• যোগাযোগ
শুক্রবার, মে ৯, ২০২৫
Analysis BD
  • মূলপাতা
  • বিশেষ অ্যানালাইসিস
  • রাজনীতি
  • জাতীয়
  • আন্তর্জাতিক
  • মতামত
  • কলাম
  • ব্লগ থেকে
No Result
View All Result
  • মূলপাতা
  • বিশেষ অ্যানালাইসিস
  • রাজনীতি
  • জাতীয়
  • আন্তর্জাতিক
  • মতামত
  • কলাম
  • ব্লগ থেকে
No Result
View All Result
Analysis BD
No Result
View All Result
Home slide

হারাপান সরকার ও মালয়েশিয়ার রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ

মে ২৬, ২০১৮
in slide, Top Post, আন্তর্জাতিক
Share on FacebookShare on Twitter

মাসুম খলিলী

মালয়েশিয়ায় ডা. মাহাথির মোহাম্মদের নেতৃত্বে নতুন সরকার যাত্রা শুরু করেছে। ফেড়ারেল মন্ত্রিসভা এর মধ্যে গঠন সম্পন্ন হয়েছে। রাজ্য পর্যায়ে মুখ্যমন্ত্রীরা শপথ নিয়েছেন এবং রাজ্যে রাজ্যে সরকার গঠনের প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। পাকাতান হারাপান সরকারের জোটবদ্ধ দলসমুহের মধ্যে একসাথে চলার রসায়ন নানা অভিজ্ঞতার মধ্যে দিয়ে অগ্রসর হচ্ছে। ভবিষ্যৎ প্রধানমন্ত্রী আনোয়ার ইব্রাহিম পুর্ণ রাজকীয় ক্ষমার আওতায় মুক্তি লাভের পর তার নিজস্ব কার্য্যক্রমে মনোযোগ দিয়েছেন। যদিও তিনি সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়ে সরকারের কাজে আনুষ্ঠানিকভাবে যুক্ত হবার আগে নিজ পরিবারের সাথে আরো কিছু সময় কাটাতে চান। একই সাথে মালয়েশিয়ার ভবিষ্যৎ প্রশ্নে তিনি বিভিন্ন দেশের বিশ্ববিদ্যালয়ে বক্তব্য রাখবেন।

নতুন সরকারের ১০০ দিনের অগ্রাধিকার কর্মসূচির বাস্তবায়ন প্রক্রিয়াও শুরু হয়েছে। এর মধ্যে নাজিব দম্পতির বিদেশ যাত্রা ঠেকিয়ে দিয়ে বহুলালোচিত ওয়ান এমডিবির তদন্ত কাজ শুরু করা হয়েছে। এই প্রকল্পের হাতিয়ে নেয়া অর্থ উদ্ধারের প্রক্রিয়াও শুরু করা হয়েছে। ১ জুন থেকে মালয়েশীয়দের মধ্যে বিশেষ জনপ্রিয় ঘোষণা জিএসটি শূন্যে নামিয়ে আনার বিষয়টি কার্যকর করা হবে। এর পর থাকবে বিচার বিভাগের সংস্কার, রাজনৈতিক প্রতিষ্ঠানসমুহের মধ্যে ভারসাম্য প্রতিষ্ঠা, বর্ণগত সম্পর্ক ও ধর্মীয় সুশাসন আর মানবাধিকার ও শিক্ষা পূনর্গঠনের মতো বিষয়। এসব বিষয়ের সবটা আশু কার্যকর করার মতো এজেন্ডা নয়। তবে এর মধ্যেও চতুর্দশ সাধারণ নির্বাচনের মধ্য দিয়ে নতুন পথ যাত্রার পর মালয়েশিয়ার রাজনীতি কোন দিকে যাচ্ছে বা যেতে পারে তা নিয়ে বিভিন্ন ধরনের আলোচনা পর্যালোচনা হচ্ছে।

