অ্যানালাইসিস বিডি ডেস্ক
মহাকাশে স্যাটেলাইট পাঠানোর নামে আজ দুর্নীতি-লুটপাটের এক মহাউৎসব পালন করছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা। কিছু দিন আগেও অ্যানালাইসিস বিডিতে তথ্য-প্রমাণসহ একটি প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে যে, মহাকাশে স্যাটেলাইট উৎক্ষেপনের নামে সরকার লুটপাটের এক মহা প্রজেক্ট হাতে নিয়েছে। স্যাটেলাইটের এই প্রজেক্ট বাস্তবায়নে সরকার রাষ্ট্রের ২১‘শ কোটি টাকা খরচ করেছে। আর এটাকে পাঠানোর উৎসব পালন করতে আরও কয়েক কোটি টাকা খরচ করা হচ্ছে।
এছাড়া এই স্যাটেলাইটের মাধ্যমে যে সুবিধা আসবে সেটা রাষ্ট্রের কোষাগারে যাবে না। কারণ, স্যাটেলাইট উৎক্ষেপনের পর থেকে এর নিয়ন্ত্রণের দায়িত্ব চলে যাবে শেয়ারবাজারের লাখ কোটি টাকা আত্মসাতকারী দরবেশ হিসেবে খ্যাত সেই সালমান এফ রহমানের নিয়ন্ত্রণে। বেসরকারি টিভি ও ইন্টারনেটের ডাটা ফ্রিকুয়েন্সির জন্য কোম্পানিগুলোকে দরবেশের কাছ থেকে অনুমতি নিতে হবে। যার নিয়ন্ত্রণ থাকার কথা ছিল তথ্য মন্ত্রণালয় ও বিটিআরসির অধীনে। প্রাপ্ত টাকার বড় একটি অংশ রাষ্ট্রের কোষাগারে জমা না হয়ে শেখ হাসিনার ছেলে জয়ের পকেটে যাবে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।
এদিকে, স্যাটেলাইট পাঠানোর পূর্ব মুহূর্তে সরকারের আরেক বড় ধরণের প্রতারণা ফাঁস হয়েছে। এদেশের মানুষ জানতো স্যাটেলাইটের গায়ে বাংলাদেশের পতাকা লাগানো থাকবে। এতদিন ধরে এটাই প্রচার করা হচ্ছে। জাতীয় পতাকা সম্বলিত স্যাটেলাইটের ছবিও প্রকাশ করা হয়েছে। কিন্তু, বৃহস্পতিবার হঠাৎ করে জানানো হলো যে, বাংলাদেশের জাতীয় পতাকা সংযুক্ত কোনো ছবি কিংবা পতাকার নকশাও থাকছে না। পতাকার বদলে স্যাটেলাইটের গায়ে ‘জয় বাংলা জয় বঙ্গবন্ধু’ লেখা রয়েছে।
এ বিষয়ে তারানা হালিম জানিয়েছেন, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমসহ গণমাধ্যমে বাংলাদেশের পতাকাওয়ালা বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইটের যে ছবিটি ঘুরছে সেটা প্রকৃত ছবি নয়।
তারানা হালিম বলেন, ‘আমি যখন স্যাটেলাইটটি সর্বশেষ (নির্মাণ শেষে) দেখতে আসি তখন থ্যালেস অ্যালেনিয়া বলে স্যাটেলাইটের গায়ে নাম লিখে সই করতে। আমি তাদেরকে বলি সই করার একমাত্র অধিকার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার। কিন্তু তারা আমাকে কিছু একটা লিখতে বলেন। তখন আমি জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর কথা স্মরণ করে এটি (জয় বাংলা জয় বঙ্গবন্ধু) হাতে লিখে দেই। সেই লেখাটি স্যাটেলাইটের গায়ে থাকছে।’
তারানা আরো বলেন, ‘যেখানে মানুষ পৌঁছাতে পারে না, যা অসীম মহাশূন্য সেখানেও পৌঁছে যাবে বঙ্গবন্ধুর নাম। তারানা হালিমের দেয়া এমন তথ্য গণমাধ্যমে প্রকাশিত হওয়ার পর এনিয়ে সমালোচনার ঝড় উঠেছে। সামাজিক মাধ্যমগুলোতে মানুষ প্রচণ্ড ক্ষোভ প্রকাশ করছে।
রাজনীতিক বিশ্লেষকসহ সচেতন মানুষ বলছেন, ‘জয় বাংলা আর জয় বঙ্গবন্ধু’ আওয়ামী লীগের দলীয় স্লোগান। আর স্যাটেলাইট এটি রাষ্ট্রের সম্পদ। কারণ, রাষ্ট্রের কয়েক হাজার কোটি টাকা খরচ করে এটা নির্মাণ করা হয়েছে। এখানে লেখা থাকবে বাংলাদেশের নাম। থাকবে দেশের পতাকা। কিন্তু, সরকার এটা না করে তাদের দলীয় স্লোগান স্যাটেলাইটের গায়ে লিখে দেশবাসীর সঙ্গে বড় ধরণের প্রতারণা করেছে। কেউ কেউ বলছেন, মহাকাশে বাংলাদেশ যাচ্ছে না। যাচ্ছে আওয়ামী লীগের দলীয় স্লোগান জয় বাংলা।