কোনভাবে ইয়াবা ব্যবসার সাথে জড়িত।

ফেন্সিডিল, গাঁজা, হেরোইন, ইয়াবা, প্যাথেডিনের ব্যবসা রমরমা। নারী পুরুষ উভয় শ্রেণীর মধ্যে মাদক সেবনের প্রবণতা বাড়ছে। ডিশ এন্টিনার যুগে বিদেশি সংস্কৃতির আগ্রাসন এ দেশের কোমলমতি ছাত্র ছাত্রীকে নেশাগ্রস্ত করার মানষিকতা তৈরী করছে। বিষ শরীরে ঢুকিয়ে নেশা করার মতো অভ্যাস গড়ে উঠছে তরুণ তরুণীদের মধ্যে।

এ ব্যাপারে প্রশাসন নির্বিকার। মাদকদ্রব্য বর্তমান বিশ্বে ভয়াবহ সামাজিক সমস্যা। প্রতি বছর ২৬ জুন আন্তর্জাতিক মাদক পাচার বিরোধী দিবস পালিত হয়। জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদ ১৯৮৭ সালের ৪২তম অধিবেশনে পৃথিবীকে মাদকের ভয়াবহতা হতে রক্ষা করার জন্য ২৬ জুন এই দিবস ঘোষণা করা হয়। মাদকদ্রব্য সমাজ জাতির জন্য বিষাক্ত বিষবাষ্প। আমাদের দেশের প্রচলিত মাদকগুলো হল-গাঁজা, ভাঙ, আফিম, তাড়ি, মদ, ঘুমের ওষধ, হেরোইন, বুপ্রেরনফিন, পেথিডিন, ফেনসিডিল, ইয়াবা, সিসা ইত্যাদি। বাংলাদেশে ইয়াবার মূল উৎস মিয়ানমার। সেখানে বিক্রি হয় কেজি কিংবা টনে। বাংলাদেশে আসার পর তা বিক্রি হয় কাট হিসেবে।

প্রতিকাটে থাকে ১০,০০০ পিস ইয়াবা। নানাভাবে চোরাচালান হয়। কলার মধ্যে আনা হয়। অপারেশন করে পেটের মধ্যে পর্যন্ত ঢুকিয়ে আনা হয়। ট্রাকের টায়ার কেটে আনা নেয়া করা হয়। এছাড়া গাড়ির হেডলাইটের ভেতরে ও চেয়ারের স্টিলের পাইপের ভিতরে এসব অবৈধ দ্রব্য আনা হয়। আবার মহিলাদের দ্বারা এই অপরাধ কার্য সংগঠিত করা হচ্ছে। মাদক পরিস্থিতি নিয়ে জাতিসংঘের একটি জরিপের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এ দেশে কমপক্ষে ৮৫ লাখ মানুষ সরাসরি মাদকাসক্ত। এদের মধ্যে ৮৭ ভাগ পুরুষ আর ১৩ ভাগ নারী। এক লাখের মত নারী মাদক ব্যবসার সাথে জড়িত। প্রভাবশালী ব্যক্তি থেকে শুরু করে নারী কিশোররা এই ব্যবসার সাথে জড়িত। আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর কাছে কোন সুনির্দিষ্ট পরিসংখ্যান না থাকলে ও বিভিন্ন সংস্থার কর্মকর্তাদের দেয়া তথ্য মতে অবৈধ মাদক আমদানির জন্য প্রতি বছর ১০ হাজার কোটি টাকার মুদ্রা পাচার হচ্ছে। কিন্তু ফ্যামেলি হেলথ ইন্টারন্যাশনালের পরিসংখ্যানে বলা হয়েছে, প্রতি বছর ভারত থেকে প্রায় ৩৪৭ কোটি টাকার বিভিন্ন ধরণের মাদক দ্রব্য দেশে আসে। এর মধ্যে ফেন্সিডিলই আসে ২২০ কোটি টাকার।

