দৈনিক আমার দেশ সম্পাদক মাহমুদুর রহমান প্রায় পাঁচ বছর ধরে পত্রিকাটি বন্ধ করে রাখায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। তিনি বলেন, মহামান্য হাইকোর্ট আমাদের পক্ষে রুল জারি করলেও রুলের নিষ্পত্তি না হওয়ায় আমারদেশ প্রকাশে বিলম্ব হচ্ছে। এর ফলে পত্রিকার পাঁচশতাধিক সাংবাদিক কর্মচারী চাকুরীহীন হয়ে মানবেতর জীবন যাপন করছেন। পত্রিকা পরিচালনা এবং সম্পাদনা ব্যতিত আমার অন্য কোন পেশা নেই।
আজ শুক্রবার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির (ডিআরইউ) সাগর রুনি মিলনায়তনে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি পত্রিকার সর্বশেষ পরিস্থিতি তুলে ধরেন। সংবাদ সম্মেলন পত্রিকার নির্বাহী সম্পাদক সৈয়দ আবদাল আহমদ, সিনিয়র সহকারী সম্পাদক আবদুল হাই শিকদার, বার্তা সম্পাদক জাহেদ চৌধুরী, নগর সম্পাদক এম আবদুল্লাহ, বিএফইউজের সাবেক সভাপতি রুহুল আমিন গাজী, সাবেক মহাসচিব এম এ আজিজ সহ সাংবাদিক নেতৃবৃন্দ এবং পত্রিকার সাংবাদ কর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
মাহমুদুর রহমান বলেন, বাংলাদেশে ‘ফ্রি, ফেয়ার এন্ড ফাংশনাল জুডিশিয়ারি’ না থাকলেও অনন্যোপায় হয়ে আমরা আদালতের কাছেই গেছি। রিট দায়ের করেছি। আদালতকে বলেছি ছাপাখানায় তালা দিয়ে রাখার কোন এখতিয়ার পুলিশের নেই। পাঁচ বছর ধরে যে মামলাটি চার্জশিট দেয়া হয়নি, সেই মামলাকে উপলক্ষ করে আমারদেশের মত একটি অতি জনপ্রিয় জাতীয় দৈনিক এভাবে বন্ধ করে রাখা যায় না। একটি ব্যক্তি মালিকানাধীন স্থাবর সম্পত্তি কোন আইনে পুলিশ এভাবে বছরের পর বছর দখল করে রাখতে পারে না। কেন আমার দেশ পত্রিকার ছাপাখানার তালা খুলে মালিককে তা বুঝিয়ে দেয়া হচ্ছে না।
তিনি জানান আমারদেশ পত্রিকার যে ঋণ বর্তমান মালিক পক্ষ কোন দিন গ্রহণ করেননি, সেই ঋণের দাবিতে একটি বেসরকারী ব্যাংককে দিয়ে ক্ষমতাসীন মহল বেআইনিভাবে আমাদের বন্ধ ছাপাখানা নিলামে উঠানোর অপচেষ্টা চালাচ্ছে। আদালত কত বিষয়ে রুল ও আদেশ দিচ্ছেন। কিন্তু আমারদেশ এর রুলটি নিস্পত্তি করে কেন বিপুল সাংবাদিক কর্মচারীর রুটি-রুজির সুযোগ করে দিচ্ছে না বুঝে আসে না।
সংবাদ সম্মেলনে তিনি জানান ২০১৩ সালের ১১ এপ্রিল ক্ষমতাসীন সরকার কর্তৃক দ্বিতীয় দফায় পত্রিকাটি আক্রমণের শিকার হয়। আজ দীর্ঘ চার বছর সাতমাস ধরে পত্রিকাটি বন্ধ। আমাকে আমারদেশ অফিস থেকে গ্রেপ্তার করে দ্বিতীয় দফায় প্রায় চার বছর বন্দী করে রাখা হয় এবং রিমা-ে নির্যাতন করা হয়। স্কাইপ কেলেঙ্কারী ফাঁস করার অভিযোগে আমারদেশ এর মাথার উপর ৫৭ ধারার মামলার খড়গ প্রায় পাঁচ বছর ধরে ঝুলিয়ে রাখার মাধ্যমে বেআইনীভাবে পত্রিকার ছাপাখানা তালাবদ্ধ করে রাখা হয়েছে। অথচ একই সংবাদ ছাপার কারণে লন্ডনের ইকনোমিস্ট পত্রিকার বিরুদ্ধে মানহানির মামলা হয় এবং পরে ওই মামলাটি খারিজ হয়ে যায়।
তিনি বলেন, আমারদেশ সত্য রিপোর্ট এবং জাতীয় স্বার্থের বিষয়গুলো তুলে ধরার কারণেই সরকারের প্রতিহিংসার স্বীকার হয়েছে। আমরা আমাদের প্রতিবাদ অব্যাহত রেখেছি এবং দেশবাসীর কাছে তাদের প্রিয় পত্রিকা প্রকাশে সোচ্চার হওয়ার আহ্বান জানাচ্ছি। আমরা আশা করছি মহামান্য হাইকোর্ট আমারদেশ এর রুল নিষ্পত্তি করে অবিলম্বে পত্রিকাটি প্রকাশের সুযোগ করে দেবেন।
সূত্র: মানবজমিন
Discussion about this post