ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে (ঢাবি) বেশ কয়েকটি বিভাগে ভর্তির ক্ষেত্রে ইংরেজি ও বাংলা বিষয়ে ২০০ নম্বরের শর্ত ছিলো। মাদ্রাসা বোর্ড থেকে দাখিল ও আলিম পরীক্ষায় উত্তীর্ণদের ক্ষেত্রে এর পূর্বে সেই শর্ত পূরণ সম্ভব ছিল না। তবে চলতি বছর মাদ্রাসা শিক্ষার্থীদের সেই শর্ত পূরণ হয়েছে। তা সত্ত্বেও ঢাবির ‘খ’ ইউনিটভুক্ত কলা অনুষদের ভর্তি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ মাদ্রাসা শিক্ষার্থীদের চয়েস ফরমে অনেকগুলো বিভাগ আসছে না।
গত ২৫ সেপ্টম্বর খ ইউনিটের ফল প্রকাশ হয় এবং ২৮ সেপ্টেম্বর থেকে উত্তীর্ণ শিক্ষার্থীদের যোগ্যতা (নম্বর) অনুযায়ী চয়েস ফরম পূরণ করা শুরু হয়। কিন্তু বিভাগগুলোর আরোপিত শর্ত পূরণ সত্ত্বেও মাদরাসা ছাত্রদের অনেক সাবজেক্ট চয়েস ফরমে আসছে না বলে তারা অভিযোগ করছেন।
জানা যায়, এসএসসি ও এইচএসসি সমমানের পরীক্ষায় অন্তত ১৩ বিভাগে ২০০ মার্কের ইংরেজি না থাকার জন্য মাদ্রাসার শিক্ষার্থীদের এসব বিভাগে ভর্তির ক্ষেত্রে অঘোষিত নিষেধাজ্ঞা ছিলো। কিন্তু ২০১৫ সাল হতে মাদ্রাসা বোর্ড শিক্ষার্থীদের জন্য দাখিল ও আলিম পরীক্ষায় ২০০ নম্বরের ইংরেজি ও বাংলা সিলেবাসে অন্তর্ভুক্ত করে। ফলে ঢাবির এসব বিভাগে ভর্তির ক্ষেত্রে মাদ্রাসা শিক্ষার্থীদের ভর্তিতে আর কোনো বাধা থাকার কথা নয়।
নাঈমুর রহমান নামে এক মাদ্রাসা শিক্ষার্থী ‘খ’ ইউনিটে ১১৮ তম হয়েছে। ভর্তি পরীক্ষায় বাংলা ও ইংরেজি অংশে নম্বর পেয়েছেন যথাক্রমে ১৭.১ ও ২০.৭। চয়েস ফরমে কলা অনুষদের সবগুলো সাবজেক্ট তার আসার কথা। কিন্তু ইংরেজি, অর্থনীতি, আন্তর্জাতিক সম্পর্ক, গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা, উইমেন অ্যান্ড জেন্ডার স্টাডিজ এবং ভাষাতত্ত্বের মতো সাবজেক্টগুলো আসেনি। আগে এই ছয়টি বিষয়ে ভর্তির জন্য উচ্চমাধ্যমিক বা সমমানের পরীক্ষায় বাংলা ও ইংরেজিতে ২০০ নম্বরের শর্ত ছিলো। আর ভর্তি পরীক্ষায় এসব বিভাগের জন্য শর্ত বাংলায় ১৪ এবং ইংরেজিতে ১৬ নম্বর পেতে হবে।
তোফায়েল নামের একজন ‘খ’ ইউনিটে মেধাক্রমে নবম স্থানে আছেন। ভর্তি পরীক্ষায় বাংলায় ১৯.৫ ও ইংরেজিতে ২৫.৮০ নম্বর পেয়েছেন তিনি। কিন্তু তার চয়েস ফরমে বাংলা ও ইংরেজি বিভাগ আসছে না।
ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী নাঈমুর ইত্তেফাককে বলেন, আমি মাদরাসার ছাত্র বলে কী আমি আমার অধিকার শিক্ষা থেকে বঞ্চিত হবো? ঢাবির সব শর্ত পূরণ করেও কেন আমাকে সব বিভাগে ভর্তির দেয়া হবে না?
অভিযোগ বিষয়ে কলা অনুষদের ডিন আবু মো. দেলওয়ার হোসেন বলেন, ‘হয়তো তাদের কোনো না কোনো সমস্যা রয়েছে। অনেকে পড়ালেখার মাঝে গ্যাপ দেয়। তাদের হয়তো সমস্যা হচ্ছে।’ কিন্তু নিয়মিত শিক্ষার্থীদেরও এমন হচ্ছে জানালে তিনি বলেন, ‘আমি কেন্দ্রীয় ভর্তি নিয়ন্ত্রণ অফিসে যোগাযোগ করে বিষয়টি দেখছি।’
এ বিষয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান বলেন, ‘আমি খোঁজ নিচ্ছি।’
সূত্র: ইত্তেফাক
Discussion about this post