মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে বিপুলসংখ্যক মানুষের প্রাণহানিকে গণহত্যা বলছে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়। আজ রোববার বিকেলে পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলীর সঙ্গে ব্রিফিংয়ে বিভিন্ন দেশের কূটনীতিকেরা এ অভিমত দিয়েছেন। ব্রিফিং শেষে পররাষ্ট্রমন্ত্রী সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান।
দুটি গ্রুপকে পৃথকভাবে ব্রিফিং করেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী। যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত দেশ, তুরস্কের কূটনৈতিক এবং জাতিসংঘের বিভিন্ন সংস্থার প্রতিনিধিরা প্রথম গ্রুপে ও ওআইসি সদস্যভুক্ত বিভিন্ন দেশের কূটনীতিকেরা দ্বিতীয় গ্রুপে এ ব্রিফিংয়ে উপস্থিত ছিলেন।
ব্রিফিং শেষে সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব দেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের মতো বাংলাদেশও মিয়ানমারের মানুষের প্রাণহানিকে গণহত্যা মনে করে কি না, জানতে চাইলে মাহমুদ আলী বলেন, ‘আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের মতো আমরাও বলছি।’ অবশ্য রাখাইনে সহিংসতায় কতজন মারা গেছেন, জানতে চাইলে তিনি কোনো সংখ্যার কথা উল্লেখ করেননি।
তবে সাংবাদিকদের সঙ্গে ব্রিফিংয়ের আগে বাংলাদেশে নিযুক্ত ভ্যাটিকানের রাষ্ট্রদূত আর্চবিশপ জর্জ কোচেরি সাংবাদিকদের বলেছিলেন, ব্রিফিংয়ে বিভিন্ন সূত্রের উদ্ধৃতি দিয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী রাখাইনে রোহিঙ্গাদের ওপর সহিংসতায় প্রায় তিন হাজার লোক প্রাণ হারিয়েছে বলে জানিয়েছেন।
মাহমুদ আলী সাংবাদিকদের জানান, ‘আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় বিপুলসংখ্যক রোহিঙ্গাকে আশ্রয় দেওয়ায় বাংলাদেশের প্রশংসা করেছে। এ ছাড়া সবাই একবাক্যে আনান কমিশনের সুপারিশ বাস্তবায়নের ওপর জোর দিয়েছে।’
পররাষ্ট্রমন্ত্রী জানান, ‘নতুন আসা তিন লাখ রোহিঙ্গাসহ এই মুহূর্তে বাংলাদেশে সাত লাখ রোহিঙ্গা আশ্রয় নিয়েছে। মিয়ানমার থেকে নতুন করে আসা এসব লোকজনের জন্য প্রাথমিকভাবে আশ্রয়, মানবিক সহায়তা নিশ্চিত করার ওপর বাংলাদেশ জোর দিচ্ছে।’
আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় বাংলাদেশকে কীভাবে সহায়তা করতে চায়? এ বিষয়ে জানতে চাইলে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘রাজনৈতিক ও মানবিক দুই ক্ষেত্রেই সহযোগিতার আগ্রহ দেখিয়েছে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়। ইতিমধ্যে বেশ কয়েকটি দেশ বাড়তি তহবিল দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে। জাতিসংঘের মাধ্যমে এ তহবিল সমন্বয় করা হবে।’
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, আগামীকাল সোমবার বিকেলে এশিয়ার বিভিন্ন দেশের কূটনীতিকদের ব্রিফিং করবেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী।
সূত্র: প্রথম আলো
Discussion about this post