অ্যানালাইসিস বিডি ডেস্ক
সারাদেশে লোডশেডিং ও জ্বালানি অব্যবস্থাপনার বিরুদ্ধে কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে ভোলায় বিএনপির বিক্ষোভ মিছিল ও প্রতিবাদ সমাবেশে গুলি, টিয়ার শেল ও লাঠিচার্জে মেতে উঠেছে পুলিশ। এতে আবদুর রহিম নামে স্বেচ্ছাসেবক দলের একজন নিহত হয়েছে। পুলিশের হামলায় আহত হয়েছেন কমপক্ষে ৫০ জন বিক্ষোভকারী।
রোববার (৩১ জুলাই) সকালে ভোলার মহাজনপট্টিতে জেলা বিএনপি কার্যালয়ের সামনে সমাবেশ শেষে বিক্ষোভ মিছিল শুরু করে দলটি। বিএনপির পূর্ব ঘোষিত কর্মসূচি ঠেকাতে সকাল থেকেই দলটির কার্যালয়ের সামনে মোতায়েন করা হয় দাঙ্গা পুলিশ। এরই মাঝে বিএনপির নেতা-কর্মীরা মিছিল বের করলে বাধা দেয় আওয়ামী ফ্যাসিবাদ প্রতিষ্ঠায় সহায়ক পুলিশ বাহিনীর সদস্যরা। এক পর্যায়ে কর্মীদের সঙ্গে শুরু হয়ে তাদের বাকবিতণ্ডা ও ধাক্কাধাক্কি।
মিছিলের শুরুতে হঠাৎ করেই তাদের ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ে পুলিশ। বেধড়ক লাঠিচার্জ করে ছত্রভঙ্গ করে দেয় বিক্ষোভকারীদের। বিএনপির নেতা-কর্মীরা এসময় ফের জড়ো হবার চেষ্টা করলে তাদের ওপর টিয়ার শেল নিক্ষেপ করে পুলিশ। এতে দুপক্ষেই শুরু হয় ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া। পুলিশের লাঠিচার্জ ও গুলিতে অন্তত ৫০ জনের বেশি আহত হয়েছে। এদের মধ্যে গুলিবিদ্ধ হয়ে আহত ২০ জন। আহতদের ভোলা সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির প্রশিক্ষণ বিষয়ক সম্পাদক এবিএম মোশাররফ হোসেন জানান, সারাদেশে লোডশেডিং ও জ্বালানি অব্যবস্থাপনার বিরুদ্ধে কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে জেলায় ভোলায় বিএনপির বিক্ষোভ মিছিল ও প্রতিবাদ সমাবেশে বিনা উস্কানিতে লাঠিচার্জ, টিয়ার শেল নিক্ষেপ ও গুলি করেছে পুলিশ।
পুলিশের গুলিতে আবদুর রহিম নামে একজন নিহত ও কমপক্ষে ৫০ জন বিক্ষোভকারী আহত হয়েছেন বলে দাবী করেন তিনি। ভোলার সমাবেশে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সাবেক ছাত্রনেতা এবিএম মোশাররফ হোসেন।
ঘটনার বিবরণ দিয়ে তিনি গণমাধ্যমকে বলেন, বাংলাদেশের প্রতিটি জেলায় লোডশেডিং ও জ্বালানি তেলের অব্যবস্থাপনার প্রতিবাদে বিএনপির বিক্ষোভ কর্মসূচি পালিত হচ্ছে। ভোলায় আমি ছিলাম। এখানে বিক্ষোভ শেষে একটি মিছিল হওয়ার কথা ছিল। সমাবেশস্থলে পুলিশ তাদের মতো দায়িত্ব পালন করেছে নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে। সমাবেশ শেষে আমাদের মিছিল করার কথা আগে থেকেই বলা ছিল। কিন্তু সমাবেশ শেষ করার সঙ্গে সঙ্গে পুলিশ অতর্কিত হামলা করে।
এই বিষয়ে এবিএম মোশাররফ হোসেন বলেন, শান্তিপূর্ণভাবে মিছিল শুরু হয়েছে। আমি মিছিলের একেবারে সামনে ছিলাম। আমাকেও তারা মেরেছে। এমন কেউ নেই যাকে মারেনি।
তিনি আরও বলেন, আমাদের এমন অবস্থা করেছে যে সামনে যাওয়ার আর কোনো সুযোগই পাইনি।
পুলিশের হামলা করার কারণ জানতে চাইলে তিনি বলেন, সমাবেশে অন্তত ৩ থেকে ৪ হাজার নেতা-কর্মী উপস্থিত হয়েছিলেন। হয়তো এত উপস্থিতি দেখেই পুলিশ লাঠিচার্জ ও গুলি করেছে।
বিএনপির দলীয় কার্যালয়ের সামনেই এই সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। সমাবেশ শেষে বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে বের হওয়ার মুহূর্তেই পুলিশ লাঠিচার্জ শুরু করে জানিয়ে তিনি বলেন, লাঠিচার্জের সঙ্গে তারা টিয়ার গ্যাস ছোড়ে এবং সরাসরি গুলি করে। গুলিতে সেখানেই একজন মারা যান। তার নাম আব্দুর রহিম। তিনি স্বেচ্ছাসেবক দলের ভোলা সদর থানা কমিটির সদস্য। তিনি আরো জানান, ভোলা ছাত্রদলের সভাপতির অবস্থাও খুবই খারাপ, আল্লাহ জানেন কী হয়। এ ছাড়াও, স্বেচ্ছাসেবক দলের সাধারণ সম্পাদকসহ আরও বেশ কয়েকজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। পুলিশ ছররা গুলি চালিয়েছে, শতাধিক নেতা-কর্মীর গুলি লেগেছে।
Discussion about this post