নির্বাচনের মূল্যায়ন ও বিশেষ বার্তা

এবারের নির্বাচনকে মালয়েশিয়ার ইতিহাসে সবচেয়ে তাৎপর্যপূর্ণ মনে করা হয়। এই নির্বাচনের বিভিন্ন পরিসংখ্যানের প্রতি নজর দিলে তাতে গভীর অনেক বিষয় পাওয়া যায়। এবারের নির্বাচনের ফলাফলের পেছনে এক কথায় তিনটি ফ্যাক্টর কাজ করেছে বলে মনে হয়। প্রথমত, নাজিব রাজ্জাক ও তার স্ত্রী রুসমাহ মানসুরের দুর্নীতিগ্রস্ততা ও ক্ষমতার অপব্যবহারের দায় চেপেছে বারিশান ন্যাশনালের উপর। দ্বিতীয়ত, মাহাথির মোহাম্মদের খেলা পাল্টে দেবার মতো ভূমিকার প্রভাব পড়েছে নির্বাচনে। তৃতীয়ত, আনোয়ার ইব্রাহিমের পরিবর্তনের সুদৃঢ় পটভূমি নির্মাণ করার প্রভাব পড়েছে এতে। এই তিন কারণে বিরোধি জোট থেকে পাসের মতো একটি প্রধান দল বিদায় হয়ে যাবার পরও পাকাতান হারাপানের নতুন জোট নির্বাচনে আশাতীত ফল পেয়েছে।

নির্বাচন কমিশনের সর্বশেষ পরিসংখ্যান অনুসারে এই নির্বাচনে পাকাতান হারাপান জোট মোট ভোট পেয়েছে ৪৭.৯২ শতাংশ আর আসন পেয়েছে ৫৬ শতাংশ (১২১টি)। বারিসান ন্যাশনাল ভোট পেয়েছে ৩৩.৮০ শতাংশ আর আসন পেয়েছে ৩৫ শতাংশ (৬৯টি), পাস ভোট পেয়েছে ১৬.৯৯ শতাংশ আর আসন পেয়েছে ৮.১১ শতাংশ (১৮টি)। পাকাতান হারাপান জোটের মধ্যে পিকেআর ১৭.১০ শতাংশ ভোট পেয়ে ৪৭টি আসন (২১.১৭ শতাংশ) পেয়েছে, ডিএপি ১৭.৩৮ শতাংশ ভোট পেয়ে ৪২টি আসন (১৮.৯১ শতাংশ) লাভ করেছে, পিপিবিএম ৫.৭৭ শতাংশ ভোট পেয়ে ১৩টি আসন (৫.৮৫ শতাংশ) পেয়েছে আর আমানাহ ৫.৩৭ শতাংশ ভোট পেয়ে আসন লাভ করেছে ১১টি (৪.৯৫ শতাংশ)।

অন্য দিকে বারিসানের মধ্যে আমনু ২১.১০ শতাংশ ভোট পেয়ে ৫৪টি আসনে (২৪.৩২ শতাংশ) জয়ী হয় আর জোটের অন্য শরীক পূর্ব মালয়েশিয়ার আঞ্চলিক দল পিবিবি ১.৮৩ শতাংশ ভোট পেয়ে ১৩টি আসনে (৫.৮৫ শতাংশ) জয়ী হয়। বারিসান জোটের বাকি শরীকরা মাত্র দুটি আসনে জয়ী হয়। প্রাপ্ত ভোটের তুলনায় আসন প্রাপ্তির ক্ষেত্রে সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত দল হলো পাস । দলটি প্রাপ্ত ভোটের তুলনায় মাত্র অর্ধেক আসনে জয়ী হয়েছে। আগের পাকাতান রাকায়েত জোটে থাকলে তাদের প্রাপ্ত ভোট ২৩ শতাংশ (পাস+আমানাহ) এবং আসন সংখ্যা দাঁড়াতো ৫০ এর মতো। বিরোধি জোটে তখন পাসই হতো সবচেয়ে বড় দল। এখন দলটির নির্বাচনী সাফল্য তিনটি রাজ্যে সীমিত হয়ে পড়েছে । বিরোধি জোটে থাকলে পাসের আসন মালয়েশিয়ার সব রাজ্যে কম বেশি থাকতো।

