অ্যানালাইসিস বিডি ডেস্ক
সারাদেশে প্রাণঘাতী ডেঙ্গুতে মৃত্যুর মিছিল বেড়েই চলেছে। কয়েকটি সরকারি-বেসরকারি পত্রিকা বিভিন্ন হাসপাতাল থেকে যে তথ্য সংগ্রহ করে খবর প্রকাশ করেছে তাতে দেখা গেছে এ পর্যন্ত প্রায় দুইশ জনের মৃত্যু হয়েছে। কিন্তু তারপরেও মৃত্যুর সংখ্যা কম দেখানোর চেষ্টা করেই চলছে সরকার।
গতকাল শুক্রবারও সারাদেশে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে ৩ জন মারা গেছেন। তারা হলেন সাতক্ষীরার গৃহবধূ জাহানারা বেগম (৩৫), সাভারের এনাম মেডিকেলে মারা গেছেন লিটন মালো (২৫) নামে এক তরুণ ফিজিওথেরাপিস্ট এবং সাতক্ষীরার কালিগঞ্জে মারা গেছেন মাদ্রাসা ছাত্র আলমগীর গাজী (১৪)। এছাড়া, সরকারি তথ্য অনুযায়ী-গত ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে সারাদেশে ১৪৪৬ জন বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন।
কোনোভাবেই ডেঙ্গু পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পারছে না সরকার। দুই সিটির মেয়র মশা মারার নামে প্রতিদিনই আইওয়াশ করে যাচ্ছেন। এলাকাগুলোতে মশার ওষুধ না ছিটিয়েই আদালতে মিথ্যা প্রতিবেদন জমা দিয়ে পক্ষে রায় আনার চেষ্টা করছেন। অথচ, কোনো এলাকাতেই সিটি করপোরেশনের লোকদেরকে মশার ওষুধ ছিটাতে দেখা যাইনি।
কিন্তু, এরপরও সরকারের মন্ত্রী-এমপি ও সরকারি দলের নেতাকর্মীরা বিভিন্ন সভা-সমাবেশে গিয়ে প্রকাশ্যে মিথ্যাচার করছেন যে, ডেঙ্গু পরিস্থিতি নাকি সরকারের নিয়ন্ত্রণে এসেছে।
আর সবচেয়ে হাস্যকর বিষয় হলেও সত্য যে প্রাণঘাতী ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে মানুষ যখন প্রতিনিয়ত মারা যাচ্ছে তখন ডেঙ্গু মোকাবেলায় অবদানের জন্য মানুষের কাছ থেকে সম্মাননা নিচ্ছেন সরকারের মন্ত্রীরা।
গতকাল শুক্রবার এফডিসিতে ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে ভুমিকা রাখার জন্য স্থানীয় সরকার মন্ত্রী তাজুল ইসলামের হাতে সম্মাননা তুলে দেয় ডিবেট ফর ডেমোক্র্যাসি নামে একটি বিতর্ক সংগঠন। মন্ত্রীও হাসিমুখে তাদের দেয়া সেই সম্মাননা গ্রহণ করেছেন।
দেখা যায়, প্রথম থেকেই মন্ত্রী তাজুল ইসলাম ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণের পক্ষে সাফাই গাইছেন। যখন প্রতিদিন ডেঙ্গু ১০ জন করে মারা যেতো এবং ২ হাজারের বেশি আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হতো তখনই তিনি দাবি করতেন যে, ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণের মধ্যে রয়েছে। তার দৃষ্টিতে দেশে কোনো ডেঙ্গু নেই। তার এসব বক্তব্য নিয়ে রাজনৈতিক অঙ্গনসহ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও ব্যাপক সমালোচনা হয়েছে।
এখন, ডেঙ্গুতে তার সম্মাননা পাওয়ার ছবি বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশের পরই তাকে নিয়ে আবার শুরু হয়েছে সমালোচনা। ডেঙ্গুতে মারা যাওয়া ও আক্রান্তদের সাথে মন্ত্রীর এই সম্মাননা একটি তামাশা বলে মন্তব্য করছেন লোকজন।
অনেকে বলছেন, ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে ভুমিকা রাখার জন্য, সারাদেশে ডেঙ্গু ছড়িয়ে দিয়ে মানুষ মারার জন্য মূলত মন্ত্রীকে এই সম্মাননা দেয়া হয়েছে। এটা ডেঙ্গুতে মারার সম্মাননা।