অ্যানালাইসিস বিডি ডেস্ক
ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী আগামী ১১ মার্চ অনুষ্ঠিত হবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্রসংসদ ও হল সংসদ নির্বাচন। এ নির্বাচন যত ঘনিয়ে আসছে ঢাবি কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে ছাত্রলীগ ছাড়া অন্যান্য ছাত্রসংগঠনগুলোর অভিযোগের পাল্লা ততই ভারী হচ্ছে। ছাত্রলীগের পক্ষ হয়ে কাজ করায় ঢাবি প্রশাসনের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ-বিক্ষোভও করে যাচ্ছে ছাত্রসংগঠনগুলো।
তফসিল ঘোষণার পরই অ্যানালাইসিস বিডিতে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন উল্লেখ করা হয়েছিল যে, নির্বাচন কমিশনার নুরুল হুদার পথেই হাঁটছেন ঢাবি ভিসি ড. আখতারুজ্জামান। প্রার্থীতা যাচাই-বাছাইয়ের পর বিষয়টি এখন পরিষ্কার যে, ডাকসু নির্বাচনে ছাত্রলীগের প্যানেলকে জিতাতে ঢাবি ভিসি মরিয়ে হয়ে উঠেছেন।
প্রার্থীতা যাচাই বাছাইয়ে ছাত্রদল ও কোটা আন্দোলনকারীদের প্যানেলের এমন কয়েকজনের প্রার্থীতা বাতিল করা হয়েছে যারা বিজয়ী হওয়ার বিষয়ে শতভাগ সম্ভাবনা রয়েছে। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, এই পদগুলোর বিপরীতে ছাত্রলীগের প্রার্থীরা যাতে অনায়াসে বিজয়ী হতে পারে সেজন্যই ছাত্রদল ও কোটা আন্দোলনকারীদের প্যানেলের গুরুত্বপূর্ণ প্রার্থীদের প্রার্থীতা বাতিল করা হয়েছে।
এরপর, যাদের প্রার্থীতা টিকে গেছে তাদেরকেও প্রার্থীতা প্রত্যাহারের জন্য চাপ দিচ্ছে ছাত্রলীগ। যারা প্রার্থীতা প্রত্যাহার করছে না তাদের ওপর চালানো হচ্ছে অমানুষিক নির্যাতন। এমনকি হলের ভেতর সারা রাত আটকে রেখে নির্যাতনের ঘটনাও ঘটছে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, এখন পর্যন্ত ছাত্রলীগের চাপের মুখে অন্যান্য প্যানেলের ৬৫ জন প্রার্থী তাদের প্রার্থীতা বাতিল করতে বাধ্য হয়েছেন। আর হল সংসদ নির্বাচনেও গণহারে প্রার্থীতা বাতিল করেছেন প্রশাসন। সর্বশেষ ছাত্রসংসদ ও হল সংসদ নির্বাচনে ছাত্রলীগের প্যানেল থেকে কমপক্ষে ১১৭ জন বিনাপ্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হতে যাচ্ছে।
আর অন্যান্য প্যানেলের প্রার্থী যারা আছেন ছাত্রলীগের বাধার কারণে ঠিক মতো প্রচারণাও চালাতে পারছেন না। ছাত্রলীগের হুমকি ধামকির কারণে অনেক প্রার্থী ক্যাম্পাসেই ঢুকতে পারছেন না। এসব নিয়ে কর্তৃপক্ষের কাছে অভিযোগ করেও কোনো ফল পাচ্ছেন না প্রার্থীরা। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ তাদের অভিযোগ শোনা পর্যন্তই শেষ।
এদিকে, সাধারণ শিক্ষার্থী ও বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকরা মনে করছেন, বর্তমানে নির্বাচনের যে পরিবেশ বিরাজ করছে এতে করে সুষ্ঠু নির্বাচন হওয়ার কোনো সম্ভাবনা নেই। প্রার্থীরা যেখানে বিনা বাধায় সাধারণ শিক্ষার্থীদের কাছে ভোটই চাইতে পারছেন না, সেখানে তারা নির্বাচনে বিজয়ী হবেন কিভাবে? তারা মনে করছেন, ছাত্রলীগের পূর্ণাঙ্গ প্যানেলকে বিজয়ী করতেই মূলত ঢাবি ভিসি এখন সব কিছু করছে। এটা নির্বাচনের নামে একটি প্রহসন হবে মাত্র। কারা পাস করবে এটা আগ থেকেই সিলেক্ট করা হয়ে গেছে। এখন যা হচ্ছে সবই ফ্যাশন শো।