এবারের নির্বাচনে ভোট সু্ইংয়ের বড় ঘটনা ঘটেছে বারিসান বা আমনু থেকে। আগের বার বারিসানের আসন ছিল এমন ৪০টি আসনে পাকাতান হারাপান জয় পেয়েছে। এর বাইরে পাকাতানের মিত্র দল ওয়ারিশান বারিসানের ৮টি আসনে জয় পেয়েছে। অন্য দিকে পাকাতান হারাপানের কোন আসনে জয় পায়নি বারিসান। বারিসানের ৫টি আসনে জয় পেয়েছে পাস। পাস পাকাতান হারাপানের তিনটি আসনে জয় পেয়েছে। তবে পাসের ৭টি আসন জিতে নিয়েছে পাকাতান হারাপান।

এবারের নির্বাচনে সবচেয়ে বেশি রাজ্য মুখ্যমন্ত্রী হয়েছে মাহাথিরের পিপিবিএম থেকে। কেদাহ,জহুর,ও পেরাকে পিপিবিএম এর সংসদ সদস্য মুখ্যমন্ত্রী হয়েছেন। পিকেআর থেকে মুখ্যমন্ত্রী হয়েছেন সেলাঙ্গর ও নেগেরি সেম্বিলান আর ডিএপি পেনাং এবং আমানাহ মালাক্কাতে মুখ্যমন্ত্রীর পদ পেয়েছে। ওয়ারিসান প্রধান মুখ্যমন্ত্রী হয়েছেন সাবাহতে।এখানে রাজ্যে দলের আসনের চেয়েও যোগ্য ব্যক্তিত্বকে অগ্রধিকার দেয়া হয়েছে বলে মনে হয়।বারিসানের মুখ্যমন্ত্রী হয়েছে পেহাংয়ে। পারলিসের মুখ্যমন্ত্রীর আনুগত্য কোন দিকে তা এখনো স্পষ্ট নয়।

হারাপান ও মালয়েশিয়ার নতুন যুগ

পাকাতান হারাপানের এবারের বিস্মযকর জয়ের মধ্য দিয়ে মালয়েশিয়ায় নতুন যুগের সুচনা ঘটতে পারে। বারিসান ন্যাশনালের গত ৬১ বছরের সরকারে আমনুর একক কমান্ড কন্ট্রোল ছিল। পাকাতান হারাপান সরকারে একক কোন দলের সেভাবে অধিপত্য থাকবে না। যদিও মাহাথির মোহাম্মদ যতদিন প্রধানমন্ত্রী থাকবেন ততদিন মাহাথিরের এবং আনোয়ার ইব্রাহিম নেতৃত্বে এলে তার প্রভাব থাকবে বিশেষভাবে। বারিসানের সরকারে চীনা ও ভারতীয় দলগুলোর প্রতিনিধিত্ব ছিল তুলনামূলকভাবে কম। পাকাতানের সরকারে চীনা প্রধান ডিএপি অন্যতম প্রধান শরীক। তবে এটিও ঠিক যে পাকাতানের সরকারে মালয় প্রাধান্য থাকলেও বারিসানের মতো একচ্ছত্র আধিপত্য নাও থাকতে পারে।

