বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে জোর করে হাসপাতালে আনা হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন দলটির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী আহমেদ। তিনি বলেন, তাকে একরকম জোর করেই গাড়িতে উঠিয়ে হাসপাতালে আনা হয়েছে।
শনিবার (৭ এপ্রিল) বিকালে রাজধানীর নয়া পল্টনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে রিজভী আহমেদ এ অভিযোগ করেন।
রিজভী আহমেদ বলেন, ‘বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াকে স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য আজ হাসপাতালে আনার সময় সম্পূর্ণ অপ্রস্তুতভাবে আনা হয়েছে। কারাগারে তার কক্ষের কাছে গিয়ে বার বার তাগিদ দিতে থাকে কর্মকর্তাসহ সাত-আট জন কারারক্ষী।’
তিনি অভিযোগ করে বলেন, ‘একজন মুসলিম ধর্মপ্রাণ নারী হিসেবে ৩০-৩২ বছর ধরে তিনি শাড়ির উপরে চাদর অথবা ওড়না পরেন। এ সরকার এত হীন এবং কুৎসিত মনোবৃত্তির যে একজন বয়স্ক নারী, যিনি তিনবারের প্রধানমন্ত্রী ছিলেন, তাকে চাদর অথবা ওড়না পরার সুযোগ পর্যন্ত দেওয়া হয়নি। তাকে একরকম জোর করেই গাড়িতে উঠিয়ে হাসপাতালে আনা হয়েছে।’
রুহুল কবির রিজভী বলেন, ‘পিজি হাসপাতালে (বিএসএমএমইউ) ৫১২ নম্বর কক্ষে তাকে নিয়ে আসা হয়। কিন্তু চিকিৎসার নামে পিজি হাসপাতালে নিয়ে আসা প্রহসনেরই নামান্তর। কোনও চিকিৎসাই সেখানে তাকে দেওয়া হয়নি। তার ব্যক্তিগত চিকিৎসকদের কোনও পরামর্শের সুযোগ দেওয়া হয়নি।’
রিজভী জানান, আইনেও আছে একজন বন্দি আগে যেসব চিকিৎসকের চিকিৎসা নিতেন কারাগারেও তাদের চিকিৎসা নিতে পারবেন। গত পরশু (৫ এপ্রিল) স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে পাঠানো চিঠিতে খালেদা জিয়া ব্যক্তিগত চিকিৎসকের হাতে স্বাস্থ্য পরীক্ষা করাতে প্রধান কারারক্ষকের সঙ্গে যোগাযোগ করতে বলা হয়েছে। অথচ এর কোনও প্রতিফলন শনিবার দেখা যায়নি।
রুহুল কবির বলেন, ‘খালেদা জিয়া ১৫-২০ বছর ধরে যে ব্যক্তিগত চিকিৎসকদের চিকিৎসা নিচ্ছেন, সেই চিকিৎসকদের চিকিৎসার সুযোগ দেওয়া হচ্ছে না। বেগম জিয়াকে হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে খবর পেয়ে পরিবারের সদস্যরা হাসপাতালে ছুটে গেলেও সেখানে পরিবারের সদস্যদের পর্যন্ত দেখা করতে দেওয়া হয়নি।’
রিজভী অভিযোগ করেন, খালেদা জিয়াকে হাসপাতালে নিয়ে এসে টানাহেঁচড়া করা হয়েছে শুধুমাত্র হেনস্থা ও হয়রানি করার জন্য। তার গাড়ি হাসপাতালে এসে পৌঁছালে তাকে একরকম টানাহেঁচড়া করে উপরে ওঠানো হয়। গাড়ি থেকে নামার জন্য সিঁড়ি পর্যন্ত দেওয়া হয়নি।
তিনি বলেন, ‘আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর বাড়াবাড়িতে হাসপাতালে ধাক্কাধাক্কির মতো পরিস্থিতিতে একরকম অপমানজনকভাবে তাকে হাসপাতালে ওঠানো-নামানো হয়েছে। একজন মানুষ হিসেবে বেগম জিয়ার যে চিকিৎসা পাওয়ার অধিকার সেটাকেও হরণ করতে ক্ষমতাতপস্বী সরকারপ্রধান বিষদাঁত লুকাতে পারছেন না।’
রিজভী বলেন, ‘বাংলাদেশের সর্বাধিক জনপ্রিয় দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে নিয়ে ছিনিমিনি খেলার ধারাবাহিকতা বন্ধ না করলে কোটি কণ্ঠের হুংকারে এ সরকারের গদিকে উল্টে দিতে জনগণ প্রস্তত।’
রুহুল কবির রিজভী বলেন, ‘সুচিকিৎসার অভাবে দেশনেত্রীর কোনও ক্ষতি হলে এর চরম দায় সরকারকে নিতে হবে। বেগম জিয়ার অগ্রযাত্রায় বলপূর্বক প্রতিহত করে কোনও লাভ হবে না। তাকে কোনভাবেই টলানো যাবে না।’
সূত্র: বাংলা ট্রিবিউন