অ্যানালাইসিস বিডি ডেস্ক
দেশে এখন ধর্ষণের ঘটনা আশঙ্কাজনক হারে বেড়ে গেছে। স্কুল-কলেজের ছাত্রী, গার্মেন্টসের নারী শ্রমিক, চাকরিজীবী নারী এমনকি গৃহবধূরাও আজ তাদের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, কর্মস্থল ও গৃহে নিরাপদ নয়। বখাটেদের উৎপাতে রাস্তাঘাটেও নিরাপদে চলাফেরা করতে পারে না। নিজেদের মান-সম্মান ও ইজ্জত রক্ষা নিয়ে নারীদের দিন কাটে উদ্বেগ-উৎকণ্ঠায়। এমন কোনো দিন নেই যে আজ একাধিক ধর্ষণের ঘটনা ঘটেনি। প্রতিদিনই কয়েকটি ধর্ষণের ঘটনা ঘটছে। নারীদের নিরাপত্তা দিতে সরকার শতভাগ ব্যর্থ হয়েছে বলেই মনে করছেন বিশিষ্টজনেরা।
কিছু দিন আগে ময়মনসিংহে হালিমা নামে পুলিশের একজন নারী কনস্টেবলকে রুমে ডেকে নিয়ে জোরপূর্বক ধর্ষণ করে পুলিশের এক এসআই। থানার ওসির কাছে অভিযোগ দিলেও ওসি তা গ্রহণ করেনি। পরে বিচার না পেয়ে কনস্টেবল হালিমা আত্মহত্যা করেছে।
এরপর গাজীপুরের শ্রীপুরে হযরত আলী নামের একজনের পালিত মেয়েকে ধর্ষণের চেষ্টা করে ফারুক নামে এক বখাটে। থানায় অভিযোগ করার পরও পুলিশ কোনো তৎপরতা দেখায়নি। সমাজপতিদের দ্বারে দ্বারে ঘুরেও বিচার পায়নি হযরত আলী। বিচার না পেয়ে হযরত আলী তার মেয়েকে নিয়ে ট্রেনের নিচে ঝাঁপ দিয়ে আত্মহত্যা করে। এঘটনায় সারাদেশে তোলপাড় সৃষ্টি হয়ে যায়।
এদিকে, গাজীপুরের ঘটনার রেশকাটতে না কাটতেই রাজধানীতে বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই ছাত্রীকে রুমপার্টিতে নিয়ে জোরপূর্বক ধর্ষণের ঘটনা প্রকাশিত হয়েছে। দুই ছাত্রী বনানী থানায় মামলা করতে গেলেও মামলা নেয়নি পুলিশ। ৪৮ ঘণ্টা যুদ্ধ করার পর এক পর্যায়ে পুলিশ মামলা নেয়। এছাড়া সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সমালোচনার ঝড় উঠার পর পুলিশ মামলা নিতে বাধ্য হয়। আর ধর্ষক শাফাতের বাবা বলেছেন, ওই রাতে যদি কিছু হয়েও থাকে তাহলে সমঝোতার ভিত্তিতেই হয়েছে।
ধর্ষকের বাবা আপন জুয়েলার্সের মালিক দিলদার আহমেদ খুব প্রভাবশালী। জানা গেছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের উচ্চপর্যায়ে তার যোগাযোগ রয়েছে। এজন্যই মামলা নিতে পুলিশ টালবাহানা করেছে।
চাপে পড়ে মামলা নিলেও ঘটনার সঠিক তদন্ত করতে গড়িমসি করছে পুলিশ। ধর্ষক শাফায়াত তার নিজ বাসাতেই অবস্থান করছে। কিন্তু, পুলিশ তাকে এখনও পর্যন্ত এ বিষয়ে কোনো জিজ্ঞাসাবাদ করেনি। মোটা অঙ্কের টাকা খেয়ে পুলিশ ধর্ষক শাফায়াতকে বাঁচানোর চেষ্টা করছে বলেও অভিযোগ উঠেছে।
আর সচেতন মানুষ মনে করছেন, সরকারের প্রভাবশালী মহলের ইশারা থাকার কারণেই পুলিশ শাফায়াতকে জিজ্ঞাসাবাদ করছে না। সরকারের সঙ্গে যদি স্বর্ণ ব্যবসায়ী দিলদার হোসেনের সম্পর্ক না থাকে তাহলে তার এত খুটির জোর কোথায়? রাষ্ট্র কি তার চেয়ে অক্ষম? কোন শক্তির বলে ধর্ষক শাফায়াত পার পেতে যাচ্ছে? এমন প্রশ্ন এখন সবার মুখে মুখে।
Discussion about this post