পাকাতানের অর্থনৈতিক প্রতিশ্রুতি ছাড়াও আরেকটি প্রধান অঙ্গীকার হলো রাজনৈতিক সংস্কার। এর আওতায় নির্বাচনী আসনগুলোকে জনসংখ্যার আলোকে ভারসাম্যপূর্ণ করার প্রস্তাব আসতে পারে। এটি হলে গ্রামিণ আসন কমে শহরের আসন কিছুটা বাড়তে পারে। এতে স্থায়ীভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে আমনু। সংস্কারের আওতায় বিচার ব্যবস্থা ও সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোতেও জবাবদিহিতা আনার কথা বলা হয়েছে। তবে পাকাতান হারাপানের একটি মৌলিক চ্যালেঞ্জ হলো জোটে একসাথে কাজ করার মতো টীম তৈরি হওয়া্। প্রাথমিকভাবে এ ব্যাপারে যে চ্যালেঞ্জ তৈরি হয়েছিল তা দূর হয়েছে মাহাথির অনোয়ার উভয়ের দুরদর্শিমূলক বিভিন্ন পদক্ষেপে। আনোয়ারের রাজ ক্ষমা মঞ্জুর ও মুক্তির প্রক্রিয়ায় কোন ধরনের বিলম্ব করেননি মাহাথির। তিনি আনোয়ারের রাজনৈতিক ভূমিকার ব্যাপারে ইতিবাচক পদক্ষেপ নিয়েছেন। অন্য দিকে মাহাথিরের মন্ত্রিসভা গঠন ও মন্ত্রণালয়ের ভাগ বাটোয়ারার ব্যাপারে পিকেআর থেকে রাফাজি যে ধরনের কঠোর ভাষায় সমালোচনা শুরু করেছিলেন তার রাশ টেনে ধরেছেন আনোয়ার।

মুক্তি লাভের পর সরকারের প্রক্রিয়ায় অংশ গ্রহন অথবা প্রধান মন্ত্রী হবার জন্য তিনি কোন তাড়াহুড়া করছেন না। তিনি এক থেকে দুবছর সময় পর্যন্ত মাহাথির প্রধানমন্ত্রী থাকার বিষযটি গ্রহন করে নিয়েছেন। আবার মাহাথিরও পাকাতানের কিছু পদক্ষেপ নিজে বাস্তবায়ন করে বাকি কিছু আনোয়ারের জন্য রেখে দেবার কথা বলেছেন। ডিএপির বক্তব্য বিবৃতিতেও এমন কোন আভাস পাওয়া যাচ্ছে না যাতে মাহাথিরের সরকারের সাথে তাদের বড় ধরনের কোন সমস্যা তৈরি হবে। নতুন সরকারের কাজের জন্য মাহাথির যে বিশেষজ্ঞ কমিটি করেছেন সেখানে দায়েম জয়নুদ্দিন যেমন আছেন তেমনিভাবে রবার্ট কুককেও সেখানে রাখা হয়েছে।

এই কমিটি প্রধানত জিএসটি বাতিল এবং অর্থনীতিতে গতি আনার মাধ্যমে প্রতিশ্রুত সংস্কারের কাজগুলো সম্পন্ন করার ব্যাপারে গুরুত্বপুর্ণ পদক্ষেপ নেবেন। মাহাথির মন্ত্রিসভা গঠনের ব্যাপারে বেশ বিজ্ঞতার পরিচয় দিয়েছেন। তিনি নিজ দলের প্রেসিডেন্ট মহিউদ্দিন ইয়াসিনকে স্বরাস্ট্র মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব দিয়েছেন। আবার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব দিয়েছেন আমানাহর ম্যাট সাবুকে, শিক্ষা মন্ত্রী করেছেন নিজ দলের তরুণ শিক্ষাবিদ ড. মাজলিহ মালিককে। ডিএপির লিম গুয়াং য়েংকে তিনি অর্থমন্ত্রী করেছেন। আবার অর্থনৈতিক বিষয় সংক্রান্ত মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব দিয়েছেন সেলাঙ্গরের সাবেক মুখ্যমন্ত্রী আজমিন আলীকে। তার কৃষি ও কৃষিভিত্তিক শিল্প মন্ত্রী হিসাবে সাালাউদ্দিন আইয়ুব এবং স্বাস্থ্য মন্ত্রী হিসাবে ড. জুলকেফলি আহমদকে বেছে নেয়াও বেশ বিজ্ঞ সিদ্ধান্ত বলে মনে করা হচ্ছে। বিভিন্ন দলের শক্তিগত ভারসাম্যের বিষয়টি তিনি পূর্ণাঙ্গ মন্ত্রিসভা গঠনের সময় দেখবেন বলে মনে হচ্ছে।

