সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি জয়নুল আবেদীন দাবি করেছেন, ছুটিতে যাওয়া প্রধান বিচারপতির সঙ্গে বিএনপি সমর্থক আইনজীবীদের দেখা করতে বাধা দেওয়ার মধ্যে দিয়েই প্রমাণ হয়েছে, তিনি স্বেচ্ছায় ছুটিতে যাননি, তাকে বাধ্য করা হয়েছে।
শনিবার দুপুরে সমিতির মিলনায়তনে এক সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি করেন তিনি।
জয়নুল আবেদীন বলেন, “গত দুই দিন প্রধান বিচারপতির সঙ্গে আইনমন্ত্রী, প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টাসহ সরকারি বিভিন্ন কর্মকর্তাগণ সাক্ষাৎ করেছেন। কিন্তু আমাদের সাক্ষাত করতে বাধা প্রদান করা হয়।
“এতেই প্রমাণ হয় প্রধান বিচারপতি স্বেচ্ছায় ছুটিতে যাননি, তাকে বল প্রয়োগ করে ছুটিতে পাঠানো হয়েছে। তারা প্রধান বিচারপতিকে তাদের নিয়ন্ত্রণে রেখেছে। তিনি অন্তরীণ। একমাত্র সরকার নির্দেশিত ব্যক্তিরাই প্রধান বিচারপতির সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে পারবে, অন্যরা নয়।”
শুক্রবার বিকালে প্রধান বিচারপতি এস কে সিনহার সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে যাওয়ার পথে পুলিশি বাধার বর্ণনা তিনি সংবাদ সম্মেলনে তুলে ধরেন লিখিত বক্তব্যে।
ছুটি চেয়ে প্রধান বিচারপতির লেখা আবেদনটি নিয়েও প্রশ্ন তোলেন জয়নুল আবেদীন।
“প্রধান বিচারপতি ছুটির যে কথিত চিঠি প্রকাশ করেছে, সেই চিঠিতে অনেক জায়গায় বানান ভুল রয়েছে। চিঠি নিয়ে দেশের বিভিন্ন মহল থেকে সন্দেহ প্রকাশ করেছে, করছে। প্রধান বিচারপতির মত একজন দায়িত্বশীল ব্যক্তি কিভাবে ৫টি বানান ভুল থাকা চিঠিতে স্বাক্ষর করতে পারেন এমন প্রশ্নও তুলেছেন।”
জয়নুল আবেদীনের আগে সমিতির সম্পাদক মাহবুব উদ্দিন খোকন তার বক্তব্যে বলেন, “দেশের প্রধান বিচারপতিকে নিয়ে যা চলছে তা পৃথিবীর ইতিহাসে খুব বিরল। আইনমন্ত্রী বলেছেন তিনি অসুস্থ, মারাত্মক অসুস্থ, ক্যান্সারের রোগী। এজন্য তিনি এক মাসের ছুটি চেয়েছেন।
“প্রথম দুই-তিনদিন এলাও করেনি, পরে এলাও করেছে। এলাও করেছে বলেই (পৃধান বিচারপতি) ঢাকেশ্বরী মন্দিরে পূজা দিতে যেতে পেরেছিলেন। অস্ট্রেলিয়ার হাই কমিশনে যাওয়া এলাও করেছে সরকার। এতে কি প্রমাণ হয়েছে? প্রমাণ হয়েছে প্রধান বিচারপতি অসুস্থ নন। উনি পুরোপুরি সুস্থ।”
আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউটর রানা দাশগুপ্ত ও আইনজীবী সুব্রত চৌধুরীকে উদ্ধৃত করে খোকন বলেন, “হিন্দু সম্প্রদায়ের নেতা রানা দাশ গুপ্তের সঙ্গে আমার দেখা হয়েছে। রানা দাশগুপ্ত মিডিয়াকে বলেছেন, প্রধান বিচারপতি সুস্থ বলেই তার কাছে প্রতীয়মান হয়েছে। সুব্রত চৌধুরীর সঙ্গে দেখা হয়েছে, তিনিও বলেছেন তিনি সুস্থ।
“একটা প্রশ্ন করি সরকারকে- এত মারাত্মক অসুস্থতা নিয়ে প্রধান বিচারপতি ছুটিতে গেলেন, আজকে পাঁচদিন হয়ে গেল, একজন অসুস্থ মানুষ বাসায় থাকবে না হাসপাতালে থাকবে? হাসপাতালেই তো থাকার কথা ছিল নাকি? এতেই প্রমাণিত হয় তিনি সুস্থ, সরকার তাকে জিম্মি করে ছুটিতে যেতে বাধ্য করেছে।”
প্রধান বিচারপতির সঙ্গে সাক্ষাতে বাধা দেওয়ার প্রতিবাদ এবং বিচার বিভাগের ভাবমূর্তি রক্ষায় রোববার দেশের সকল জেলা বারে মানবব্ন্ধন ও প্রতিবাদ কর্মসূচি ঘোষণা করা হয় সংবাদ সম্মেলনে।
সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত সমিতির সহ-সভাপতি সহ উম্মে কুলসুম রেখা, বারের সদস্য আয়শা আক্তার, শামীমা সুলতানা দীপ্তি।
সূত্র: বিডিনিউজ
Discussion about this post