অ্যানালাইসিস বিডি ডেস্ক
মিয়ানমারের রাখাইনে সংখ্যালঘু রোহিঙ্গা মুসলিমদের ওপর পৈশাচিক ও নৃসংশ কায়দায় গণহত্যা ও নির্যাতন চালাচ্ছে দেশটির সরকারি বাহিনী। তারা বাড়িঘর আগুনে পুড়িয়ে দিয়ে রোহিঙ্গাদেরকে দেশ থেকে বের করে দিচ্ছে। নির্মম নির্যাতনের শিকার হয়ে রোহিঙ্গারা প্রাণ বাঁচাতে সীমান্ত পাড়ি দিয়ে বাংলাদেশে আসছে। সুচির এসব বর্বরোচিত হত্যা-নির্যাতনের ঘটনা সারা বিশ্বে তোলপাড় সৃষ্টি করেছে। সুচির প্রতি ক্ষোভ ও নিন্দা প্রকাশ করছে আন্তর্জাতিক মহল। সুচির শান্তির নোবেল কেড়ে নেয়ারও দাবি উঠেছে।
রোহিঙ্গাদের ওপর হত্যা-নির্যাতন ও তাদের বাড়িঘর আগুন দিয়ে পুড়িয়েই ক্ষ্যান্ত হয়নি মিয়ানমার বাহিনী। ইতিমধ্যে তারা বাংলাদেশের আকাশসীমাও কয়েকদফা লঙ্ঘন করেছে। এমনকি সীমান্তের ওপার থেকে বাংলাদেশের ভেতরে বসতবাড়ি লক্ষ্য করে গুলিও ছুঁড়েছে।
মিয়ানমার বাহিনীর এসব কর্মকাণ্ডে বাংলাদেশের সকল শ্রেণি-পেশার মানুষ ক্ষুব্ধ হয়ে উঠেছে। জনগণের কাছ থেকে পাল্টা জবাবের দাবি উঠলেও সরকার একটি প্রতিবাদলিপি পাঠিয়েই চুপ করে বসে আছে।
এসবের মধ্যেই চাল কিনতে মিয়ানমার যান খাদ্যমন্ত্রী কামরুল ইসলাম। তাও আবার সঙ্গে নিয়ে গেছেন তার স্ত্রীকেও। যেখানে দেশটির নেত্রী সুচি ও তার বাহিনীর বিচারের দাবিতে সারাদেশ উত্তাল, সেখানে খাদ্যমন্ত্রীর মিয়ানমার সফর নিয়ে সারাদেশব্যাপী সমালোচনার ঝড় উঠেছে। রাজনৈতিক দলগুলোও এনিয়ে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করছে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও চলছে কঠোর সমালোচনা।
সবচেয়ে লক্ষণীয় বিষয় হলো, খাদ্যমন্ত্রী কামরুল ইসলাম মিয়ানমার থেকে ফিরে রোববার জাতীয় সংসদে বলেছেন, ৩ লাখ টন চাল আনার চুক্তি হয়েছে মিয়ানমারের সঙ্গে। প্রথম পর্যায়ে ১ লাখ ২০ হাজার টন চাল আসবে। পর্যায়ক্রমে বাকীগুলো আসবে।
তবে খাদ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, কথা ছিল মিয়ানমার সরকারের সঙ্গে বছরে ১০ লাখ টন চাল আমদানির চুক্তি হবে। কিন্তু, খাদ্যমন্ত্রী অ্যাডভোকেট কামরুল ইসলাম চুক্তি বা সমঝোতা স্মারক (এমওইউ) স্বাক্ষর না করেই প্রতিনিধি দল নিয়ে ফিরে এসেছেন। চুক্তি স্বাক্ষর বিষয়টি খাদ্যমন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে ধামাচাপা দেয়ার চেষ্টা হচ্ছে বলেও জানা গেছে।
জানা গেছে, রোববার সংসদে দেয়া খাদ্যমন্ত্রী কামরুল ইসলামের বক্তব্যে খাদ্যমন্ত্রণায়ে তোলপাড় সৃষ্টি হয়ে গেছে। এনিয়ে এখন মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মধ্যে কানাঘুষা চলছে।
Discussion about this post