পাকাতান হারাপান নিশ্চিতভাবেই বারিসানের মতো টেকসই জোট হবে এমনটি বলার সময় এখনো হয়তো আসেনি। তবে মালয়েশিয়ার শাসন ব্যবস্থায় মালয় প্রাধান্য বজায় রেখেই সংখ্যালঘু চীনাদের আস্থা অর্জনের মতো একটি সরকার দেশটির জনগণ দেখতে পারে। এই সরকারের সামনে প্রধান চ্যালেঞ্জ হবে বেশ খানিকটা ব্যয়বহুল অর্থনৈতিক প্রতিশ্রুতি পূরণ করে কিভাবে সার্বিক অর্থনীতিতে গতি আনা যায়। নাজিবের শেষ মেয়াদে জাতিগতভাবে চীনাদের ব্যাপারে বৈরি রেটরিকের কারণে অনেক চীনা বিনিয়োগ অন্য দেশে চলে যাচ্ছিল। যার প্রভাব দেশের কর্মসংস্থানে পড়তে শুরু করে। সেই বিনিয়োগ আবার মালয়েশিয়ামুখি হতে পারে।

মাহাথিরের ২২ বছরের শাসন ছিল মালয়েশিয়ার অর্থনৈতিক উত্তানের সময়। সে সময়েের দুরদর্শি নীতিসমুহকে আবার ফিরিয়ে নিয়ে আসার চেষ্টা করবেন মাহাথির। যদিও আগের সরকারে মাহাথির যে কমান্ড কন্ট্রোল নিয়ে সিদ্ধান্ত নিতে পারতেন সেই অবস্থা এখন থাকার কথা নয়। তবে মাহাথির এবার মালয়েশিয়ার রাজনীতির একটি নতুন গতিধারা নির্ধারণ করে দিয়ে যেতে চাইতে পারেন যার সাথে আনোয়ারও সম্ভবত দ্বিমত পোষণ করবেন না।

আমনু কতটা ঘুরে দাঁড়াতে পারবে?

মালয়েশিয়ার রাজনীতিতে আমনু এখন অপ্রাসঙ্গিক হয়ে গেছে এমন বিষয় সেখানকার কেউ ভাবে না। তবে দলটির সামনে চ্যালেঞ্জ রয়েছে অনেক। ক্ষমতাসীন পাকাতান হারাপানের যে কোন ব্যর্থতা যেমন আমনুকে আবার সামনে নিয়ে আসতে পারে তেমনিভোবে শক্ত হাতে কেউ দলটির হাল ধরে পরিণামদর্শী কৌশল গ্রহণ করলেও দলটি প্রাসঙ্গিক হয়ে উঠবে। নাজিব রাজ্জাক আমনুর জন্য সত্যিকার অর্থেই যে একটি দায় ছিল সেটি উপলব্ধির জন্য চতুর্দশ সাধারণ নির্বাচনের বিপর্যয়কর ফলের হয়তো প্রয়োজন ছিল। বারিসানের যে কোয়ালিশন শক্তি তার পিতা আবদুর রাজ্জাক হোসেইন নির্মাণ করেছিলেন সেটিকে নাজিব হত্যা করেছেন।

