শিক্ষার্থীদের ওপর ছাত্রলীগের নিপীড়নসহ তিন দফা দাবিতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক আখতারুজ্জামানকে তার কার্যালয়ে অবরুদ্ধ করেছেন ‘নিপীড়ন বিরোধী শিক্ষার্থীবৃন্দের’ ব্যানারে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা।
মঙ্গলবার সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত সময়ে উপাচার্য কার্যালয়ের অন্তত তিনটি ফটক একে একে ভেঙে বেলা দেড়টার দিকে উপাচার্যের দরজার সামনের করিডোরে অবস্থান নেন তারা।
গত সপ্তাহ থেকে আন্দোলন চালিয়ে আসা শিক্ষার্থীরা এদিন বেলা সাড়ে ১১টার দিকে অপরাজেয় বাংলার পাদদেশে জড়ো হয়ে মিছিল শুরু করে। পরে মিছিলটি টিএসসি, কলাভবন, বিজনেস ফ্যাকাল্টি, বিজনেস স্টাডিজ অনুষদ ঘুরে উপাচার্য কার্যালয়ের সামনে আসে।
সেখানে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করতে থাকা শিক্ষার্থীরা এক সময় উপাচার্য কার্যালয়ের প্রধান ফটক ধরে ধাক্কা দিতে থাকে। এক পর্যায়ে বেলা ১২টার দিকে উপাচার্য কার্যালয়ে প্রধান ফটকের দুটি তালা ভেঙে কার্যালয় প্রাঙ্গণে ঢুকে যায় তারা।
শিক্ষার্থীদের দাবিগুলো হলো- সাত কলেজের অধিভুক্তি বাতিলের দাবিতে করা আন্দোলনে শিক্ষার্থীদের উপর হামলা ও যৌন নিপীড়নকারী ছাত্রলীগ নেতাদের বহিষ্কার, প্রশাসনের করা অজ্ঞাতনামা মামলা প্রত্যাহার এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরের পদত্যাগ।
এদিকে, সোমবার ছুটির দিন থাকায় মঙ্গলবার সকালে শিক্ষার্থীদের মধ্য থেকে ৩জন প্রতিনিধিকে চিঠি দিয়ে ডাকা হয়েছে বলে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন থেকে দাবি করা হয়। তিনজন হলেন- উম্মে হাবীবা বেনজির, আবু রায়হান খান এবং হাসিব মোহাম্মদ আশিক। কিন্তু তারা তদন্ত কমিটিতে আসেনি বলে অভিযোগ প্রশাসনের।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী প্রক্টর আবু হোসেন মুহম্মদ আহসান বলেন, সকাল ১০টার দিকে রোকেয়া হলের প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. জিনাত হুদার কক্ষে আয়োজিত তদন্ত কমিটির সভায় আসার জন্য আমরা তিনজনকে চিঠি দিয়ে জানিয়েছি। শিক্ষার্থীদের দেয়া অভিযোগপত্রে কোনো অভিযুক্তের নাম উল্লেখ করা হয়নি বলেও জানান তিনি।
এদিকে, প্রথমে সাধারণ শিক্ষার্থীদের ডাকে আন্দোলন হলেও গত ১৭ জানুয়ারি থেকে তা বাম ছাত্র নেতাদের আন্দোলনে রূপ নেয় বলে অভিযোগ রয়েছে। এতে বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক একজন অধ্যাপকের ইন্ধন রয়েছে বলেও জানা যায়।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন অধ্যাপক নয়া দিগন্তকে বলেন, আন্দোলনকারীরা নিজেদেরকে বামসংগঠনের নেতৃবৃন্দদের সামনে রেখে একজনের ইশারায় কলকাঠি নাড়ছেন। তার সাথে গোপনে বৈঠক করেছেন তারা।
সূত্র: নয়াদিগন্ত, বিডিনিউজ ও যুগান্তর