শতকরা ৬০ ভাগ মাদকাসক্ত মাদকের টাকা জোগাড় করতে গিয়ে জড়িয়ে পড়ে বিভিন্ন অপরাধমূলক কর্মকা-ে। মূলত: ভারত থেকে আসছে মাদকের বড় বড় চালান। বিজিবির একটি সূত্র জানায়, বিস্তীর্ণ সীমান্তের ৫১২টি পয়েন্টেকে মাদক আনা নেওয়ার কাজে ব্যবহার করে চোরাচালানীরা। এসব পয়েন্টে বিজিবির বিশেষ নজরদারী না থাকার কারণে রাতদিন আসছে হেরোইন; আফিম, প্যাথেড্রিন, ফেনসিডিল গাঁজাসহ বিভিন্ন ধরনের মাদক। সারাদেশে বর্তমানে প্রায়৩০ হাজার মাদক সংক্রান্ত মামলা ঝুলে আছে। ৮৫ শতাংশ ভেজাল। যার ফলে এসব ইয়াবা গ্রহণকারী মাদকাসক্তরা নানান ধরনের জটিল রোগে আক্রান্ত হচ্ছে। তার মধ্যে কিডনি, লিভার, ছাড়াও মস্তিষ্কের স্বাভাবিক কাজকর্ম নষ্ট হয়ে যাচ্ছে এমনকি ইদানিং জীবনহানি ঘটছে।

সম্পর্কিত সংবাদ

টি২০ ক্রিকেটে বাংলাদেশ: ব্যর্থতার ১১ কারন
Home Post

টি২০ ক্রিকেটে বাংলাদেশ: ব্যর্থতার ১১ কারন

সেপ্টেম্বর ১৭, ২০২২
ইয়াওমে আশুরা : স্বৈরাচারের বিরুদ্ধে দ্বীপ্ত শপথের দিন
Top Post

ইয়াওমে আশুরা : স্বৈরাচারের বিরুদ্ধে দ্বীপ্ত শপথের দিন

আগস্ট ৮, ২০২২
আমরা এক অসভ্য যুগে বসবাস করছি!
Home Post

আমরা এক অসভ্য যুগে বসবাস করছি!

আগস্ট ৪, ২০২২

Discussion about this post

জনপ্রিয় সংবাদ

  • বসুন্ধরার মালিকের পরিবারে চাঞ্চল্যকর যত খুন

    বসুন্ধরার মালিকের পরিবারে চাঞ্চল্যকর যত খুন

    0 shares
    Share 0 Tweet 0
  • মামুনুল হক স্ত্রীসহ লাঞ্ছনার ঘটনা ক্ষমতাসীনদের পূর্ব পরিকল্পিত

    0 shares
    Share 0 Tweet 0
  • শাহ আব্দুল হান্নান : একটি নাম একটি ইতিহাস

    0 shares
    Share 0 Tweet 0
  • মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে নয় বিরোধিতা করে জেলে গিয়েছিল মোদি

    0 shares
    Share 0 Tweet 0
  • আ.লীগ নেতারাই পূজা মন্ডপে কোরআন রেখেছিল

    0 shares
    Share 0 Tweet 0

সাম্প্রতিক সংবাদ

মন্ত্রীর আশ্রয়ে সোনা চোরাচালান

মন্ত্রীর আশ্রয়ে সোনা চোরাচালান

মার্চ ২৫, ২০২৩
আজ শহীদ শায়খ আহমেদ ইয়াসিনের শাদাতবার্ষিকী

আজ শহীদ শায়খ আহমেদ ইয়াসিনের শাদাতবার্ষিকী

মার্চ ২২, ২০২৩
নতুন কারিকুলামের নামে মাউশি’র তামাশা

নতুন কারিকুলামের নামে মাউশি’র তামাশা

মার্চ ১৪, ২০২৩
এমন জনপ্রিয়তার দৃষ্টান্ত বাংলাদেশে অদ্বিতীয়, বিশ্বে বিরল

এমন জনপ্রিয়তার দৃষ্টান্ত বাংলাদেশে অদ্বিতীয়, বিশ্বে বিরল

ফেব্রুয়ারি ২৮, ২০২৩
পিলখানা ট্রাজেডি, অন্তরালের কিছু কথা!

পিলখানা ট্রাজেডি, অন্তরালের কিছু কথা!

ফেব্রুয়ারি ২৫, ২০২৩
  • Privacy Policy

© Analysis BD

No Result
View All Result
  • মূলপাতা
  • বিশেষ অ্যানালাইসিস
  • রাজনীতি
  • জাতীয়
  • আন্তর্জাতিক
  • মতামত
  • কলাম
  • ব্লগ থেকে

© Analysis BD