বারিসানের সম্ভাব্য এই বিপর্যয়ের বিষয়টি উপলব্ধি করে নেতৃত্ব থেকে নাজিব আগে সরে দাঁড়ালে দল বা জোটের এই অবস্থা নাও হতে পারতো। দলের ক্যারিশমেটিক যুব নেতা খাইরি জামাল উদ্দিন কথাটি এখন জোরের সঙ্গে বলছেন। দলের মধ্যে যে অংশটি আমনু নেতৃত্বে আমূল পরিবর্তন চাইছেন তারা খাইরির সমর্থনে রয়েছেন। নাজিবের বিদায়ের পর আহমদ জায়েদ হামেদি ও হিসামুদ্দিন হোসেইন জুটিই দলের নেতৃত্বে রয়েছেন। এই জুটিটিকে তুলে এনেছেন নাজিব নিজে। খাইরি জামালুদ্দিনের অনুগামীরা মনে করেন এই জুটি কোনভাবে দলের বিপর্যয়ের দায় এড়াতে পারে না। আমনুকে সঠিক ট্র্যাকে ফিরিয়ে আনতে চাইলে নতুন নেতৃত্ব এবং দলের মধ্যে সংস্কার আনতে হবে।

বর্তমান সময়ে আমনুকে কেবলমাত্র জাতিগত মালয়দের দল করে রাখার যুক্তি নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। বলা হচ্ছে এমসিএ অথবা এমআইসি এখন সে অর্থে সংখ্যালঘু ধারার প্রতিনিধিত্ব করছে না। ফলে এখন সব জাতির জন্য দলকে উন্মুক্ত করে নতুনভাবে গঠনতন্ত্রের বিন্যাস আনতে হবে। আমুনর গতানুগতিক ধারা এটাকে সহজে গ্রহণ করতে চাইবে বলে মনে হয় না। তবে দলের মধ্যে একটি বড় ধরনের ঝাঁকুনির প্রয়োজন সম্ভবত রয়েছে। অবশ্য এ জন্য কিছুটা সময় হয়তো প্রয়োজন হবে। একদিকে নতুন সরকার আগের ক্ষমতাসীনদের ব্যাপারে কতদূর যায় তা দেখা আর অন্য দিকে ক্ষমতার পৃষ্ঠপোষকতাহীনতার সাথে মানিয়ে নেয়া – এ দুটোর জন্য কিছু সময় নিতে হবে আমনুকে। তবে দলকে পূনর্গঠনের আগে আগামী নির্বাচনে তারা কি ধরনের মেরুকরণ প্রত্যাশা করে সেটিও ঠিক করতে হবে।

পাস কি আলাদাই চলবে?

মালয়েশিয়ার রাজনীতির তৃতীয় শক্তি হিসাবে আবির্ভুত পাস একটি গুরুত্বপুর্ণ পক্ষ হিসাবে এবারের নির্বাচনে নিজেকে তুলে এনেছে। পাসের এককভাবে ১৭ শতাংশ ভোট পাওয়া মানে হলো মালয় ভোটারদের ২৮ শতাংশ ভোট দিয়েছে পাসকে। আমানাহর ভোটকেও পাসের সমর্থন ধরা হলে এই ভোট দাঁড়ায় ৩৮ শতাংশ। পাস বিরোধি জোট থেকে বেরিয়ে এসে কেবলই মালয় নির্ভর দলে পরিণত হয়েছে। আগের মতো দলটি পাকাতানের সাথে একীভূত হলে পাস আবার ঐক্যবদ্ধ দলে পরিণত হতে পারে। সেক্ষেত্রে পাসের এমপির সংখ্যা দাঁড়াবে ২৯ জন।

দলের প্রধান আবদুল হাদি আওয়াং না চাইলেও উভয় পক্ষের নেতাদের বড় একটি অংশ চায় পাস আবার ঐক্যবদ্ধ হোক। সেটি না হলে পাস এখন যেভাবে আছে সেভাবে একলা নিজের শক্তি বাড়ানোর কাজ করতে পারে। আর আগামী নির্বাচনের আগে পরিস্থিতির আলোকে যে কোন মেরুকরণের অংশ হতে পারে। আরেকটি সম্ভাবনা এও হতে পারে যে বিরোধি দল বারিসানের সাথে এক ধরনের প্রচ্ছন্ন সম্পর্ক রেখে এখনকার মতো সামনে চলতে থাকা। আর পরবর্তী নির্বাচনের আগে আমনুর সাথে এক ধরনের সমঝোতায় যাওয়া। পাসের কর্মকৌশলের সব কিছু নির্ভর করবে আগামী দিনের অবস্থার উপর।

নতুন সরকারের পররাষ্ট্র কৌশল কি হবে?

