বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি দাবিতে শনিবার ঢাকায় ‘কালো পতাকা মিছিল’ করার কথা থাকলেও কর্মসূচির ধরন পাল্টেছে দলটি। কর্মসূচি ঘোষণার একদিন পরে বৃহস্পতিবার বিকেলে এক সাংবাদ সম্মেলনে দলের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী কালো পতাকা মিছিলের পরিবর্তে কালো পতাকা প্রদর্শনের ঘোষণা দিয়েছেন। চেয়ারপারসনের নিঃশর্ত মুক্তির দাবিতে আগামী রোববার রাজধানীতে সমাবেশ করার কথা থাকলেও অনুমতি না পেয়ে শনিবার কালো পতাকা মিছিল করার ঘোষণা দিয়েছিল দলটি। এর একদিন পর সংশোধনী এনে আরো নমনীয় কর্মসূচির ঘোষণা এলো। রিজভী বলেন, সারাদেশের জেলা ও থানা পর্যায়ের নেতারা তাদের সুবিধামতো জায়গায় ও সুবিধামতো সময়ে কালো পতাকা প্রদর্শন করবে। একই সঙ্গে বাড়ি বাড়ি বা দলীয় কার্যালয়ে কালো পতাকা উত্তোলন করবে।
এছাড়া যে যেভাবে পারে পতাকা প্রদর্শন করবে। তবে ঢাকায় কেন্দ্রীয়ভাবে এ কর্মসূচি কোথায় পালন করবে তা শুক্রবার জানিয়ে দেয়া হবে বলেও জানান তিনি। বিএনপির আন্দোলনের সক্ষমতা নিয়ে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের নেতাদের প্রশ্ন তুলার বিষয়ে দৃষ্টি আকর্শন করলে রিজভী বলেন, আমরা মনে করি, কালো পতাকা প্রদর্শন কর্মসূচির ব্যাপকতা অনেক বেশি। এতে সাধারণ মানুষও অংশ নিতে পারবে। গৃহে, দোকানে বিভিন্ন জায়গায় মানুষজন কালো পতাকা উত্তোলন করতে পারবেন।
তিনি বলেন, বেগম খালেদা জিয়াবিহীন নির্বাচন দেশে-বিদেশে গ্রহণযোগ্যতা পাবেনা এবং দেশের জনগণ তা মেনেও নেবে না। সরকার বেগম জিয়াকে নির্বাচন থেকে মাইনাস করার উদ্দেশ্যেই রাজনৈতিক মিথ্যা মামলায় কারাবন্দী করেছে। এই নীল নকশা জনগণের কাছে পরিস্কার হয়ে গেছে। ইতোমধ্যে খালেদা জিয়াকে বন্দী করার পর দেশবাসী যেভাবে জেগে উঠেছে তাতে সকল বাধা বিপত্তি উপেক্ষা করে অসংখ্য মানুষ রাজপথে নেমে গেছে। সারাদেশব্যাপী নিন্দার ঝড় বইছে। এতেই সরকারের ভীত নড়বড়ে হয়ে উঠেছে। তাই সরকারের শীর্ষ পর্যায়ে মন্ত্রীরা যতোই আবোল-তাবোল বকুক না কেন খালেদা জিয়াবিহীন নির্বাচনের নীলনকশা প্রতিরোধ করতে জনগণ এখন বদ্ধপরিকর।
রিজভী আহমেদ আরো বলেন, সংঘাতপ্রবণ রাজনীতি সৃষ্টি করে দেশকে অনিশ্চয়তার দিকে ঠেলে দিতে চায় বর্তমান ভোটারবিহীন সরকার। তবে ব্যাপক গণঅভুত্থানের একটা জোরালো হাওয়া দেশে বইতে শুরু করেছে। এই হাওয়াতেই অবৈধ ক্ষমতার সিংহাসন ভুতলে শায়িত হবে।
সংবাদ সম্মেলনে তিনি আরো বলেন, শনিবারের কালো পতাকা প্রদর্শন ছাড়াও মহান শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষে শুক্রবার বিকাল তিন টায় বিএনপির উদ্যোগে রাজধানীর রমনাস্থ ইঞ্জিনিয়ার্স ইন্সটিটিউশন মিলনায়তনে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হবে।
এছাড়া সারাদেশে গ্রেপ্তার হওয়া নেতাদের বিষয়ে বলেন, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির সহ-সাধারণ সম্পাদক হাজী নাজিম, ৯ নং ওয়ার্ড ছাত্রদলের নেতা আবু নোমানসহ ৫ জন, ওয়ারী থানা বিএনপির ৩৮ নং ওয়ার্ড এর সহ-সভাপতি নুর ইসলামকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। এর বাইরে কোতয়ালী থানা যুবদলের আহবায়ক মো. আজিমের বাসায় পুলিশ তল্লাসী চালিয়েছে। এসব নেতাদের অন্যায়ভাবে গ্রেপ্তার করা হয়েছে জানিয়ে তাদের বিরুদ্ধে দায়েরকৃত মামলা প্রত্যাহারসহ নিঃশর্ত মুক্তির জোর দাবি জানান তিনি।
সংবাদ সম্মেলনে রিজভীর সঙ্গে অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন- বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য আবুল খায়ের ভুঁইয়া, যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, কেন্দ্রীয় নেতা সহ দপ্তর সম্পাদক তাইফুল ইসলাম টিপু, মুনির হোসেন, বেলাল আহমেদ, ইশতিয়াক আজিজ উলফাৎ প্রমুখ।
সূত্র: মানবজমিন