অ্যানালাইসিস বিডি ডেস্ক
হিন্দুপ্রধান দেশ ভারতকে মুসলিম দেশগুলোর সংগঠন ওআইসিতে আনতে জোর প্রচেষ্টা চালাচ্ছেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ভারতের আনন্দবাজার ও ইন্ডিয়ান টাইমস পত্রিকা আজ পৃথক দুটি সংবাদের মাধ্যমে এমন তথ্যই জানিয়েছে।
‘ওআইসি গোষ্ঠীতে ভারতকে চায় ঢাকা’ শিরোনামের সংবাদে আনন্দবাজার লিখেছে- ‘শান্তিনিকেতনে আসার আগে ভারতকে একটি বিশেষ সুবিধা দেওয়ার চেষ্টা শুরু করলেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আজ থেকে ঢাকায় শুরু হয়েছে বিশ্বের ইসলামি দেশগুলির গোষ্ঠী ওআইসি (অর্গানাইজেশন অব ইসলামিক কান্ট্রিজ) সম্মেলন। সেখানে সংগঠনটির সংস্কার করে প্রকারান্তরে ভারতকে অন্তর্ভুক্ত করার ডাক দিল ঢাকা।’
প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে এই সংগঠনের অন্যতম সদস্য পাকিস্তান। সে দেশের বিদেশসচিব তেহমিনা জানজুয়া এখন সম্মেলনের জন্য বাংলাদেশে। সংগঠনভুক্ত দেশগুলির কাছে বাংলাদেশের প্রস্তাব, যে সব দেশে মুসলিম সম্প্রদায়ের মানুষ সংখ্যাগুরু না হলেও যথেষ্ট বেশি সংখ্যায় রয়েছেন তাদেরও ওআইসি-র ছাতার তলায় আনা হোক। সেক্ষেত্রে সেই সব দেশের মুসলিমরাও এই আন্তর্জাতিক সংস্থাটির নানা উন্নয়নমূলক প্রকল্পের আওতায় আসতে পারবেন।
ভারতের চিরশত্রু পাকিস্তান ওআইসির সদস্য হওয়ায়ই মূলত ভারত ওআইসির সদস্য হতে উঠেপড়ে লেগেছে। আর এতে ওকালতির জন্য বাংলাদেশকেই কাজে লাগাতে চাচ্ছে ভারত। ভারত মনে করে ওআইসিতে এই অঞ্চলের বিভিন্ন বিষয়ে ছড়ি ঘোরায় পাকিস্তান। আনন্দবাজারের প্রতিবেদনে সেটাই তুলে ধরা হয়েছে।
আনন্দবাজার পাকিস্তানের বিরুদ্ধে বলতে গিয়ে বলেছে, ওআইসিতে অন্তর্ভুক্তির ব্যপারে ভারতের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক স্তরে আগেই কথা হয়েছে বাংলাদেশের। ওআইসি-র অন্যতম সদস্য দেশ হিসেবে পাকিস্তান বিভিন্ন কৌশলগত প্রশ্নে এই মঞ্চে ছড়ি ঘোরাতে পারে। কাশ্মীর প্রশ্নে নিজেদের অবস্থানকে তুলে ধরে ভারত-বিরোধী কৌশল নেওয়ার ক্ষেত্রে অন্য ইসলামি দেশগুলির উপর পাকিস্তান প্রভাব তৈরি করে বলে মনে করে সাউথ ব্লকের একটি অংশ। ওআইসি-র সংস্কারের পরে ভারত যদি এই সংগঠনে ঢুকতে পারে তাহলে আর ফাঁকা মাঠে গোল দেওয়া সম্ভব হবে না ইসলামাবাদের পক্ষে।
আনন্দবাজার তাদের প্রতিবেদনে বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর বক্তব্যও তুলে ধরে। পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘‘অনেক রাষ্ট্রই রয়েছে যেখানে মুসলিম সম্প্রদায় হয়তো সংখ্যালঘু। কিন্তু ওই সম্প্রদায়ের মানুষের সংখ্যা প্রচুর। অনেক ক্ষেত্রে সেই সংখ্যা অনেক ওআইসিভুক্ত দেশের থেকেও বেশি। সে কারণেই ওআইসি-র সঙ্গে এই রাষ্ট্রগুলির সেতুবন্ধন প্রয়োজন। তাহলে ওই দেশগুলির মুসলিম নাগরিকেরাও সংগঠনটির ভাল কাজের সুফল পেতে পারবেন।’’