মাহাথির এর আগে ২২ বছর প্রধানমন্ত্রী থাকায় তার পররাষ্ট্র নীতি সম্পর্কে একটি ধারণা করা যায়। তিনি প্রাচ্য ও পাশ্চাত্য শক্তির মধ্যে এক ধরনের ভারসাম্য রক্ষা করে চলেছেন। কিন্তু এখনকার সময় বেশ খানিকটা আলাদা। চীন এখন আগের চেয়ে অনেক বেশি সক্রিয় এই এলাকায়। নাজিব পররাষ্ট্র সম্পর্ক নির্ধারণের ক্ষেত্রে কোন কোন সময় জাতীয় স্বার্থের চাইতেও তার ব্যক্তিগত বা দলীয় স্বার্থকে উপরে স্থান দিয়েছেন। তার আমলের বেশ কিছু চুক্তি ও প্রকল্প এ জন্য বিতর্কের মধ্যে রয়েছে। মাহাথির আগেই বলেছেন কিছু বিতর্কিত প্রকল্প তিনি পুনর্বিবেচনা করবেন। এ নিযে চীনের সাথে কিছুটা তিক্ততা সৃষ্টির বিষয় উড়িয়ে দেয়া যায় না।

সাধারণ একটি ধারণা রয়েছে যে পশ্চিমারা মালয়েশিয়ায় এবার পরিবর্তন প্রত্যাশা করেছিলেন। এ কারণে নাজিবের বিভিন্ন কেলেঙ্কারী পশ্চিমা প্রচার মাধ্যম ব্যাপকভাবে প্রচার করেছে। যুক্তরাষ্ট্রসহ একাধিক রাষ্ট্রে নাজিবের ওয়ান এমডিবি কেলেঙ্কারির সাথে সম্পৃক্ত বিষয় নিয়ে তদন্ত হচ্ছে। এসব কারনে মাহাথির সরকারের ঝোঁক কিছুটা হলেও পশ্চিমের দিকে থাকতে পারে। আবার দেশটি বিদ্যমান সৌদি প্রতিরক্ষা জোট থেকে সরে আসার কোন সিদ্ধান্তও নেবে না বলে মনে হয়। আমানাহ প্রধান মোহাম্মদ সাবুর প্রতিরক্ষা মন্ত্রী নিযুক্ত হওয়াটা তার ইঙ্গিত বলে ধারণা করা হয়।

মাহাথিরের চাইতেও আনোয়ার ইব্রাহিম পশ্চিমা প্রতিষ্ঠানগুলোর সাথে বেশি ঘনিষ্ট বলে মনে করা হয়। ব্যক্তিগতভাবে তিনি মালয়েশিয়ার ইসলামী যুব আন্দোলন আবিমের প্রতিষ্ঠাতা। আর তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েব এরদোগান তার ঘনিষ্ট বন্ধু। এরদোগানের একে পার্টি এবং আনোয়ারের জাস্টিজ পার্টির দলীয় নীতি ও কর্ম কৌশল প্রায় কাছাকাছি। আানোয়ার সরকারের নেতৃত্বে আসার পর এরদোগান মধ্যপন্থী ইসলামী দেশগুলোর সমন্বয়ে একটি জোট গড়ার যে প্রচেষ্টা চালাচ্ছেন তা গতি পেতে পারে।

