অতিবৃষ্টি বা পাহাড়ি ঢলে সৃষ্ট বন্যার ফলে বাংলাদেশের উত্তর-পূর্বে সিলেট অঞ্চলে হাওরের ফসল নষ্ট হওয়ার খবর নতুন নয়। তবে এমন বন্যার পানিতে মাছ, ব্যাঙ ও হাঁসের মৃত্যুর ঘটনাটি জনমনে বেশ আতঙ্ক সৃষ্টি করেছে। তাই এর যথাযথ কারণ খোঁজা জরুরি।
বাংলাদেশের সীমান্ত থেকে মাত্র তিন কিলোমিটার দূরে ভারতের মেঘালয় রাজ্যে রয়েছে ওপেনপিট ইউরেনিয়াম খনি। বিশেষজ্ঞদের আশঙ্কা ইউরেনিয়ামের বিষক্রিয়ায় বাংলাদেশ-ভারত সীমান্তে সুনামগঞ্জ জেলায় অবস্থিত ‘রামসার সাইট’-খ্যাত টাঙ্গুয়ার হাওরের পানিতে জলজপ্রাণীর এমন অস্বাভাবিক মৃত্যু ঘটতে পারে।
গত মার্চে আকস্মিক বৃষ্টি ও মেঘালয় থেকে আসা পাহাড়ি ঢলের ফলে সুনামগঞ্জ এবং মৌলভীবাজারের হাওর এলাকা প্লাবিত হওয়ায় সেইসব অঞ্চলে ধান নষ্ট হয়। চাষিদের ফসল নষ্ট হওয়ার পর হাওরের মাছ, ব্যাঙ এবং এমনকি, হাঁসের মড়ক তাঁদের আতঙ্ককে বহুগুণ বাড়িয়ে দেয়।
এমন অবস্থায়, এশিয়ার দুটি বৃহৎ জলাশয় হাকালুকি ও টাঙ্গুয়ার হাওরের জলজপ্রাণীর মৃত্যুর সঙ্গে ভারতের ওপেনপিট ইউরেনিয়াম খনির কোন সম্পর্ক রয়েছে কী না তা খতিয়ে দেখা প্রয়োজন।
গত ডিসেম্বরে মেঘালয়ের স্থানীয় খাসি জনগোষ্ঠী সেই এলাকার রানিকর নদীর পানির রঙ নীল থেকে বদলে সবুজ হয়ে যেতে দেখেন। এর প্রেক্ষিতে, গত ১৭ ফেব্রুয়ারি খাসি স্টুডেন্ট ইউনিয়ন (কেএসইউ) একটি সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে যথাযথ কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করার চেষ্টা করে। সংগঠনটি সেই নদীর মাছ মরে যাওয়ার বিষয়টিও উল্লেখ করে। এমনকি, জলজপ্রাণীহীন নদীটি এখন মৃত-প্রায় বলেও সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়।
খাসি নেতা মারকনি থঙনি সাংবাদিকদের বলেন, “আমাদের সন্দেহ ইউরেনিয়াম খনি খননের ফলে এর থেকে নিঃসৃত ইউরেনিয়াম পানিতে মিশে নদীর পানির রঙ বদলে গেছে এবং নদীর মাছ মরে গেছে।”
এদিকে, মেঘালয় রাজ্য সরকার বলছে তাদের দেশে মাছ মারা যাওয়ার ঘটনাটির সঙ্গে ইউরেনিয়াম খনির কোনো সম্পর্ক নেই। রাজ্যের উপ-মুখ্যমন্ত্রী বিন্দো এম লানোঙ বলেন, “যদি তাই হতো তাহলে অন্যান্য জলজ প্রাণীগুলোও মারা যেত।”
উল্লেখ্য, এই নদীটি সুনামগঞ্জের তাহেরপুর উপজেলার জাদুকাটা নদী থেকে মাত্র তিন কিলোমিটার দূরে।
সূত্র: ডেইলি স্টার
Discussion about this post