ব্যক্তিগতভাবে আনোয়ার ইব্রাহিম এর আগে একাধিক বার ক্ষমতার প্রায় কাছাকাছি পৌঁছেও ছিটকে পড়েছেন। এ জন্য যে পারিপাশ্বিক অবস্থা সক্রিয় ছিল সেটি তার নিশ্চয়ই বিবেচনায় থাকবে। ফলে এখন আনোয়ারের মধ্যে ৭০ বছর বয়সে এসেও প্রধানমন্ত্রীর হবার জন্য কোন ধরনের তাড়া দেখা যাচ্ছে না। বরং রাজনৈতিক প্রক্রিয়ার মধ্যে প্রবেশের আগে তিনি বাইরের পুরণো সুত্রগুলোর সাথে যোগাযোগ করতে চাইছেন। মাহাথির আনোয়ার যদি সত্যিকার অর্থেই এক সাথে থেকে পাকাতান হারাপানের একটি মেয়াদ পার করতে পারেন তাহলে বারিসানের ক্ষমতার বাইরে থাকার সময় অনেক বেড়ে যেতে পারে।

সম্পর্কিত সংবাদ

নারী কমিশনের রিপোর্ট বাতিল করতে হবে
Home Post

নারী কমিশনের রিপোর্ট বাতিল করতে হবে

এপ্রিল ৩০, ২০২৫
আমাদের শিক্ষাব্যবস্থায় নতুন ধারার প্রবর্তন অপরিহার্য
Home Post

আমাদের শিক্ষাব্যবস্থায় নতুন ধারার প্রবর্তন অপরিহার্য

এপ্রিল ৩০, ২০২৫
হাওর ধ্বংস করে আবদুল হামিদের প্রমোদ সড়ক
Home Post

হাওর ধ্বংস করে আবদুল হামিদের প্রমোদ সড়ক

মার্চ ২০, ২০২৫

জনপ্রিয় সংবাদ

  • ভাষা আন্দোলন ও এর ঘটনা প্রবাহ

    ভাষা আন্দোলন ও এর ঘটনা প্রবাহ

    0 shares
    Share 0 Tweet 0
  • একজন বীর শহীদ তিতুমীর: মুসলিম জাতির প্রেরণা

    0 shares
    Share 0 Tweet 0
  • রক্তাক্ত ২৮ ফেব্রুয়ারি: নির্বিচার গণহত্যার দিন

    0 shares
    Share 0 Tweet 0
  • শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে দুর্নীতি ও চাঁদাবাজির যত মামলা

    0 shares
    Share 0 Tweet 0
  • ইসলামী সংস্কৃতি ও আধুনিক সংস্কৃতি

    0 shares
    Share 0 Tweet 0

সাম্প্রতিক সংবাদ

নারী কমিশনের রিপোর্ট বাতিল করতে হবে

নারী কমিশনের রিপোর্ট বাতিল করতে হবে

এপ্রিল ৩০, ২০২৫
আমাদের শিক্ষাব্যবস্থায় নতুন ধারার প্রবর্তন অপরিহার্য

আমাদের শিক্ষাব্যবস্থায় নতুন ধারার প্রবর্তন অপরিহার্য

এপ্রিল ৩০, ২০২৫
হাওর ধ্বংস করে আবদুল হামিদের প্রমোদ সড়ক

হাওর ধ্বংস করে আবদুল হামিদের প্রমোদ সড়ক

মার্চ ২০, ২০২৫
ভয়েস অব আমেরিকা বন্ধের বার্তা কী?

ভয়েস অব আমেরিকা বন্ধের বার্তা কী?

মার্চ ১৯, ২০২৫
কী বার্তা দিয়ে গেলেন জাতিসংঘের মহাসচিব?

কী বার্তা দিয়ে গেলেন জাতিসংঘের মহাসচিব?

মার্চ ১৬, ২০২৫
  • Privacy Policy

© Analysis BD

No Result
View All Result
  • মূলপাতা
  • বিশেষ অ্যানালাইসিস
  • রাজনীতি
  • জাতীয়
  • আন্তর্জাতিক
  • মতামত
  • কলাম
  • ব্লগ থেকে

© Analysis BD